পড়াশোনা থেকে চাকরিবাকরি, দিনের অধিকাংশ সময় আমাদের চেয়ারেই কেটে যায়। দিনের বড় একটা অংশ যেভাবে কাটাচ্ছেন, তা শরীরের জন্য কতটুকু উপকারী? বসার ভুল ভঙ্গির কারণে শরীরের ক্ষতি করছেন না তো?
ঠিক কীভাবে চেয়ারে বসবেন, অনেকেরই সে বিষয়ে সঠিক কোনো ধারণা নেই। যে কারণে অল্প বয়সেই মেরুদণ্ডে, কোমরে বাসা বাঁধে ব্যথা। দিনের বড় একটা সময় যেখানে ব্যয় করেন, সেই চেয়ারে বসার সঠিক নিয়ম সকলেরই জানা উচিত।
চেয়ারে যেভাবে বসবেন
১. চেয়ারের উচ্চতা এমনভাবে নির্ধারণ করুন, যাতে আপনার পায়ের তালু মেঝে স্পর্শ করে।
২. হাঁটু বা গোড়ালি ভাঁজ করে বেশিক্ষণ বসে থাকবেন না।
৩. হাঁটু যেন সব সময় কোমর সমান কিংবা কোমর থেকে কিছুটা উঁচুতে থাকে।
৪. চেয়ার এমনভাবে অ্যাডজাস্ট করুন, যাতে মেরুদণ্ডের ওপর চাপ না পড়ে। প্রয়োজনে চেয়ারে আলাদা কুশন বা বালিশ ব্যবহার করতে পারেন।
৫. শরীর শক্ত করে আড়ষ্ট হয়ে বসবেন না। বরং যতটা সম্ভব আরাম করে বসুন। আরাম করে বসলে শরীরও আরাম পাবে।
৬. কাঁধ রিল্যাক্স করার চেষ্টা করুন, যাতে কনুই আর হাত মেঝের সঙ্গে সমান্তরালে থাকে।
৭. কনুই এমনভাবে রাখুন, যাতে হাতের সঙ্গে ‘এল’ শেপ তৈরি করে।
৮. পিঠ সোজা করে, ঘাড় একটু পেছনের দিকে নিয়ে সোজা হয়ে বসুন। সোজা তাকিয়ে থাকতে আপনার ঘাড়কে যাতে আলাদা করে কোন কষ্ট করতে না হয়।
৯. চেষ্টা করবেন দীর্ঘসময় যেন একইভাবে বসে থাকতে না হয়। প্রতি আধা ঘণ্টা অন্তর ১০ মিনিটের বিরতি নিন।
১০. কম্পিউটারের মনিটরের উচ্চতা চোখের দৃষ্টিসীমার একটু ওপরে হওয়া উচিত। এতে করে আশপাশে বা ওপরে–নিচে তাকাতে অতিরিক্ত কসরত করতে হবে না।
সঠিকভাবে বসার উপকারিতা
কোমর ও মেরুদণ্ডের ব্যথা অনেকেরই নিত্যসঙ্গী। প্রায় প্রতিটি বাসাতেই কোমর বা পিঠব্যথার রোগী। বেশিরভাগ সময় এই সমস্যার মূলে আছে সঠিকভাবে চেয়ারে না বসা। কাজে বসার আগে তাই সঠিকভাবে চেয়ারে বসার পদ্ধতি জানা জরুরি। সঠিকভাবে চেয়ারে বসা কোমরের হাড় ও মেরুদণ্ডকে ঠিক অবস্থানে রাখে। এ ছাড়াও সঠিকভাবে বসলে পিঠ ও কোমরের মাংসপেশি শিথিল থাকে। এতে মাংসপেশির ওপর চাপ কমে।
এ ছাড়াও চেয়ারে ঠিকভাবে বসা মুডের ওপরও প্রভাব ফেলে। মন ভালো থাকলে সবাই চেষ্টা করেন সোজা হয়ে বসতে। কিন্তু যখনই মন খারাপ থাকে, তখন অজান্তেই শরীর কুঁজো হয়ে যায়।
তাই বলে প্রথম দিন থেকেই যে সঠিক অবস্থানে বসতে পারবেন, ব্যাপারটা তেমনও নয়। বরং বসার বিষয়টি একসময় অভ্যাসে পরিণত হয়। বসার অবস্থানে সমস্যা থাকলে তা ধীরে ধীরে পরিবর্তন করার চেষ্টা করুন। সোজা হয়ে আরাম করে বসুন। যাতে শরীরের কোথাও চাপ না পড়ে।
সূত্র: মেডিকেল নিউজ টুডে