অনেকেই প্রতিদিনের রান্নার মসলা একবারে অনেকটা কিনে জমিয়ে রাখেন। কিন্তু আবহাওয়া একটু স্যাঁতসেঁতে হলেই সমস্যা। ১৫-২০ দিন যেতে না যেতেই মিইয়ে যায় মসলা, কমে যায় স্বাদ, গায়েব হয় সুঘ্রাণ ও ঝাঁজ, অনেক সময় দেখা দেয় আঠালো ভাব। বর্ষায় সঠিকভাবে মসলা সংগ্রহের কিছু কৌশল জেনে নেওয়া যাক।
মসলা রাখার আগে পাত্র বা বয়ামের ঢাকনা ঠিকমতো বন্ধ হয় কি না, পরীক্ষা করে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন দুই রন্ধনবিদ জেবুন্নেসা বেগম ও সিতারা ফেরদৌস। দুজনই বললেন এক কথা, যেকোনো মসলা রাখার বয়ামের মুখ হতে হবে সম্পূর্ণ বায়ুরোধী। আর ঢাকনা খুলে মসলা ব্যবহারের পর খেয়াল করে বয়ামের মুখ ভালোভাবে আটকে রাখুন।
ভেতরে আর্দ্র বাতাস ঢুকতে না পারলে এমনিতেই মসলা অনেক দিন ভালো থাকবে।
সাধারণত মসলাগুলো চুলার আশপাশেই রাখা হয়। সে জন্য, কাচ বা কাঠের পাত্র ব্যবহার করলে ছত্রাক পরার সুযোগ থাকবে না।
যে পাত্রেই মসলা রাখুন না কেন, আগে থেকেই ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করে, খুব ভালোমতো মুছে, রোদে শুকিয়ে নিন।
দুই সপ্তাহে অন্তত একবার শুকনা মসলা, যেমন মরিচ, হলুদ, জিরা, ধনে ইত্যাদির কৌটা দুই-তিন ঘণ্টার জন্য রোদে দিন। চুলার খুব কাছে মসলার কৌটা রাখবেন না।
আদা, রসুন ও পেঁয়াজবাটা প্লাস্টিকের বক্সে করে ফ্রিজে রাখুন। রান্নার এক ঘণ্টা আগে বের করে নিন।
চাল ও ডালের পাত্রে তিন-চারটি লবঙ্গ দিয়ে দিলে ছত্রাক আক্রমণের ভয় থাকে না। তেজপাতা দিলে পোকা ধরবে না।
চিনিতে কয়েকটা লবঙ্গ দিলে পিঁপড়া ধরবে না। চিনির স্বাদ ও ঘ্রাণ ভালো রাখতে কৌটায় একটি তেজপাতা রাখুন।
অল্প একটু চাল ছোট্ট সুতি কাপড়ে বেঁধে ছোট্ট পুঁটলি বানিয়ে চিনি ও লবণের কৌটায় রেখে দিলেই দূর হবে স্যাঁতসেঁতে ভাব।
শুকনা মসলা রোদে দেওয়ার উপায় না থাকলে প্যানে নিয়ে হালকা তাপ দিয়ে রাখুন।
আদা খোলা রাখলে অনেক সময় শুকিয়ে যায়। কাগজ বা পত্রিকা দিয়ে মুড়িয়ে রাখলে ভালো থাকবে। পেঁয়াজ–রসুন ঠান্ডা স্থানে খোলা অবস্থায় রাখুন।
রান্নায় মসলা দেওয়ার জন্য ভেজা চামচ ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
বাটা মসলায় সামান্য লবণ দিয়ে রাখলে ভালো থাকবে। ফ্রিজে রাখলে ডিপে রাখতে হবে।
শুকনা মসলা অনেক দিন ভালো রাখার জন্য বাইরে শুকনা স্থানে রাখুন।
বড় বয়ামে বেশি মসলা জমিয়ে রাখতে চাইলে পাশাপাশি একটি করে ছোট কৌটা রাখুন, যাতে অন্তত দুই সপ্তাহের মসলা আটবে। এতে বড় বয়ামটির মুখ বারবার খুলতে হবে না। বাতাস ঢুকে মসলার গুণ নষ্ট হওয়ার শঙ্কা থাকবে না।