বন্যেরা বনে সুন্দর, ময়লা-আবর্জনা সুন্দর ডাস্টবিনে। কিন্তু এই ময়লা-আবর্জনাই প্রদর্শনীতে তুলে এনেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। যথাযথ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকায় আমাদের চারপাশের প্রকৃতি কীভাবে নষ্ট হচ্ছে, সেটা তুলে ধরতেই ১ থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হলো এই ময়লা প্রদর্শনী।
‘জাহাঙ্গীরনগর: সবুজ স্বর্গ’ শিরোনামে এ প্রদর্শনী বিশ্ববিদ্যালয়ের উঁচু বটতলা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজক ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফারিয়া জামান। এ ছাড়া একই বিভাগের ইসফার সাদি, ইমরান হোসেন, মাইশা মনি, আনিকা রাহী, চারুকলা বিভাগের নওশাদ সাবেরীন, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের জুয়াইরিয়া মেহজাবিন, তানভীর অপূর্ব এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মাহিব জামানসহ আরও অনেকে যুক্ত ছিলেন।
প্রদর্শনী উপলক্ষে একদল শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান ঘুরে ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ করেন। আরেকটি দল ফটোওয়াকের মাধ্যমে এসবের ছবি তোলেন। এভাবে দুই দিনে মোট ৫৭টি আলোকচিত্র জোগাড় হয়। এরপর আলোকচিত্র ও বর্জ্য—দুটিই প্রদর্শনীর জন্য প্রস্তুত করার পালা। মজার বিষয় হলো, এ ক্ষেত্রে ময়লা-আবর্জনাকেই ব্যবহার করেছেন শিক্ষার্থীরা।
ময়লা নিয়ে এই ব্যতিক্রমী আয়োজনের উদ্দেশ্য কী? ফারিয়া জামান জানালেন, শিক্ষার্থীদের একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক সম্পর্কে সতর্ক করা, প্রশাসনকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব বোঝানো এবং ক্যাম্পাসের লেকগুলো নিয়ে আওয়াজ তোলা—এসবই ছিল উদ্দেশ্য।
তিনি বলেন, ‘প্রশাসনকে একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হবে। অপচনশীল বর্জ্য ক্যাম্পাসের বাইরে ফেলতে হবে। জৈব, অজৈব বর্জ্য ফেলার জন্য চিহ্নিত ডাস্টবিন দিতে হবে। পাশাপাশি লেক পরিষ্কার, ক্যাম্পাসে কেন্দ্রীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা চালু করতে চাই আমরা। জাহাঙ্গীরনগর বলতে যে সবুজ, সুন্দর, স্বচ্ছ পানির লেক, অতিথি পাখিসমেত ক্যাম্পাসের চিত্র আমাদের কল্পনায় ভাসে, ক্যাম্পাসের সে বাস্তবতা এখন আছে কি না, সে প্রশ্ন রাখাও আমাদের প্রদর্শনীর উদ্দেশ্য ছিল।’
প্রথমবারের মতো হলো এই প্রদর্শনী। তবে আয়োজকদের প্রত্যাশা, জাহাঙ্গীরনগর আবার আগের রূপে ফিরুক, এ ধরনের প্রদর্শনী আবার করার আগেই সমস্যার সমাধান হোক, এটাই তাঁদের চাওয়া।