বিশ্বজুড়ে এক জনপ্রিয় বিতর্কের টপিক ‘ডিম আগে না মুরগি আগে’। এই তর্কের সমাধান না হলেও ‘স্বাস্থ্যকর ভবিষ্যতের জন্যে ডিম’—প্রতিপাদ্য নিয়ে আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব ডিম দিবস। ডিম পুষ্টিগুণে ভরা এক অসাধারণ খাবার। সারা বিশ্বে পুষ্টির ঘাটতি মোকাবিলায় ডিমকে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে এ দিনটি পালিত হয়।
ডিম সুস্বাদু আর সহজলভ্য এক খাবার। হাতের তালুর সমান এই ছোট এই খাবারে রয়েছে আমাদের শরীরের জন্য অতি প্রয়োজনীয় ১৩টি পুষ্টিগুণ। ডিম সাশ্রয়ী মূল্যে প্রাণিজ প্রোটিনের মধ্যে অন্যতম (যদিও এই মুহূর্তে ডিমের দামকে আর সাশ্রয়ী বলা যাচ্ছে না!)। ডিমকে বলা হয় ‘গরিবের প্রোটিন’। আবার টেকসই প্রাণিজ প্রোটিনের মধ্যে এর স্থান সবার ওপরে।
কীভাবে এল ডিম দিবস ডিম খাওয়ার ইতিহাস মানুষের ইতিহাসের মতোই পুরোনো। প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ ডিমের জন্যে মুরগি পালত। ইতিহাসের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই, পৃথিবীর নানা সংস্কৃতিতে ডিম অলংকরণ এবং ধর্মীয় দিক থেকে মূল্যায়ন পেয়েছে। যেমন ইস্টার সানডে খ্রিষ্টধর্মীয় মানুষের অন্যতম প্রধান অনুষ্ঠান। এ অনুষ্ঠানে জীবন এবং পুনর্জন্মের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই এই দিনে ডিম আকৃতির নানান সাজসজ্জায় ঘর অলংকৃত করেন তাঁরা। শিশুরা পায় ডিম্বাকৃতির নানা উপহার। তবে বিশ্ব ডিম দিবস প্রথম পালিত হয় ভিয়েনায়, ১৯৯৬ সালে। ‘ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশন’ (আইসিই) পৃথিবীজুড়ে ডিমের গুরুত্ব ও উপকারিতা ছড়িয়ে দিতে এ দিনের সূচনা করেন। প্রতিবছর অক্টোবরের দ্বিতীয় শুক্রবার দিনটি পালন করার সিদ্ধান্ত হয়। তার পর থেকে বিশ্বজুড়ে ডিমপ্রেমীরা দিনটি পালনের জন্য নানা ধরনের আয়োজন করে থাকেন।
ডিমের পুষ্টিগুণ
ডিমের বহুমুখী গুণের জন্য এটি বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। ডিমে যেসব পুষ্টিগুণ থাকে, তা সাধারণত অন্যান্য খাবারে খুব কমই থাকে। তাই সুষম ডায়েটের জন্য ডিম একটি অসাধারণ খাবার। এটি গর্ভবতী মা, শিশু, কিশোর এবং বয়স্কদের জন্যে অতি প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা মেটাতে সক্ষম।
ডিমে ৯ ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে, যা শরীরে প্রোটিনের সমস্ত চাহিদা মেটাতে সক্ষম। ডিমের প্রোটিন পেশি তৈরি করতে, ক্ষুধা নিবারণ করতে, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
সাধারণত আয়রন এবং ভিটামিন এ, বি৬, বি১২, ডির ঘাটতি দেখা যায় বিশ্বজুড়ে। ডিমের মধ্যে এসব পুষ্টিগুণ উপস্থিত থাকে। ডিমের এ পুষ্টিগুণ আমাদের প্রাকৃতিকভাবে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। শারীরিক বৃদ্ধি ঘটায়। শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়তা করে।
ডিম সেলেনিয়ামের সমৃদ্ধ উৎস। এতে রয়েছে দস্তা, লোহা এবং তামার মতো নানা প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান। এগুলো বিশেষত কোলিনের উত্স হিসেবে পরিচিত, যা মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়তা করে ও স্মৃতিশক্তি তীক্ষ্ণ করে।
কীভাবে উদ্যাপন করবেন ডিম দিবস
অনেকের সকাল শুরু হয় সেদ্ধ ডিম বা ডিম অমলেট খেয়ে। আবার নানান খাবারের সঙ্গে সহজে মিশিয়ে খেয়ে নেওয়া যায় বলে ডিম সবার অতি পছন্দের। কেক, মেয়োনিজ তো বটেই, নুডলস, স্যান্ডউইচ, ফ্রায়েড রাইস, সালাদ—ডিম ছাড়া যেন চলেই না। আবার ডিম ভেজে বা সেদ্ধ করে নানান তরকারির সঙ্গে রান্না করা যায়। কখনো কেবল ডিমই হয়ে ওঠে একটা আইটেম। ঝটপট ঝামেলাহীন নানা খাবার রান্না করা যায় ডিম দিয়ে। তাই ডিম দিবসে বানিয়ে নিতে পারেন নিজের বানানো সবচেয়ে প্রিয় ডিমের আইটেম। আর নিজের ইউনিক সে রেসিপি শেয়ার করতে পারেন সবার সঙ্গে।