আমাদের আহ্বানে ভালোবাসার টক–ঝাল–মিষ্টি গল্প লিখে পাঠিয়েছেন পাঠক। ‘ছুটির দিনে’তে পর পর দুই সংখ্যায় ছাপা হওয়ার পর নির্বাচিত আরও একটি লেখা প্রকাশিত হলো এখানে।
পাত্রী দেখতে এসে কেউ যে এতটা সম্মান আর সারপ্রাইজ দিতে পারে, সেদিন তার সঙ্গে দেখা না হলে বুঝতেই পারতাম না। আমাকে দেখতে সে সঙ্গে এনেছিল গিফট প্যাকেট। যার মধ্যে ছিল বিভিন্ন ধরনের চকলেট, আর একটি খাম। সেই খামে ছিল পাত্রী দেখার সম্মানী হিসেবে কিছু টাকা।
তাই প্রথম দেখা হওয়ার পর থেকেই তার প্রতি আমার ভালো লাগা শুরু। ধীরে ধীরে সেই ভালো লাগা বাড়তে থাকল। মুগ্ধতা আরও বাড়ল যখন জানলাম আমার শারীরিক উচ্চতা নিয়ে তার পরিবারের কিছু সদস্যের আপত্তি থাকলেও তার কোনো আপত্তি নেই।
পারিবারিকভাবে বিয়ের তারিখ ঠিক হওয়ার পর আমরা মাঝেমধ্যে দেখা করতাম। দেখা করার পর বুঝতে পারলাম, ভালোবাসার মানুষের দেওয়া সবচেয়ে বড় উপহার হলো সময়। সাপ্তাহিক বন্ধের দিনে ভালোবাসার মানুষটির সঙ্গে দেখা করার জন্য সারা সপ্তাহ অপেক্ষায় থাকতাম। সাভার থেকে অনেক সময় অফিস করে জ্যাম ঠেলে, ক্লান্ত শরীর নিয়ে সে দেখা করতে আসত।
আমাদের পারফেক্ট ক্যামেরাবন্দী ছবি না থাকলেও আছে একসঙ্গে ঘোরাঘুরির অনেক রঙিন স্মৃতি। আছে একসঙ্গে চা খেতে খেতে আড্ডা দেওয়ার স্মৃতি। মন্দিরের এক কোনায় বসে একসঙ্গে প্রসাদ খাওয়ারও গল্প আছে। রিকশায় একসঙ্গে ঘুরে বেড়ানোর স্মৃতি কিংবা নদীর পাড়ে কাটানো মুহূর্তগুলো মনে গেঁথে আছে। এভাবে ঘুরতে ঘুরতে উপলব্ধি করতে পেরেছিলাম, ভালোবাসা থাকলে সময় কাটানোর জন্য কোনো দামি রেস্টুরেন্ট প্রয়োজন হয় না। কী পরলে আমাকে সুন্দর দেখায় তা নিয়ে ভাবতে হয় না বা হিল পরে নিজেকে লম্বা প্রমাণ করতে হয় না।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে আমরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হই। বিয়ের পর বুঝতে পেরেছি, সম্পর্কে কেবল ভালোবাসা থাকলেই যেকোনো মুহূর্ত রঙিন করা সম্ভব। আমরা চাই, আমাদের ভালোবাসা ছড়িয়ে থাকুক বছরের প্রতিটি দিন।