বিশ্বের সফল ব্যক্তিদের জীবনী পড়লে দেখা যায়, তাঁদের এমন কিছু অভ্যাস রয়েছে, যার জন্য তাঁরা জীবনের সেরা অবস্থানে এসেছেন। এই অভ্যাস ও চর্চা যেকোনো মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব রাখতে পারে। তাঁদের এ রকম কিছু গুণ আপনি নিজের মধ্যেও ধারণ করতে পারেন।
লক্ষ্য স্থির করা
ভবিষ্যতে আপনি নিজেকে কোন জায়গায় দেখতে চান, সেটি আগে স্থির করুন। তবেই আপনি লক্ষ্যে পৌঁছাতে সেই অনুযায়ী কাজ করে যেতে পারবেন। এটি একটি দিকনির্দেশনা হিসেবেও কাজ করবে। বিখ্যাত মার্কিন লেখক জিগ জিগলার বলেন, ‘তুমি লাফিয়ে কত দূরে গিয়ে পড়বে সেটা মুখ্য নয়, তুমি লাফিয়ে কতটা উঁচুতে উঠতে পেরেছ সেটাই মুখ্য।’
সময়ের সঠিক ব্যবহার
সফল ব্যক্তিদের জীবনে সময়কে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁরা তাঁদের সময়কে সঠিকভাবে ব্যবহার করেছেন। কোন কাজটি আগে করতে হবে, কোন কাজটিকে প্রাধান্য দিতে হবে, সে বিষয়ে খেয়াল রাখাটা জরুরি বলে মনে করেন খ্যাতিমানেরা। জীবনে সময় চলমান ও নির্দিষ্ট, তাই সময়ের অপচয় যাতে না হয়, সেটি মেনেই আজ তাঁরা সফল। সময় নিয়ে প্রয়াত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি বলেছেন, ‘সময়কে কাজ করার যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার কর, আরামদায়ক আসন হিসেবে নয়।’
শেখার শেষ নেই
যাঁরা জীবনে সফল, তাঁদের বেশির ভাগই বলেন, তাঁরা এখনো শিখছেন। তাঁরা মনে করেন, জ্ঞান হচ্ছে শক্তি। তাই নতুন কিছু শেখা ও দক্ষতা বাড়ানো সাফল্যের একটি প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে নিজেকে উপযোগী করে তুলতে নতুন কিছু শেখার বিকল্প নেই। ভারতীয় লেখক ও শিক্ষক সুধা মূর্তি বলেন, ‘জীবন একটি পরীক্ষা, যেখানে সিলেবাস অজানা, প্রশ্নপত্রও নির্ধারিত নয়, এমনকি মডেল টেস্টের কোনো সুযোগ নেই।’
অধ্যবসায়
সফলতার পথে এগিয়ে যেতে হলে অনেক বাধা পেরোতে হয়। জীবনের প্রতিটি মোড়ে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হয়। সফল ব্যক্তিদের জীবনের গল্প বলে, তাঁরা কেউ খুব সহজে এই সাফল্য অর্জন করেননি। অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে আজকে নিজেদের উদাহরণ হিসেবে তৈরি করতে পেরেছেন। ভারতীয় শিল্পপতি রতন টাটা বলেন, ‘লোহাকে কেউ ক্ষয় করতে পারে না, কিন্তু এর নিজের মরিচাই একে ধ্বংস করে। তেমনি একজন মানুষকেও কেউ নিঃশেষ করতে পারে না, তাঁর চিন্তাধারাই ঠিক করে, সে সফল হবে না ধ্বংস।’
স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখা
জীবনে সফলতা পেতে হলে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা খুব জরুরি। বেশির ভাগ সফল ব্যক্তি তাঁদের সুস্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখেন। তাঁদের জীবনাচরণ খেয়াল করলে দেখা যাবে, তাঁরা নিয়মিত শরীরচর্চা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং পরিমিত বিশ্রাম গ্রহণের বিষয়ে ছাড় দেন না।
প্রতিদান দেওয়া
সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই সফল ব্যক্তিরা নানান উন্নয়নমূলক কাজ করে থাকেন। সুবিধাবঞ্চিত ও সমাজের জন্য ভালো কিছু করার মাধ্যমে নিজেদের সফলতাকে তাঁরা উদ্যাপন করেন। সফল ব্যক্তিদের অনেকেই দাতব্য সংস্থার সঙ্গে জড়িত। এ ছাড়া সমাজের প্রতি নানাভাবে তাঁরা বাড়িয়ে দেন সাহায্যের হাত। মার্কিন টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব অপরাহ্ উইনফ্রের একটি উক্তি তাই বলতেই হয়, ‘তুমি যা চাইবে তা–ই পাবে, যদি তোমার যা আছে, তা বিলিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা থাকে।’
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া