আজ থেকে দেশের সব সুপারশপে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে সরকার। তাই অনেকের মনে প্রশ্ন, তাহলে কি কাগজের ব্যাগ ব্যবহার করব? সেটা তো সব ধরনের পণ্য পরিবহনের জন্য উপযোগী নয়। আবার এই কাগজের ব্যাগ কতটা পরিবেশবান্ধব, সেটা নিয়েও অনেকের মধ্যে প্রশ্ন আছে।
সাধারণত কোনো ব্যাগ উৎপাদনে কতটা শক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে, কতবার পুনরায় ব্যবহার করা যাচ্ছে এবং সেটা কত দ্রুত মাটিতে মিশে যেতে পারছে, তা বিবেচনায় নিয়েই পরিবেশবান্ধব কি না, তা যাচাই করা হয়।
সেদিক থেকে দেখলে সাধারণ পলিথিনের তুলনায় কাগজের ব্যাগকে অনেকে এগিয়ে রাখবেন। তবে এটাও মনে রাখতে হবে, কাগজের ব্যাগের পুনর্ব্যবহার খুব কম। সাধারণত দুই-একবারের বেশি এসব ব্যাগ ব্যবহার করা প্রায় অসম্ভব। আবার ভেজা জিনিসপত্র বহনের জন্য কাগজের ব্যাগ উপযুক্ত নয়।
আয়ারল্যান্ডভিত্তিক এক গবেষণার তথ্য বলছে, একটি প্লাস্টিক ব্যাগ তৈরিতে যে পরিমাণ শক্তি খরচ হয়, তার চার গুণ শক্তি লাগে কাগজের ব্যাগ উৎপাদনে। আবার কাগজের ব্যাগ দ্রুত পচনশীল হলেও সেসব তৈরিতে কাটা হয় প্রচুর গাছ, নষ্ট হয় বনভূমি। কাগজের ব্যাগ তৈরিতে বিষাক্ত রাসায়নিক বর্জ্যও বেশি তৈরি হয়।
এ ছাড়া কাগজের ব্যাগের ওজন প্লাস্টিকের ব্যাগের তুলনায় বেশি। সে ক্ষেত্রে উপায় কী?
সরকারি নির্দেশনা হচ্ছে পাট বা কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহার করা। এসব টেকসই ও দ্রুত পচনশীল। তবে যাঁরা ফ্যাশনসচেতন, তাঁরা আরও নানা রকম ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। এর মধ্যে বাঁশ, বেত ও হোগলাপাতার ব্যাগের কথা বলা যেতে পারে। অনেক দোকানে এসব ব্যাগ কিনতে পাওয়া যায়। অনলাইনে অর্ডার করলেও মিলবে পরিবেশবান্ধব এসব ব্যাগ।
পাটের ব্যাগের মধ্যে নিত্যবাজারের দুই ফিতার ব্যাগ ছাড়াও টোট ব্যাগ এখন দারুণ জনপ্রিয়। কাপড়ের ব্যাগেরও আছে রকমারি—টোট ব্যাগ, হ্যান্ড ব্যাগ, বাজারের ব্যাগ ইত্যাদি।
হোগলাপাতায় তৈরি ব্যাগগুলো সবজি ও ফলমূল বহনের জন্য ভালো।
এত দিন পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে কড়াকড়ি আইন থাকলেও তা কার্যকর করতে সরকারি বড় ও দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ চোখে পড়েনি। এবার দেখার বিষয়, সরকারের নতুন উদ্যোগ কতটা সফল হয়।