শিশুকে ভবিষ্যতের জন্য তৈরি করতে কিছু পরামর্শ

শিশুকে সঠিক উপায়ে লালন-পালন করে, তাদের ভবিষ্যতের জন্য তৈরি করা—এ দিয়েই মা-বাবা হওয়ার যাত্রা শুরু। তবে মা-বাবা শিশুকে শুধু যত্ন আর স্নেহ নয়, বরং নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ও সহনশীলতার গুণাবলি তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে। জন্মের পর থেকে প্রতিটি শিশুর কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য ও স্বপ্নপূরণের পথ তৈরিতে মা-বাবাই মূল ভূমিকা পালন করেন। এ ব্যাপারে কিছু পরামর্শ—

শিশুকে তার ছোট ছোট সিদ্ধান্তগুলো নিতে দিন

১. সিদ্ধান্ত তৈরিতে উৎসাহ দিন

সন্তানদের বাড়ন্ত বয়স থেকেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা দিতে হবে। কোথাও বেড়াতে যাওয়ার ‘পোশাক’ বা ‘খাবারের মেন্যু’ নির্বাচনে তার মতামত নেওয়ার মাধ্যমেও এটা হতে পারে। এতে সে নিজস্বতা বা স্বাতন্ত্র্য চর্চা করতে শেখে। তার ভেতরে আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়৷

২. পরাজয়কে স্বাভাবিকভাবে নিতে শেখান

ভবিষ্যতে কিছু পাওয়ার জন্য বা বিজয়ী হওয়ার জন্য মাঝেমধ্যে হেরে গেলেও সমস্যা নেই। পরাজয় মানে সাফল্যের দিকে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া। আপনার সন্তানকে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে শেখান। তাকে সুযোগ দিন, যেন সে পরাজয় থেকেও ভালো কিছু শেখে। নতুন উদ্যমে পুনরায় চেষ্টা করে। সন্তানের পরাজয়কে ইতিবাচকভাবে দেখুন।

শিশুকে কোন সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেবেন না। তাকে ভালো–মন্দ বুঝিয়ে বলুন

৩. বয়স অনুযায়ী দায়িত্বভার দিন

সন্তানদের বয়স অনুযায়ী বাড়ির টুকটাক কাজের দায়িত্ব দিন। যেমন বিছানা বা টেবিল গোছানো, নিজেদের খেলনা সাজিয়ে রাখা, রান্না বা ঘর পরিষ্কারের কাজে অল্প স্বল্প সাহায্য করা। এই ছোট ছোট দায়িত্ব তারা নিজেদের বুদ্ধিমত্তা খাটিয়ে পালন করার চেষ্টা করে। এসব কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু কিছু সিদ্ধান্ত তারা নিজেরাই নিতে পারবে। এসব দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে তাদের মধ্যে দায়িত্ব ও জবাবদিহির বোধও তৈরি হবে।

৪. খোলামেলা আলোচনা করুন

সন্তান যেন চিন্তাভাবনা বা উদ্বেগ ভাগ করে নিতে পারে, তাই প্রত্যেক মা-বাবার উচিত তাদের মধ্যে ‘স্বাচ্ছন্দ্যের বোধ’ তৈরি করা। খোলাখুলি আলোচনা করার সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হলো সন্তানের মতামত বা অনুভূতিকে খোলা মনে বিচার করা। এতে সে নিঃসংকোচে নিজের মনের কথা বলতে আগ্রহী হয়।

৫. নতুন কিছু অন্বেষণে উৎসাহ দিন

শিশু বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন জিনিস যেমন শখ, খেলাধুলা বা পড়াশোনার যেকোনো বিষয় নিয়ে কৌতূহলী হয়। নতুন নতুন এই অনুসন্ধান বা কাজে তাদের উৎসাহিত করলে তারা নিজেদের আগ্রহের জায়গা খুঁজে পায়, যা তাদের ভবিষ্যতের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। মা-বাবা এসব বিষয়ে সুযোগ দিলে সন্তানেরাও শুরু থেকেই নিজের প্রতিভা বিকাশের জায়গায় কাজ করতে পারে।  

৬. নিজে অনুকরণীয় হয়ে উঠুন

শিশুরা মূলত অনুকরণপ্রিয় হয়। অনেক জিনিস তারা অনুধাবন করে শেখে। তাই মা-বাবা যদি নিজের জীবনে আত্মনির্ভরশীল, স্বাধীন-দৃঢ়চেতা ও প্রাণবন্ত হয়, সন্তানেরাও তেমন হতে শিখবে।