বই পড়ার কথা মনে হলেই আমাদের চোখে ভেসে ওঠে একখণ্ড অবসর। যেখানে চায়ের কাপ হাতে নিয়ে সময়জ্ঞান ভুলে আরাম করে ডুব দেওয়া যায় নিজের পছন্দের বইতে। তবে এমনভাবে বই পড়ার জন্য সময় বের করা আজকাল যেন এক বিলাসিতা! প্রযুক্তি যখন আমাদের হাতের মুঠোয়, তখন ব্যস্ততার দোহাই দিয়ে বই পড়া ছেড়ে দেওয়া নেহাত বোকামি। চলুন জেনে নেওয়া যাক বই পড়ার জন্য কোন ডিভাইসটি আপনার উপযুক্ত।
বই পড়ার কথা মনে হলেই আমাদের চোখে ভেসে ওঠে একখণ্ড অবসর। যেখানে চায়ের কাপ হাতে নিয়ে সময়জ্ঞান ভুলে আরাম করে ডুব দেওয়া যায় নিজের পছন্দের বইতে। তবে এমনভাবে বই পড়ার জন্য সময় বের করা আজকাল যেন এক বিলাসিতা! সমাধান নিয়ে এসেছে প্রযুক্তি। প্রযুক্তি যখন আমাদের হাতের মুঠোয়, তখন ব্যস্ততার দোহাই দিয়ে বই পড়া ছেড়ে দেওয়া নেহাত বোকামি। কেননা, এখন বই হাতে নিয়ে না পড়লেও চলে। শুধু বই বা নানা ডকুমেন্টস পড়ার জন্য রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ই–বুক রিডার। হাতের কাছে থাকা নিজের মুঠোফোন, ট্যাব, ল্যাপটপও কাজে লাগাতে পারেন বই পড়ার জন্য। চলুন জেনে নেওয়া যাক বই পড়ার জন্য কোন ডিভাইসটি আপনার উপযুক্ত।
বই পড়ার জন্য সঠিক ডিভাইস বেছে নেওয়ার আগে ভাবুন আপনি কোন ধরনের বই পড়বেন। যদি হরফে লেখা বই বা ই–বুক বা জার্নাল পড়েন, তবে আপনি স্বাচ্ছন্দ্যে বেছে নিতে পারেন ই–বুক রিডার।
ট্যাবের সঙ্গে ই–বুক রিডারের প্রধান কিছু পার্থক্য রয়েছে। ই–বুক রিডারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এসব ডিভাইসে ব্যবহার করা হয় ই-ইঙ্ক বা ইলেকট্রনিক কালি। ফলে স্ক্রিন রঙিন থাকে না। স্ক্রিন হয় সাদা-কালো। তাই ই–বুক রিডারে পড়া যায় একদম ছাপা কাগজের মতো। পড়ার সময় চোখের ওপর কোনো চাপ পড়ে না।
তা ছাড়া ই–বুক রিডারে দীর্ঘ সময় ব্যাটারি থাকে। একবার চার্জ দিয়ে নিশ্চিন্তে বই পড়া যায় কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত। আর নোটিফিকেশনের যন্ত্রণা থেকে মুক্ত থাকতে ই–বুক রিডারের কোনো বিকল্পই নেই।
আমাদের দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় ই–বুক রিডার হচ্ছে অ্যামাজন কিন্ডেল। এর বেশ কয়েকটি মডেল রয়েছে। যেমন বেসিক কিন্ডেল, কিন্ডেল পেপারহোয়াইট, কিন্ডেল স্ক্রাইব, কিন্ডেল ওয়েসিস। তা ছাড়া শিশুদের জন্যও কিন্ডেল কিডস নামের একটি ডিভাইস আছে। দাম ১০ হাজার থেকে শুরু।
অ্যামাজনের কিন্ডেল ছাড়া জনপ্রিয় ই–বুক রিডারের মধ্যে রয়েছে রাকুটেনের ‘কোবো’, বার্নস অ্যান্ড নোবলের ‘নুক’। তবে দাম ও স্বাচ্ছন্দ্য বিবেচনা করলে ই–বুক রিডারের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে কিন্ডেল পেপারহোয়াইট। এ ডিভাইসটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি একবার চার্জ দিলেই এক মাস চলে এবং এটি পানিরোধী।
মুঠোফোন যেহেতু আমাদের সবার হাতেই থাকে সব সময়, তাই বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য একে সহজে কাজে লাগানো যায়। আর আপনি যদি কমিকস, গ্রাফিকস বা ভিজ্যুয়াল কনটেন্টসমৃদ্ধ লেখা বা বই পড়তে চান, তাহলে বেছে নিতে পারেন ট্যাব বা মুঠোফোন। এতে আপনি ছবি, রং, গ্রাফিকস ভালোভাবে দেখতে ও বুঝতে পারবেন।
মুঠোফোন, ট্যাব, ল্যাপটপেও আপনি হরফে লেখা বা ই–বুক পড়তে পারেন। তবে এ ধরনের ডিভাইসের স্ক্রিন সাধারণত উজ্জ্বল হয়। এই উজ্জ্বলতা চোখকে ক্লান্ত করে। তাই বেশিক্ষণ পড়া যায় না।
মুঠোফোন বা ট্যাবে দীর্ঘ সময় বই পড়তে চাইলে ‘ব্লু-লাইট ফিল্টার’ অন করে নিন। ব্লু-লাইট ফিল্টার ডিভাইসের ক্ষতিকর নীল আলো কমিয়ে প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য করে। এতে চোখে চাপ পড়ে না, বই পড়া যায় সহজেই।
অন্যদিকে ডেক্সটপ বা ল্যাপটপে বই পড়তে চাইলে চালু করে নিন ‘নাইট মোড’। এতে স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা কমে একটা হলুদাভ আলো চলে আসে। এতে দীর্ঘ সময় পড়লেও ক্লান্তি আসে না।
বই হাতে নিয়ে পড়ুন আর ডিজিটাল মাধ্যমে পড়ুন, প্রতিদিন অন্তত কিছু সময় রাখুন বই পড়ার জন্য। প্রতিদিনের ক্লান্তি ও অবসাদ দূর করতে বই হতে পারে এক অনন্য মাধ্যম।