সংযুক্ত আরব আমিরাতে আছেন ৪০ বছর। খুব কাছ থেকে দেখেছেন আরব জীবনাচরণ। পাঠকদের উপসাগরীয় অঞ্চলের ঈদ অভিজ্ঞতার ভাগ দিলেন রেজা খান
সালটা ঠিক মনে নেই, আশির দশকের মাঝামাঝি হবে। তবে দিন-তারিখ মনে আছে—৬ জুন, শুক্রবার। ভোর। ফজরের নামাজের আগে হঠাৎ দোরঘণ্টির শব্দ। ঘুম থেকে হুড়মুড় করে উঠে পড়লাম, ভয়ে বুক দুরু দুরু। কোন বাঘ-ভালুক না জানি কোন খাঁচা থেকে বাইরে বেরিয়ে গেছে! একটু বলে রাখি, আমি তখন সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল-আইন শহরের চিড়িয়াখানার পাখি ও নরবানরের কিউরেটর।
দরজা খুলতেই চিড়িয়াখানার একজন প্রাণী পরিচারক বলে উঠলেন, ‘স্যার, ঈদুল ফিতর মাবরুক।’
শুনে আমি তো হতভম্ব, ‘মানে কী?’
তিনি বললেন, ‘গতকাল মাঝরাতে পুলিশ এসেছিল, দারোয়ানকে বলে গেছে, আজ ঈদ হবে। আমরা সবাই ঈদের নামাজ পড়তে জাকের এলাকার ঈদ মুসাল্লায় (মসজিদের বাইরের খোলা স্থান) যাচ্ছি, আপনাকে নিতে এসেছি।’
এর মধ্যে আমার স্ত্রী নাজু পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। সে-ও সব শুনে হতভম্ব। বলল, ‘তা কী করে সম্ভব! আজ তো ২৯ রমজান; মানে আমরা মোটে ২৮ রোজা শেষ করেছি!’
আমাদের বেচইন অবস্থা দেখে প্রাণী পরিচারক বললেন, ‘ঈদের নামাজ পড়তে চাইলে এখনই চলুন। চিড়িয়াখানার একটা মিনিবাসে আমাদের নিয়ে যাবে, নামাজ শেষে নামিয়েও দিয়ে যাবে।’
নাজু ও আমি সমস্বরে বলে উঠলাম, ‘না’। ওই স্বল্প সময়ে তৈরি হয়ে কিছুতেই আমরা নামাজ ধরতে পারব না। তখনো আমাদের দুই ছেলে ও এক মেয়ে ঘুমে বিভোর। ওখানে কারও ব্যক্তিগত গাড়িও নেই, যেটা আমরা ব্যবহার করতে পারি। এমনকি চিড়িয়াখানার পরিসীমার বাইরে যে বড় সড়ক, সেখানে কোনো ভাড়ার ট্যাক্সিও চলে না। আমরা তখন সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল-আইন শহর থেকে ১০-১২ কিলোমিটার দূরে, চিড়িয়াখানার ভেতরে। এলাকাটা প্রায় জনমানবশূন্য। সেখানে তখন সচরাচর ট্যাক্সি মিলত না।
অতএব ২৮ রোজার দিন হওয়া সে বছরের ঈদের নামাজের জামাত ধরা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। ওই ঘটনার পর থেকে আমরা ২৮ রোজার দিন থেকেই ঈদের জন্য তৈরি থাকতাম।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের ‘বাগান শহর’-খ্যাত আল-আইনের চিড়িয়াখানায় চাকরি করেছি ১৯৮৩ সালের ডিসেম্বর থেকে ১৯৮৯ সালের মে মাস পর্যন্ত। চাকরির সুবাদে পরিবার নিয়ে চিড়িয়াখানার ভেতরেই চার বেডরুমের একটি সরকারি বাসায় থাকতাম। লেখার শুরুতেই বলেছি, আশির দশকের মাঝামাঝি কোনো এক বছরের কথা। তো সে বছর রোজা শুরু হয় মে মাসের ৯ তারিখ। সে হিসাবে ওই বছরের ঈদুল ফিতর হওয়ার কথা ছিল জুন মাসের ৭ অথবা ৮ তারিখ। ২৯ রোজা হলে ৭ আর ৩০ রোজা হলে ৮, কিন্তু হয়েছিল ৬ জুন। তবে সেবার ২৮ রোজায় ঈদ হওয়ার কারণ জানতে পেরেছি অনেক বছর পর।
আরবেও চাঁদ দেখা কমিটি
উপসাগরীয় আরবের ছয়টি দেশ—সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, বাহরাইন, কাতার, কুয়েত ও ওমান। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এই ছয় দেশে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা উদ্যাপিত হয় প্রায় একই দিনে। তবে এর কিছুটা হেরফের হয় ওমানের বেলায়। প্রায়ই তারা এক দিন পর ঈদুল ফিতর উদ্যাপন করে। বাকিরাও যার যার দেশের মূল চাঁদ দেখা কমিটির সুপারিশেই ঈদের দিন ঘোষণা করে। সেই গোলমেলে বছরে সৌদি আরবে ঈদ হয়েছিল ২৮ রোজার দিন। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরাও আরব আমিরাতে ঈদ উদ্যাপন করেছিলাম একই দিন!
সংযুক্ত আরব আমিরাতে সূর্য ডোবে সৌদি আরবের এক ঘণ্টা আগে। তবে ঈদ কবে হবে, তা সন্ধ্যায় বা মাগরিবের নামাজের কাছাকাছি সময় ঘোষণা করা হয় না। বরং তা করা হয় প্রায় এশার নামাজের কাছাকাছি সময়। এর মানে হলো, নিজেদের চাঁদ দেখা কমিটির সুপারিশ বিচার করে সৌদি আরব যখন ঈদের ঘোষণা দেয়, প্রায় একই সময় আমিরাতেও ঈদের ঘোষণা আসে।
রমজানের আনন্দ
উপসাগরীয় এবং উত্তর আফ্রিকার মুসলিম দেশগুলোর মানুষের কাছে রোজার মাস খুবই প্রিয়। সারা মাস রোজা রাখা, বিশেষ নামাজ আদায়, কোরআন শরিফ তিলাওয়াত এবং মোনাজাত ছাড়াও ব্যাপকভাবে চলে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড। রমজান উপলক্ষে মিসরসহ উত্তর আফ্রিকার মুসলিম দেশ এবং উপসাগরীয় ছয়টি দেশের টিভি চ্যানেলে প্রচারিত হয় বিশেষ নাটক ও কার্টুন। আরবি টেলিভিশনগুলোতে বিশেষ ধারাবাহিক চলে প্রথম থেকে শেষ রোজা পর্যন্ত। এসব টিভির ধারাবাহিক বা নাটক বেশ জনপ্রিয়।
১৯৮৩ সাল থেকে যখন আল-আইন শহরে থাকতে শুরু করলাম, তখন থেকে ১৯৯০ দশকের শেষ পর্যন্ত সব আরবি চ্যানেলে মূলত আরবি সিনেমাই দেখানো হতো, ইংরেজি সিনেমা প্রচারিত হতো হঠাৎ হঠাৎ। আর আরবিতে ডাব করা অনেক কার্টুন দেখাত নিয়মিত। আরবি না বুঝলেও আমরা বাসার পাঁচজনই একসঙ্গে বসে এসব সিনেমা-কার্টুন উপভোগ করতাম।
রোজার মাসে কোনো কোনো পাঁচ তারকা হোটেলে বা কনভেনশন সেন্টারে জমকালো, কিছুটা অনুরোধের আসরের মতো অনুষ্ঠান হতো, গাইতেন নামীদামি আরব্য শিল্পীরা। বিশেষ করে সৌদি, লেবানিজ, মিসরীয়, মরোক্কান ও কুয়েতীয় গায়ক-গায়িকাদের গানের লাইভ পারফরম্যান্স হতো জমজমাট। পুরুষ বা নারী কণ্ঠের সঙ্গে জমকালো পোশাক পরিহিত আরব্য নারীরা এক জায়গায় দাঁড়িয়ে, হেলেদুলে এবং মাথার চুল ঘুরিয়ে গানের তালে মঞ্চ মাতাতেন। এশার নামাজের পর শুরু হতো অনুষ্ঠান, চলত প্রায় সাহ্রি পর্যন্ত।
ইফতারি জমজমাট
আরব দেশগুলোতে রমজান মাসের প্রতিটি দিনই ইফতারের আয়োজন থাকে ব্যাপক। ছোট-বড় হোটেলে থাকে ইফতারির প্যাকেজ। স্থানীয় লোকজন ঘরের পাশে, নিজেদের চত্বরে বা সরকারের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে মহল্লার খালি জায়গায় তাঁবু গাড়ে। সেখানে পুরুষ ও শিশু-কিশোরেরা ইফতারের আগে জড়ো হয়। ইফতার-নামাজের পর সেখানেই গালগল্প করে। মাঝেমধ্যে পরিবেশিত হয় গাওয়া, সোলেমানি ও কারাক চা বা কফি ও ঠান্ডা পানীয়। ওরা ইফতারে আমাদের মতো ভাজাপোড়া খায় না। বরং খেজুর, ফল, ভিমটো নামের রুহ আফজা-জাতীয় পানীয়, লাবান বা ঘোল, অনেক রকম জুস, হারিস বা হারিসা নামের একটি বিশেষ খাবার দিয়ে ইফতার করে। এরপর নামাজ শেষ করে খায় প্রায় মসলাছাড়া বিরিয়ানি। পাতে আরও থাকে বিশেষভাবে তৈরি মান্দি, মুরগি-খাসির বড় বড় টুকরা বা আস্ত দুম্বা দিয়ে বানানো মাজবি। এসবের সঙ্গে থাকে খোবুস বা ময়দা দিয়ে বানানো বড় আকারের গোল রুটি, হমুস-তাহিনা-মোতাবেবল, রকমারি পনির এবং লাবনেহ। তবে সাহ্রির সময় ওরা খায় খুব কম।
পবিত্র রমজানে যেসব মসজিদে তারাবিহর নামাজ পড়ানো হয়, সেসব মসজিদের মুসল্লিদের বিনা মূল্যেই দেওয়া হয় ইফতারি। একেকটি মসজিদে মুসল্লির সংখ্যা এক শ থেকে এক হাজার কিংবা তারও বেশি। আর এই মুসল্লিরা মূলত বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও আফ্রিকার নানা দেশের নাগরিক। ইফতারে থাকে খেজুর, ফলফলারি, মুরগির বিরিয়ানি, এক বোতল পানি ও জুস। মুসল্লিরা সচরাচর যাঁর যাঁর বাসার কাছের মসজিদে আজান শোনার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করেন। প্রতিবছর একই মসজিদে যান তাঁরা। বেশির ভাগ আমিরাতির বাড়ির সীমানাপ্রাচীরে একটি খাওয়ার পানির কুলার অবশ্যই থাকবে। সারা বছরই এটা চালু থাকে। আর অনেক বাড়ি থেকে ইফতারিও দেওয়া হয়। ফলে দরিদ্র মানুষেরা এক মাস নিশ্চিন্তে ভরপেট খেতে পারেন।
রমজানে জীবনধারা
আশির দশকে রোজার সময় অফিস থাকত চার বা পাঁচ ঘণ্টা, সকাল নয়টা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত। বাসায় ফিরে সবাই লম্বা ঘুম দিত, কেবল জোহর ও আসরের নামাজের সময়টুকু বাদে। রোজার মাসে সবার বড় বিনোদন ছিল শেষ রাত পর্যন্ত বাজার করতে যাওয়া। এটা অবশ্য এখনো আছে। এশার নামাজের পর থেকে শেষ রাত ২-৩টা পর্যন্ত সবাই বাজার করতে যেত। দোকানপাটও খোলা থাকত সব। আমাদের উপমহাদেশীয় লোকজন সে সময় বাজার ঘুরে ঘুরে যেসব পণ্য, বিশেষ করে ইলেকট্রনিক পণ্যে বিশেষ ছাড় দিত, তার খোঁজখবর নিত। ছুটিতে দেশে যাওয়ার আগে আত্মীয়স্বজনের জন্য বিশেষ মূল্যছাড়ে কিনত কাপড়, রেডিও, টেপরেকর্ডার, ভিসিপি, ভিসিআর কিংবা টেলিভিশন।
ঈদে আরব দেশের মেয়েদের সাজ হয় বেশ জমকালো। বাহারি পোশাক, ভারী ভারী সোনার গয়না। দীর্ঘ সারি দেখা যায় মেয়েদের বিউটি পারলার বা স্যালনে। চুলের সাজসজ্জা, রং লাগানো, হাত-পায়ের যত্ন, নখে রং, হাতে-পায়ে মেহেদি লাগানো চলে তুমুল উৎসাহে।
ঈদের নামাজ
আরবের প্রায় সবাই ঈদের নামাজ পড়তে যায় পরিবারের সবাইকে নিয়ে। শহরে ঈদগাহ বা ঈদ মুসাল্লা থাকলে নামাজ হয় সেখানে, না থাকলে মসজিদে। সব ঈদগাহে পরিবারের সবাইকে নিয়ে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা না থাকলেও মসজিদে থাকে। নামাজের পর পরিবারের সদস্য বা বন্ধুদের সঙ্গে কোলাকুলি করে সবাই। উপসাগরীয় আরব পুরুষেরা নাকে নাক ছোঁয়ায় বা করমর্দন করে। নারীরাও কোলাকুলি করে, নাকে নাক ছোঁয়ায়, করমর্দন করে পুরুষের মতোই। এসবের সঙ্গে চলতে থাকে কুশল বিনিময়—নিজের খবর, পরিবারের খবর, প্রতিবেশী কিংবা এলাকাবাসীর খবর তো নেয়ই; এমনকি উট, দুম্বার মতো পোষ্য প্রাণীরও খোঁজখবরও নেয়!
ঈদের দিনের খানাপিনা
নামাজ শেষে চাকরিজীবী আরব পুরুষেরা প্রথমে ছোটে বসের বাড়ি বা তাঁর কোম্পানির মজলিশে। সেখানে পরিবেশিত হয় আরব্য মিষ্টি, বিশেষ করে বাকলাভা। ডজনখানেক পদের মিষ্টির সঙ্গে থাকে আরবি গাওয়া বা কাহওয়া নামের দুধ-চিনি ছাড়া কফি; সোলেমানি চা, মানে কেবল চিনিসহ লাল চা; টার্কিশ কফি এবং খুব প্রিয় কারাক চা, মানে খাঁটি দুধ দিয়ে বানানো চা। এতে যোগ করা হয় চিনি, বিভিন্ন ভেষজ উপাদান। এ ছাড়া সাধারণ কফিসহ আরও অনেক কিছুই থাকে। ঈদের দিন ব্যবসায়ীরা সব কর্মচারীকে ঈদি হিসেবে টাকা উপহার দেয়। বাসার ছোটরাও পায় ঈদি।
বসের বা প্রতিষ্ঠানের মালিকের সঙ্গে রুটিন দেখাসাক্ষাতের পর সবাই ছোটে যার যার ঘরে। একান্নবর্তী পরিবার হলে ছেলেরা প্রথমে সবচেয়ে বড় যে গুরুজন, দাদা-দাদি, নানা-নানি, চাচা-চাচি এবং মা-বাবা, বড় ভাই-বোনের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করে। তারপর যায় স্ত্রী-সন্তানদের কাছে। ঘরে খাবারের টেবিলে সাজানো থাকে মিষ্টি, কাবাবসহ নানা খাবার। সঙ্গে থাকে যথেষ্ট পরিমাণে চা-কফি। এরপর লোকজন ছোটে আশপাশের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা করার জন্য।
বাংলাদেশিদের আনন্দ ও একাকিত্ব
আরবি ‘ঈদ’ শব্দের মানে ‘আনন্দ’। আরব দেশে আরবিরা সে আনন্দ উদ্যাপনে চুল পরিমাণ ছাড় দেয় না। সারা দেশের রাস্তাঘাট ও বাজার, শপিং মল এবং গণ–উদ্যান সাজানো হয় খুব সুন্দর করে। থাকে প্রচুর আলোকসজ্জা। শহরের বিভিন্ন জায়গায় মনোরম আতশবাজির খেলা চলে, দেখার জন্য ভিড় করে শত শত মানুষ।
এত যে আনন্দ আয়োজন, তার মধ্যে উপমহাদেশের প্রবাসী, বিশেষ করে বাংলাদেশিদের ৯০ শতাংশ বা তার বেশি লোক থাকে একাকী, পরিবারহীন। ফলে আরব দেশে বাংলাদেশিদের কাছে ঈদ আসে আনন্দ ও একাকিত্বের মিশ্র বারতা নিয়ে। তবে এটাও স্বীকার করতে হবে, ঈদে ফুর্তিও হয়। কারণ, এই একটা সময়ই প্রায় ৯৯ শতাংশ মানুষের ছুটি থাকে, কেবল জরুরি বিভাগ ছাড়া। বাংলাদেশিদের তিনটি দল হয়। প্রথম দলে থাকে লেবার ক্যাম্পের চাকুরেরা। তাঁরা সবাই মিলে এবং অনেকটা কোম্পানির অনুদানে একসঙ্গে ঈদের নামাজ শেষে কোলাকুলির পালা শেষ করে বিরিয়ানি ও জুসটুস খান। এরপর সবাই যাঁর যাঁর খেয়ালখুশিমতো ঘুরতে বেরিয়ে পড়েন। দুবাই শহরে মেট্রোরেল এবং প্রায় সব এলাকায় যাওয়ার মতো বাসের ব্যবস্থা থাকার ফলে সে কাজ এখন সহজ হয়ে গেছে।
দ্বিতীয় দলের ব্যাচেলররা এককাট্টা হয়ে ছোটেন পিকনিক করতে। চলে যান সাগরের পাড়ে অথবা মরুভূমির কোনো ঘোরাঘুরির জায়গায়।
তৃতীয় দলের ব্যাচেলরদের কাছে ঈদ খুব একটা খুশির বারতা বয়ে আনে না। তাঁদের চাকরির সামান্য যে টাকা, তার ৮০-৯০ শতাংশ দেশে পাঠাতে হয়। তারপর পকেটে যা থাকে, তা দিয়ে আদতে ঈদে ফুর্তি করার অবকাশ থাকে না।
যাঁরা সরকারি চাকরি করেন বা প্রাইভেট কোম্পানিতে আছেন, আর বেতন পাঁচ হাজার দিরহামের ওপর এবং স্ত্রী-পরিবার নিয়ে থাকেন, তাঁদের ঘরে ঈদের খুশি বেশি। এর মধ্যে অনেকে আছেন, দূতাবাসে ঈদ পুনর্মিলনীতেও যাঁদের ডাক পড়ে। এর বাইরে তাঁদের সাধারণত আন্তপারিবারিক সম্পর্ক থাকে। ফলে নিজেদের মধ্যে ঘুরে বেড়িয়ে আনন্দে সময় কাটাতে পারেন। এই দলের লোকেরা এবং উচ্চপদস্থদের কিছু অংশ ঈদের জন্য সরকার ঘোষিত ৩ থেকে ৭-৮ দিনের ছুটি পান। তার সঙ্গে আরও কটা দিন যোগ করে ২১-৪৫ দিনের জন্য বার্ষিক ছুটি কাটাতে দেশেও যেতে পারেন তাঁরা।
রেজা খান: প্রধান বন্য প্রাণিবিশেষজ্ঞ, দুবাই সাফারি পার্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত
লেখাটি বর্ণিল ঈদ ২০২৪ ম্যাগাজিনে প্রকাশিত