চুলের যত্নে নারকেল তেল বহুল ব্যবহৃত এক উপাদান। চুলের পুষ্টি জোগাতে, চুলের আর্দ্রতা বজায় রাখতে এবং চুলের ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে নারকেল তেল দারুণ কার্যকর। শীত আসছে। এ সময়কার রুক্ষতা আর শুষ্কতাকে সামলাতে নারকেল তেলই হতে পারে সেরা সমাধান। আরও উপকার পেতে নারকেল তেলের সঙ্গে অন্যান্য তেল মিশিয়ে ব্যবহার করার পরামর্শও দেওয়া হয়। কিন্তু ঘি? চুলের আর্দ্রতার জন্য তেলের বিকল্প হিসেবে কি ঘি ব্যবহার করা যায়? আদতে কি চুলের কোনো উপকারে আসে ঘি?
চুলে সরাসরি প্রয়োগ করার জন্য তেলই ভালো। ঘি তেলের চেয়ে বেশি ‘তৈলাক্ত’ উপাদান হলেও চুলের জন্য এটি ঠিক ভালো ‘তেল’ নয়। চুলে ঘি প্রয়োগ করলে তা আর্দ্রতা ধরে রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করলেও অতিরিক্ত চিটচিটে হয়ে পড়ার কারণে স্বাভাবিক প্রাণবন্ত ভাবটি হারিয়ে যাবে।
মাথার ত্বকেও ঘি জমে আটকে থাকতে পারে। এভাবে চুলের সুস্থতা ব্যাহত হতে পারে। বরং খাদ্যতালিকায় খানিকটা ঘি রাখা হলে ঘির পুষ্টি থেকে ত্বক এবং চুল দুয়েরই উপকার মিলবে। এমনটাই জানালেন হার্বস আয়ুর্বেদিক স্কিন কেয়ার ক্লিনিকের রূপবিশেষজ্ঞ আফরিন মৌসুমী।
খাবার খাওয়ার ১০ মিনিট আগে এক গ্লাস পানি পান করুন। এরপর খান এক চা চামচ ঘি। এরপর শুরু করুন মূল খাবার। আয়ুর্বেদ মতে, এভাবে ঘি গ্রহণ করা হলে প্রয়োজনীয় কিছু পুষ্টি উপাদান দেহের কাজে লাগে ভালোভাবে। এসব উপাদানের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন ই, যা আমাদের খাবার থেকেই আমরা পাই। তবে খাবার খাওয়ার আগে ঘি খাওয়া হলে পরিপাকতন্ত্রের ভেতর তৈলাক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়। ফলে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন ই-এর মতো কিছু পুষ্টি উপাদান সহজে শোষিত হয়। মাথার ত্বক ও চুলের সুস্থতায় এসব উপাদান কাজে আসে। তবে এ–ও মনে রাখতে হবে, ঘি উচ্চ ক্যালরিসম্পন্ন স্নেহপদার্থ। তাই আপনার জন্য আলাদাভাবে চিকিৎসকের কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও কিন্তু রোজ ঘি না খাওয়াই ভালো। নিষেধাজ্ঞা না থাকলে মাঝেমধ্যে ঘি খেতে পারেন।
একটি কাচের বয়ামে ১০০ মিলিলিটার নারকেল তেল নিন। তাতে যোগ করুন এক চা চামচ মেথি। মুখ বন্ধ করে বয়ামটি রোদে রাখুন। গরম হয়ে গেলে পাত্রটি ছায়ায় নিয়ে রাখুন। একইভাবে তিন-চার দিন রোদে রাখার পর ব্যবহার করুন এই তেল। চাইলে এই অনুপাত ঠিক রেখে তেল ও মেথির পরিমাণ বাড়িয়েও নিতে পারেন। রোদে দেওয়ার বিকল্প হিসেবে কাচের বয়ামটি তিন-চার দিন গরম পানিতে রাখলেও চলবে। তবে এ ক্ষেত্রে বয়ামের মুখ খুলে নিয়ে গরম পানিতে দিন। এই তেল ব্যবহারে চুল হবে আরও কোমল।
চুল পড়ার সমস্যা থাকলে নারকেল তেলের সঙ্গে তিলের তেল ও ক্যাস্টর অয়েল যোগ করে নিন। নারকেল তেল ১০০ মিলিলিটার নিলে বাকি দুই ধরনের তেল নেবেন ৫০ মিলিলিটার করে।