শীতের কারণে ত্বকে চলে এসেছে শুষ্কতা। পাশাপাশি ত্বকে দেখা দিচ্ছে রোদে পোড়া সমস্যা। ঘরোয়া যত্নেই পাওয়া যাবে সব সমাধান।
প্রকৃতি চলে তার মনমতো। তাল মিলিয়ে চলতে হয় আমাদের। গাছে আর বাতাসে এখন যেমন চলছে শীত আসার আলোচনা। বাতাসে এর মধ্যেই শুষ্কতা চলে এসেছে, সঙ্গে যোগ হয়েছে ধুলা। এই দুইয়ে মিলে আক্রমণ করছে আমাদের ত্বককে। শুষ্ক বাতাসে ত্বক হারাচ্ছে আর্দ্রতা। আর ধুলার কারণে বাড়ছে অ্যালার্জির প্রবণতা, শুরু হচ্ছে চুলকানি, ফেটে যাচ্ছে ত্বক। দুটিই মূলত শীতের প্রধান সমস্যা। পাশাপাশি থাকে ত্বক পুড়ে যাওয়ার সমস্যা। সমস্যাগুলোর সমাধান জানালেন রূপবিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন।
আর্দ্রতার সৈন্যসামন্ত
শীতে অতিরিক্ত তৈলাক্ত ত্বক হয়ে যায় সাধারণ ত্বক। আর শুষ্ক ত্বক হয়ে ওঠে অতি শুষ্ক। শুষ্কতার সমস্যায় চল্লিশোর্ধ্বরা যতটা ভোগেন, কিশোরীরা ততটা নয়। এ কারণে ৩০ বছরের পর থেকেই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের দিক থেকে যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন। শিশুর ত্বকের নিচে আর্দ্রতার যে পরতটা থাকে, সেটা এতটাই সক্রিয় থাকে যে ওদের তেমন ঝামেলা হয় না। ত্বকে র্যাশ, জ্বালাপোড়ার মতো ঘটনাগুলোও মূলত শুষ্কতা থেকেই হয়। ময়েশ্চারাইজার ঠিকঠাক দিলে এই সমস্যাগুলো বড় হয়ে সামনে আসবে না। এলেও ছোট অবস্থাতেই চলে যাবে।
পা ফাটাও ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। অনেকেই তাই নতুন ধারায় সিলিকনের মোজা পরে ঘুমাচ্ছেন। তবে এই মোজা প্রতিদিন না পরার পরামর্শ দিলেন আফরোজা পারভীন। পায়ে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে সারা দিন মোজা পরে থাকতে পারেন। হালকা ঠান্ডায় সুতির আর বেশি ঠান্ডায় উলের মোজা বেছে নিন। ঘুমের সময় আর দিনে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টার জন্য মোজাই না হয় আপনার পায়ের দায়িত্ব নিয়ে নিক।
শীতকালে পানি খাওয়া এমনিতেই কমে যায়। ত্বক, নখ, চুলের জন্য প্রয়োজনীয় পানি শরীর পায় না। চুল পড়তে থাকে। ত্বক শুষ্ক হয়ে হয়ে যায়। এ সমস্যায় ফল ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে। পানি আছে এ ধরনের রঙিন ফল এ সময় খেতে পারেন। ভিটামিন সি জাতীয় ফল হলে ভালো। বডি ম্যাসাজ এ সময় দারুণভাবে সহায়তা করবে। মালিশে শরীরে রক্ত চলাচল ভালো হয়। পাশাপাশি শুষ্কতাও চলে যায়। মন ও শরীর দুটোই ঝরঝরে হবে। তেল আছে এমন মালিশ করার ওপর জোর দিলেন আফরোজা পারভীন। স্ক্র্যাবারভিত্তিক মালিশও করাতে পারেন। শরীরের মরা চামড়া উঠে যাবে, ত্বকও নরম থাকবে।
শীতকালেও সানস্ক্রিন আবশ্যক। এ সময়ের রোদের প্রখরতায় ত্বক পুড়ে যায় তাড়াতাড়ি। শীত তাড়াতে রোদের নিচে থাকতেই যেন মন চায়। ওম পাওয়া যায়। ৫ মিনিট কখন ১৫ মিনিট হয়ে যায়, খেয়ালও থাকে না। গরমকালে ছায়া খোঁজা মন শীতে খোঁজে রোদ। সানস্ক্রিন এ কারণেই দরকার। ত্বকে ভালো করে লাগিয়ে প্রাকৃতিকভাবে নিতে থাকুন ভিটামিন ডি।
আরও কিছু দুধ, হলুদ, চন্দনে তেল আছে। এ ধরনের উপকরণ এ সময়ে ব্যবহার করুন। যেসব উপকরণ ত্বক শুষ্ক করে ফেলবে, এড়িয়ে যান। প্রতিদিন বাইরে বের হতে হলে চুল শ্যাম্পু করুন। বাড়তি সুগন্ধি যোগ করা আছে এমন পেট্রোলিয়াম জেলি মুখে দেওয়া যাবে না। ত্বকে গ্লিসারিন দিতে চাইলে সঙ্গে একটু পানি মিশিয়ে নিতে পারেন। এ ছাড়া নারকেল তেল, জলপাই তেলও একটু পানি মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারেন।