প্রিয়াঙ্কার ৬ হাজার কোটি টাকার বিউটি ব্যবসার রহস্য কী জানেন?

প্রিয়াঙ্কা চোপড়া
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

অনেক তারকাই নিজের খ্যাতিকে ব্যবহার করে ব্যবসায় নামেন। বাজার তৈরিই থাকে, ভক্তরাই হন ওই তারকার সম্ভাব্য ক্রেতা। আর ঠিক এ কারণেই বিশ্বের প্রায় সব প্রথম শ্রেণির তারকারই বিউটি ও লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড আছে। যাঁদের এখনো নেই, শিগগির তাঁরা তা আনবেন, এমন সম্ভাবনাও প্রবল।

আপনি যখন এই লেখা পড়ছেন, ততক্ষণে হয়তো বিশ্বের কোনো এক প্রান্তে কোনো তারকা তাঁর নতুন ব্র্যান্ড নিয়ে পথচলা শুরু করেছেন। প্রতি মিনিটে তারকারা নতুন নতুন পণ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন। তবে একটা ব্র্যান্ড বাজারে আনলেই তো হলো না, সেটাকে টিকিয়ে রাখা, প্রতিযোগিতায় টিকে লাভজনক করা চাট্টিখানি কথা নয়। সেই দৌড়ে বেশ ভালোভাবেই উতরে গেছেন বলিউড থেকে হলিউডে পা রাখা প্রিয়াঙ্কা চোপড়া।

২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে চালু হয় প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার বিউটি ব্র্যান্ড ‘আলমোলি হেয়ারকেয়ার’। ২০২২ সালে এই ব্র্যান্ড ভারতেও তাদের কার্যক্রম শুরু করে। টার্গেট, সিভিএস, ওয়ালমার্ট, অ্যামাজনের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে কেনা যায় আলমোলি হেয়ারকেয়ারের পণ্য। ২০২৩ সালটি এই ব্র্যান্ডের জন্য খুবই বিশেষ। কেননা এই বছর বিউটি ব্র্যান্ড থেকে বেচাকেনা হয়েছে ৫৪ কোটি ২৭ লাখ ডলার। অর্থাৎ প্রিয়াঙ্কা চোপড়া গত বছর তাঁর ব্র্যান্ড থেকে প্রায় ৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করেছেন!

প্রিয়াঙ্কার ব্র্যান্ড থেকে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে মাথার ত্বকের তেল। কাছাকাছি দূরত্বে রয়েছে আলমোলি হেয়ারকেয়ার শ্যাম্পু। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা আর ইউরোপের কয়েকটি দেশে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে প্রিয়াঙ্কার চুলের যত্নের পণ্যগুলো।

প্রথমত, অল্প সময়ে এই অভাবনীয় সাফল্যের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে প্রিয়াঙ্কার বিউটি ব্র্যান্ডের মার্কেটিং পলিসি। প্রিয়াঙ্কা চোপড়া জানিয়েছিলেন, তিনি একজন পরিবেশযোদ্ধা। টেকসই ফ্যাশনে বিশ্বাসী। আর তারই অংশ হিসেবে তিনি এই বিউটি ব্র্যান্ড চালু করেছেন। এই ব্র্যান্ডের সব পণ্য পাওয়া যায় প্লাস্টিকের বোতলে। আর সেই বোতল তৈরি হয় সমুদ্রপাড় থেকে তুলে আনা, রাস্তা থেকে কুড়ানো প্লাস্টিক আপসাইকেল করে। ফলে বোতলগুলো তৈরিতেও খরচ হয় কম।

প্রিয়াঙ্কা চোপড়া

আবার পরিবেশবাদীরাও এসব পণ্য কেনার মধ্য দিয়ে নিজেদেরকে প্রিয়াঙ্কার পরিবেশ আন্দোলনের সঙ্গে একীভূত করেছেন। আলমোলি হেয়ারকেয়ারের ওয়েবসাইটে গেলেও দেখবেন, সেখানে পণ্যের বিজ্ঞাপন করা হয়েছে কম। বরং পরিবেশবাদী বিভিন্ন বক্তব্যই ঘুরেফিরে নজরে আসবে। আর এটি প্রথমেই প্রিয়াঙ্কাকে আর সবার থেকে আলাদা করেছে। সহজে সবার নজর কেড়েছে। কেননা পশ্চিমা বিশ্বে ‘ব্র্যান্ড উইথ আ পারপাস’–এর গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি।

প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘কাচের বোতল নয়, অর্থ খরচ করুন ভেতরের পণ্যের পেছনে।’ সেখানেও কথা রেখেছেন প্রিয়াঙ্কা। গুণেমানে কোনো ছাড় দেননি।
তৃতীয়ত, প্রিয়াঙ্কার এসব পণ্য প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি। ‘ভেগান’, ভেষজ উপাদানে তৈরি। সেটিও বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরিতে রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
সব মিলিয়ে কেবল ২০২৩ সালেই নয়, ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বিউটি ব্যবসায় প্রিয়াঙ্কার অবস্থান তারকা উদ্যোক্তাদের মধ্যে সারা বিশ্বে দ্বিতীয়। প্রথম অবস্থানে আছে রিয়ানার ফেন্টি বিউটি। তৃতীয় অবস্থানে আছে কাইলি কসমেটিকস।

সূত্র: দ্য ন্যাশনাল, কসমোপলিটান