মাথার ত্বক শুষ্ক হওয়া, ঘেমে যাওয়ার ফলাফল চুলের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়া। যত্ন নিতে এখন থেকেই।
শীত আসতে এখনো বাকি। গরম আরও কিছুদিন টের পাওয়া যাবে। তবে এই সময় থেকেই ত্বক হয়ে পড়বে শুষ্ক ও ফাটা ফাটা, চুল হয়ে যাবে রুক্ষ ও নিষ্প্রাণ। বাইরে বের হলে আপনাকে এখন রোদ ও ধুলা দুই–ই মোকাবিলা করতে হবে। আবার গরম থাকায় মাথার ত্বকও ঘামতে থাকে। চুল হয়ে পড়ে স্যাঁতসেঁতে, দ্রুত তাতে জমে ময়লা। প্রতিদিনের দূষণ ও অযত্নে চুল হয়ে যায় প্রাণহীন। এ ছাড়া শীতের অনিবার্য অনুষঙ্গ চুল পড়া, আগা ফাটা তো আছেই। এমন হাজারটা সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে চুল পরিষ্কার রাখা খুব জরুরি। এ জন্য চুলের নিয়মিত পরিচর্যার বিকল্প নেই। আর এই পরিচর্যার নতুন কোনো মোক্ষম দাওয়াই নেই, বহুদিন ধরে চলে আসা পন্থাগুলোই অনুসরণ করতে হবে। এই সময়ের গরম আর আসন্ন শীতের চুলের যত্ন কেমন হতে পারে, জানালেন রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা রিতা।
শীতে কমবেশি সবাই খুশকিতে আক্রান্ত হন। তাই গরমের শুরুতেই খুশকি থেকে মুক্তি পেতে শ্যাম্পু করার আগে মাথার ত্বকে হালকা গরম তেল মালিশ করা জরুরি। তেল ও লেবুর রস খুশকি দূর করতে বেশ সহায়ক। তবে রুক্ষ চুলের জন্য তেল ও লেবুর রসের সঙ্গে মধু ব্যবহার করতে পারেন। খুশকি থেকে বাঁচার এটা বেশ ভালো উপায়।
. চুলের ভেতর পর্যন্ত পুষ্টি পৌঁছাতে গরম তেল মালিশের বিকল্প নেই। আর যেহেতু এ সময়, দু–এক দিন পরপরই শ্যাম্পু করা প্রয়োজন, তেল না লাগালে চুল রুক্ষ হয়ে যাওয়াই স্বাভাবিক। তাই এক দিন পরপর রাতে বা শ্যাম্পু করার এক ঘণ্টা আগে তেল হালকা গরম করে মাথায় মালিশ করুন।
. রুক্ষ চুলের খুশকি থেকে রক্ষা পেতে তেলের সঙ্গে আমলকীর রস মিশিয়ে ত্বকে মালিশ করতে পারেন। এটা চুলের গোড়া মজবুত করে আর নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে।
. লেবুর রস বা অ্যান্টি-ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু লাগালে চুল ভালো করে ধুয়ে কন্ডিশনার লাগানোর পরামর্শ দিলেন রাহিমা সুলতানা। এগুলো মাথার ত্বক ও চুল শুষ্ক করে ফেলে।
. ভেজা চুলে ধুলা জমার আশঙ্কা বেশি থাকে। তাই বাইরে বের হওয়ার আগে ভেজা চুল যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফ্যানের বাতাসে শুকিয়ে নিন। তবে এ কাজে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার না করাই ভালো।
. গরমকালে রোদ ও ধুলা থেকে চুলকে বাঁচাতে বিভিন্ন ধরনের প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। টক দই, আমলকীর পেস্ট, অ্যালোভেরা, ডিমের কুসুম এবং মধু পরিমাণমতো একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। পুরো চুলে লাগিয়ে ৫ মিনিট ম্যাসাজ করে শাওয়ার ক্যাপ পরে আধা ঘণ্টা রাখুন। এরপর মাইল্ড শ্যাম্পু এবং ঠান্ডা পানি দিয়ে চুল পরিষ্কার করে নিন।
. চেষ্টা করুন চুলে যাতে ধুলা-ময়লা কম পড়ে। বাইরে বের হওয়ার সময় চুল যতটা সম্ভব ঢেকে নিন। প্রয়োজনে মাথায় টুপি বা স্কার্ফ ব্যবহার করুন।
ঝলমলে চুল ভালো স্বাস্থ্যের প্রতিফলন। এ জন্য শারীরিক যত্ন নেওয়া খুব জরুরি। পরিমিত এবং স্বাস্থ্যকর খাবার, পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। চুল ভালো রাখার জন্য ভালো ঘুম দরকার। পরিশ্রমও করতে হবে পরিমিত। অতিরিক্ত মানসিক চাপ নেওয়া যাবে না। এ ছাড়া যোগব্যায়াম, মেডিটেশনও চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, মানসিকভাবে স্থির থাকা। একই সঙ্গে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এবং নিয়মিত চুল পরিষ্কার রাখতে হবে। তাহলে চুল নিয়ে কোনো চিন্তা করতে হবে না।