বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে শীতকালের মেকআপ কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে। এ সময় সব ধরনের ত্বকেই কিছুটা পরিবর্তন আসে। ত্বকের দ্বিতীয় স্তর ডার্মিসে ঘামগ্রন্থির কাজ কম হয়, ফলাফল ত্বক আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে না। আমাদের ত্বকে প্রাকৃতিক আর্দ্রতা না থাকায় মেকআপে সহজেই ফাটল ধরে। শীতকালে মেকআপ কীভাবে করলে ভালো হবে, সেটাই জানালেন বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভ বিউটি কেয়ারের রূপবিশেষজ্ঞ শারমিন কচি।
সাজের আগে ত্বককে প্রস্তুত করতে হবে। শীতকালের শুষ্ক ত্বককে মেকআপের উপযোগী করতে ক্লিনজার-টোনার-ময়েশ্চারাইজার-প্রাইমার (সিটিএমপি পদ্ধতি) লাগানোর পরামর্শ দেন রূপবিশেষজ্ঞ শারমিন কচি। তিনি বলেন, এই চার ধাপ অনুসরণ না করলে মেকআপ ঠিকমতো বসে না। ত্বকেও উজ্জ্বলতা আসে না। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বেছে নেওয়া উচিত তেলবিহীন ফেসওয়াশ আর স্বাভাবিক ও শুষ্ক ত্বকের জন্য ময়েশ্চারাইজারসমৃদ্ধ ক্লিনজার।
কিন্তু সব ধরনের ত্বকের জন্যই বেছে নিতে হবে ময়েশ্চারাইজারসমৃদ্ধ টোনার। কারণ, মুখ পরিষ্কার করার পর সব ধরনের ত্বকেই আর্দ্রতার প্রয়োজন পড়ে। ময়েশ্চারাইজারের ক্ষেত্রে তেলবিহীন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার না করাই ভালো। বাজারে সাধারণত জেল, তেল ও সিলিকনভিত্তিক প্রাইমার পাওয়া যায়। যেকোনো ধরনের ত্বকেই মানায় জেলভিত্তিক প্রাইমার। এটি ত্বকের আর্দ্রতাকে ধরে রাখতেও সহায়তা করে। তবে যাদের ত্বকে ব্রণের দাগ আছে, তাঁরা বেছে নিতে পারেন সিলিকনভিত্তিক প্রাইমার।
মেকআপের একটি অপরিহার্য উপাদান হলো ফাউন্ডেশন। ত্বকের ধরন বুঝে সঠিক ফাউন্ডেশন বেছে নেওয়া জরুরি। শীতকালের জন্য সবচেয়ে ভালো ডুয়েল ফিনিশ ফুল কভারেজ ফাউন্ডেশন। এই ফাউন্ডেশন পরিমাণে লাগে খুবই অল্প, কিন্তু সব ধরনের ত্বকেই খুব ভালোভাবে মিশে যায়। আলাদাভাবে বলতে গেলে তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বেছে নিতে পারেন তেলবিহীন ফাউন্ডেশন, তেমনি স্বাভাবিক ও শুষ্ক ত্বকের জন্য বেছে নিতে পারেন ময়েশ্চারাইজারসমৃদ্ধ ফাউন্ডেশন।
ফাউন্ডেশন ব্যবহারের পর এটিকে ত্বকে স্থায়ী করতে ব্যবহার করা হয় পাউডার। এ ক্ষেত্রে সব ধরনের ত্বকেই ব্যানানা পাউডার বা হোয়াইট টোন পাউডার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। পাউডার ব্যবহারের পর ত্বক বেশি শুষ্ক দেখালে সেটিং স্প্রে দিয়ে পাউডার ও ফাউন্ডেশনকে সেট করে নিতে হবে।
চোখের সাজের ক্ষেত্রে ম্যাট ফিনিশ আইলাইনার ব্যবহার করাই শ্রেয়। চোখের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে চোখের পাপড়িতে ব্যবহার করতে পারেন ভলিউম মাসকারা। আজকাল চোখের সাজে গ্লসি আইশ্যাডো বেশ জনপ্রিয়। এর ব্যবহারে চোখে চলে আসবে ভিন্নতা। চোখের বেজ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন বাদামি রঙের গ্লসি আইশ্যাডো, এর ওপর হালকা শিমার দিলেই চোখের সাজ সম্পূর্ণ।
শীতকালে আবহাওয়ায় আর্দ্রতার অভাব ও শরীরে পানিশূন্যতার জন্য ঠোঁট শুকিয়ে যায়। শুকনো ঠোঁটে কোনো সাজই ভালো লাগে না। এ সময় ঠোঁটে আর্দ্রতাযুক্ত লিপবাম বা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করতে হবে। এরপর ব্যবহার করতে পারেন গ্লসি লিপস্টিক। কারণ, চোখের মতোই, ঠোঁটের সাজেও চলছে গ্লসি লুকের আধিপত্য।
মুখের ত্বক নরম ও উজ্জ্বল দেখাতে সাহায্য করে হাইলাইটার। স্কিন টোন অনুযায়ী বেছে নিতে হবে হাইলাইটার। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বেছে নিতে পারেন পাউডার হাইলাইটার আর শুষ্ক ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন তরল হাইলাইটার। মেকআপের পর সবশেষে ফিক্সিং স্প্রে দিয়ে পুরো মেকআপটিকে ঠিক করে নিতে হবে। এতে মেকআপটিও দীর্ঘস্থায়ী হবে।