ঘরে ফেসওয়াশ তৈরি করার নিয়মগুলি জানেন কি

প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে ঘরেই তৈরি করা যায় ফেসওয়াশ। একটু সময়সাপেক্ষ হলেও ত্বকের জন্য তা দারুণ। ঘরে ফেসওয়াশ তৈরির কাজটা কিন্তু খুব একটা কঠিনও নয়। রোজকার ব্যস্ততার মধ্যে এই সময়টুকু বের করতে পারলে ত্বক থাকবে সজীব ও কোমল। ত্বকভেদে ফেসওয়াশ তৈরির পদ্ধতি জানালেন হার্বস আয়ুর্বেদিক স্কিন কেয়ার ক্লিনিকের রূপবিশেষজ্ঞ আফরিন মৌসুমী।

তৈলাক্ত ত্বকে মিনিট দুয়েক ফেসওয়াশ মালিশ করুন । মডেল : কৃতিকা, কৃতজ্ঞতা : শোভন মেকওভার

অতিরিক্ত তৈলাক্ত ত্বকের জন্য

কারও কারও ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত। মুখ ধোয়ার অল্প সময় পরই তেলতেলে ভাব চলে আসতে দেখা যায়। একটু পরপর মুখ ধুতে বা মুছতে হয়। তেল নিয়ন্ত্রণে মুলতানি মাটি দারুণ কাজ করে। ৩ চা-চামচ মুলতানি মাটি, শঙ্খগুঁড়া ৩ চা-চামচ, লবঙ্গগুঁড়া দেড় চা-চামচ নিন। সব উপকরণ একসঙ্গে ব্লেন্ড করে নিন। প্রয়োজনমতো গোলাপজল কিংবা পানি মিশিয়ে তৈরি করুন মিশ্রণ। মুখের ত্বকে মালিশ করুন মিনিট দুয়েক। এরপর ধুয়ে ফেলুন। রোজ মিশ্রণ তৈরির পুরো ঝামেলা এড়াতে বেশি পরিমাণ লবঙ্গ গুঁড়া করে সংরক্ষণ করতে পারেন। চাইলে মাটি এবং সব শুকনা উপকরণ একসঙ্গে ব্লেন্ড করেও রেখে দেওয়া যায়। লবঙ্গ দেওয়াতে একটু জ্বালা করতে পারে। ভয়ের কিছু নেই। এভাবে মুখ ধুলে তৈলাক্ত ভাব যেমন কমবে, তেমনি কমবে ব্রণের সমস্যাও।

প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে ঘরেই তৈরি করা যায় ফেসওয়াশ

শুষ্ক ত্বক

শুষ্ক ত্বকের ফেসওয়াশ বানাতে নিন ২ টেবিল চামচ গরম দুধ। এতে ১ চা-চামচ বেসন এবং একটি মাঝারি আকৃতির খেজুর ভিজিয়ে রাখুন মিনিট পাঁচেক। এরপর ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে ফেসওয়াশ। এই ফেসওয়াশ দিয়ে পাঁচ থেকে সাত মিনিট ধরে মালিশ করে মুখ পরিষ্কার করে ফেলতে পারেন। এরপর মুখ ধুয়ে ফেলুন। চাইলে মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে পাঁচ মিনিট অপেক্ষাও করতে পারেন। দুধ দিয়ে তৈরি করা হয় বলে এটিকে সংরক্ষণ করা যাবে না। একবেলা ফেসওয়াশ তৈরি করে বেশি হলে দুবেলা (সকাল ও রাত) সেটি দিয়ে মুখ ধুতে পারবেন, যদি ফেসওয়াশটি কাচের মুখবন্ধ পাত্রে ফ্রিজে রাখা হয়। এই ফেসওয়াশ তৈরির জন্য ছোলার বেসন নেওয়াই ভালো। বেসন ত্বকের মৃত কোষ তুলে ফেলতে সাহায্য করে।

ফেসওয়াশ ব্যবহারের পর ভালো করে মুখ ধুয়ে ফেলুন

মিশ্র ধরনের ত্বক

কারও কারও ত্বকের কিছু অংশ প্রচণ্ড শুষ্ক থাকে। আবার অন্য অংশ হয় তৈলাক্ত। ত্বকের কোনো কোনো অংশে ব্রণও হয় খুব। এমন ত্বক পরিষ্কার করতে প্রয়োজন মুগডালের বেসন আর দারুচিনি। ২ কাপ বেসনের সঙ্গে নিন ১ কাপ দারুচিনি। ব্লেন্ডারে দারুচিনি গুঁড়া করে ফেলুন। এই দুই উপকরণ একসঙ্গে ব্লেন্ড করে সংরক্ষণ করতে পারেন। ব্যবহারের আগে প্রয়োজনমতো পুদিনাপাতা কিংবা তুলসীপাতার নির্যাস যোগ করে নিন। এরপর এক বা দুইবেলার জন্য ফ্রিজে রেখে ব্যবহার করুন। মিনিট দুয়েক মালিশ করে মুখ ধুয়ে ফেলুন। চাইলে মুখে লাগিয়ে পাঁচ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলতে পারেন। তুলসী কিংবা পুদিনাপাতার নির্যাস বের করার নিয়ম জানেন তো? সমপরিমাণ পাতা আর পানি একসঙ্গে জ্বাল দিন। ধরা যাক, ২ কাপ পাতা আর ২ কাপ পানি নেওয়া হলো। জ্বাল দিতে দিতে মিশ্রণের পরিমাণ যখন প্রায় এক-চতুর্থাংশে নেমে আসবে, তখন চুলা থেকে নামিয়ে ফেলুন। ঠান্ডা হলে ছেঁকে নিয়ে এই নির্যাস ব্যবহার করুন। এই নির্যাস কিউব আকারে জমিয়ে বরফ করে সংরক্ষণ করা যায়।