যুগ যুগ ধরেই মানুষ সুন্দরের প্রেমে পড়েছে, সুন্দরকে ভালোবেসেছে। তবে যুগের সঙ্গে সৌন্দর্যচর্চার ধরন বদলেছে। বয়স, শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন এবং পরিবেশগত নানান বিষয় সৌন্দর্যের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। নানান কিছুর প্রভাবেই হতে পারে সৌন্দর্যহানি। ত্বকে দাগছোপ হতে পারে, হারিয়ে যেতে পারে মসৃণতা। আবার জন্মগত দাগও থাকে কারও কারও। ত্বক এবং শারীরিক গড়নকে সুন্দর করে তোলার আধুনিকতম চিকিৎসাব্যবস্থা অ্যাস্থেটিক ডার্মাটোলজি। বিশ্বজুড়ে সমাদৃত এই চিকিৎসাপদ্ধতি বাংলাদেশেও রয়েছে।
নিজেকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তুলতে অনেকেই এ ধরনের চিকিৎসার আশ্রয় নেন। লেজার চিকিৎসার কথা অনেকেরই জানা। অনেকেই এই চিকিৎসায় আগ্রহী হন। কেউ আবার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভয়ও পান। লেজার চিকিৎসায় যেমন শরীরের বিভিন্ন ‘খুঁত’ সংশোধন করা যায়, তেমনি আরও কিছু ত্বক–সমস্যার সমাধানের জন্য অ্যাস্থেটিক ডার্মাটোলজিতে আছে আরও কিছু পদ্ধতি। যেমন বোটক্স, ফিলার, পিলিং, মেসো থেরাপি, হাইড্রা ফেসিয়াল, যা কিছু সৌন্দর্যের অন্তরায়, তার জন্যই রয়েছে চিকিৎসা। এমনটাই জানালেন অ্যাস্থেটিক ডার্মাটোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. সরকার শামীম।
সৌন্দর্যে, শুদ্ধতায়
ঝুমু খান’স লেজার মেডিকেলের ক্লিনিক্যাল, অ্যাস্থেটিক ডার্মাটোলজি এবং প্রিভেনটিভ ও রিজেনারেটিভ মেডিসিন বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. ঝুমু খান বললেন, ত্বকের উজ্জ্বলতা, মসৃণতাও সৌন্দর্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সৌন্দর্যের অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে লালচে দাগ, কালো ছোপ, ক্ষত কিংবা বাড়তি লোম। অ্যাস্থেটিক ডার্মাটোলজিতে এসবের সমাধান মেলে। ত্বক হয় সুন্দর সতেজ ও প্রাণবন্ত। নিষ্প্রাণ ত্বককে সতেজ করে তোলাও অ্যাস্থেটিক ডার্মাটোলজির কাজ।
বয়সের সঙ্গে কিছু পরিবর্তন আসবেই
প্রকৃতির নিয়মেই ত্বকে বয়সের ছাপ পড়বে। তবে আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় বার্ধক্যের ছাপ কমিয়ে আনাও সম্ভব। ত্বকের বলিরেখা কমাতে বোটক্স ও ডার্মাল ফিলার দারুণ কার্যকর দুই পদ্ধতি। তা ছাড়া ত্বকের কোনো অংশ দেবে গেলে তারও সমাধান দেবে এই দুই পদ্ধতি। এসব পদ্ধতি প্রয়োগে ফেরত আসে মুখের গড়নের স্বাভাবিক, সতেজ ও ভরাট ভাব।
ত্বকে তারুণ্য ফিরিয়ে আনতে
ত্বকের তারুণ্য ফিরিয়ে আনতে ফ্র্যাকশনাল লেজার ও মাইক্রোনিডলিং পদ্ধতি। এই দুই পদ্ধতির প্রয়োগে ত্বরান্বিত হয় ত্বকের গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন কোলাজেনের বৃদ্ধি। ডিপ ক্লিনজিং এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা ও তারুণ্যের জন্য হাইড্রা ফেসিয়াল এবং কেমিক্যাল পিলিং পদ্ধতি প্রয়োগ করার সুযোগ রয়েছে। হাইড্রা ফেসিয়াল ত্বককে গভীর থেকে পরিষ্কার করে, একই সঙ্গে ত্বকে জোগায় আর্দ্রতা। কেমিক্যাল পিলিং পদ্ধতিতে ত্বকের মৃত কোষ দূর করা যায়। এই পদ্ধতিতে ত্বকের স্বাভাবিক রং ফিরে আসে, দূর হয় ত্বকের অমসৃণতা। ত্বকের ঝুলে পড়া ভাব কমিয়ে আনতেও কাজ করে অ্যাস্থেটিক ডার্মাটোলজি।
চুল কমে গেলে
চুল কমে গেলে অ্যাস্থেটিক ডার্মাটোলজির সহায়তায় চুল প্রতিস্থাপনও করা যায়। কারও কারও ক্ষেত্রে মাথার কোনো একটি অংশের চুল পড়ে যেতে থাকে। কারও আবার মাথার যেকোনো অংশের চুলই পড়ে যায়। এসবের পেছনে পুষ্টির অভাব, ছত্রাক সংক্রমণসহ নানান কারণ থাকে। মূল কারণটি নির্ণয় করা জরুরি।