আরও অনেকের মতো সাগর ইসলামও একসময় টিউশন করে হাতখরচ চালাতেন। বাবা মারা যাওয়ার পর ঠিক করলেন, এমন কিছু করবেন, যেখানে নিজের পাশাপাশি অন্যেরও কাজের সুযোগ তৈরি হবে। সিদ্ধান্ত নিলেন মাছ, মাংসসহ বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করবেন। তবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শস্যবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষার্থী সাগরের সঙ্গে অন্য দোকানির পার্থক্য হলো, দোকানদারেরা সাধারণত পিস হিসেবে কোনো কিছু বিক্রি করেন না। সেখানে সাগর সব ধরনের খাদ্যসামগ্রী পিস হিসেবে সাধারণের কেনার উপযোগী করে বিক্রি করেন। সাগর বলেন, ‘পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের খেয়ালখুশিমতো করতে পারব, এ কারণেই “এক পিস মাছ-মাংস হোম ডেলিভারি বাজার” উদ্যোগটি নিই।’
সাগরের হোম ডেলিভারি বাজারে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ—ইলিশ, রুই, পাঙাশ, বাটা, চিংড়ি, পাবদা যেমন পাওয়া যায়, তেমনি এখানে বিক্রি হয় ব্রয়লার, সোনালি মুরগি, গরু, ছাগল ও কোয়েল পাখির মাংস। মূলত কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থী, ছোট ছোট পরিবার এক পিস মাছ-মাংস হোম ডেলিভারি বাজারের প্রধান ক্রেতা। প্রয়োজনমতো সবকিছু তাঁরা কিনতে পারেন। এ ছাড়া ভোজনরসিকদের জন্য স্পেশাল প্যাকেজ, কাপল প্যাকেজ ও শুঁটকিও তাঁরা সরবরাহ করেন।
এই জুনে উদ্যোগটি নেন সাগর। মাত্র এক হাজার টাকা দিয়ে শুরু করেছিলেন। প্রথম দিকে মানুষের হাসি-বিদ্রূপ, ঠাট্টা ছিল নিত্যসঙ্গী। তবে সময়ের সঙ্গে নিজেকে প্রমাণ করেছেন তিনি। এখানেই শেষ নয়। অর্থের অভাবে মাঝেমধ্যেই তাঁকে হোম ডেলিভারি বাজার বন্ধ রাখতে হয়। টাকার বন্দোবস্ত হলে আবারও শুরু করেন পথচলা। অদূর ভবিষ্যতে নিজের উদ্যোগকে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়ার স্বপ্ন দেখেন এই তরুণ।