তেলেগু সিনেমা ‘আরআরআর’-এর অস্কার জেতা গান ‘নাটু নাটু’ নিয়ে আলোচনা যেন থামছেই না। গানটিতে ব্যবহৃত পোশাক, কোরিওগ্রাফিতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে। নাটু নাটু নিয়ে এমনই মজার কিছু তথ্য জেনে নিন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির বাসভবনের সামনে হয়েছিল নাটু নাটুর শুটিং। ইউক্রেন যুদ্ধের কিছুদিন আগে টানা ২০ দিন সেখানে শুটিং করেন পরিচালক এস এস রাজামৌলি।
শুধু পরিচালকই নন, এ গানের জন্য ভীষণ খেটেছেন লেখক, সংগীত পরিচালক, শিল্পী, কোরিওগ্রাফার, কস্টিউম ডিজাইনার, অভিনেতা থেকে নাচের বাকি শিল্পীরাও। চলচ্চিত্র সমালোচক ও সাংবাদিকদের মতে, গান, নাচ, পটভূমির এক ‘কমপ্লিট প্যাকেজ’ হওয়াতেই দেশ-বিদেশের মানুষ নাটুতে মজেছে।
গানটির কোরিওগ্রাফি করেছেন প্রেম রক্ষিত। শুধু নাটু নাটু শব্দটির জন্যই ১০০–র বেশি ভিন্ন ভিন্ন স্টেপ ঠিক করেছিলেন তিনি। সেখান থেকে তিন থেকে চারটি স্টেপ বাছাই করে নেন রাজামৌলি।
নাটু নাটু গানটির কস্টিউম ডিজাইনার ছিলেন রামা। যিনি আবার পরিচালক রাজামৌলির স্ত্রী। গানের প্রধান দুই চরিত্র রাম চরণ তেজা ও এন টি আর জুনিয়রের পোশাক দেখে আরেক দফা নাচের স্টেপ ঠিক করেন ডান্স ডিরেক্টর।
রামা দুই নায়কের জন্য যে পোশাক বানিয়েছিলেন, তাতে সাসপেন্ডার (শার্টের ওপর দিয়ে প্যান্টের সামনে থেকে পেছনে টেনে নেওয়া একধরনের বেল্ট) ছিল। এ সাসপেন্ডার দেখে গানে একটা বিশেষ স্টেপ যুক্ত হয়। যেখানে রাম চরণ ও এন টি আর সাসপেন্ডার ধরে নাচতে থাকেন।
তবে এ নাচের স্টেপের জন্য কোরিওগ্রাফার প্রেম রক্ষিতের দরকার ছিল একটু ঢিলেঢালা সাসপেন্ডার। সেই মতে দুই ধরনের সাসপেন্ডার তৈরি করেন কস্টিউম ডিজাইনার রামা। একটি ধরন পোশাকের সঙ্গে ফিটিং, আরেকটি খানিকটা ঢিলেঢালা। ঢিলেটা শুধু টানাটানি করার সময় পরানো হতো। বাকি সময় পরনে থাকত ফিটিং সাসপেন্ডার।
এই সাসপেন্ডার নিয়ে একটি মজার ঘটনাও শেয়ার করলেন পরিচালক রাজামৌলি, ‘গানের শুরুর দিকে একটি দৃশ্যে জেনি এসে যখন রাম চরণ ও এন টি আরের সাসপেন্ডার ধরে টান দিয়ে বলেন, “গো”, তার পরের শটে দুজনের হাসিমুখ দেখা যায়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, জেনি সাসপেন্ডার ধরে টান দেওয়ার পর সেটা ফিটিং হওয়ায় দুজনই (রাম চরণ ও এন টি আর) বুকে ব্যথা পান, কিন্তু মুখে হাসি ধরে রাখা লাগে। আমি কাট বলতেই দুজন ব্যথায় ককিয়ে ওঠেন।’
প্রেসিডেন্টের যে ভবনের সামনে শুটিং হয়, তার পেছনেই ইউক্রেনের পার্লামেন্ট ভবন। গানের ভিডিওতে গম্বুজের একটি অংশ কয়েকবার দেখা যায়। যেখানে গম্বুজের মূল রং ছিল ধাতব, সেটাকে সম্পাদনার টেবিলে বদলে ফেলেন।
গানটির ব্যাকগ্রাউন্ডে যেসব শিল্পী নেচেছেন, তাঁরা প্রায় সবাই ইউক্রেনের নৃত্যশিল্পী ও মিউজিশিয়ান।
গানের একটা অংশে নাচার সময় ইচ্ছা করে ধুলাবালু ব্যবহার করা হয়। যার কারণে খুব দ্রুত শিল্পীদের কস্টিউম নোংরা হয়ে পড়ে। প্রতিটি পোশাকই তাই দুই থেকে চারটি করে তৈরি করা হয়, যাতে একটি ময়লা হলে আরেকটি ব্যবহার করা যায়। একই সঙ্গে প্রতিদিন শুটিং শেষে পোশাকগুলো একটি একটি করে হাতে ধোয়া হয়। কারণ, ওয়াশিং মেশিনে দিলে সেটা ঠিকমতো পরিষ্কার না হওয়ায় চান্স ছিল বেশি। প্রতিদিন আট থেকে নয় ঘণ্টার শুটিং শেষে সেটা তাই ধোয়া হতো যত্ন করে।