বেসরকারি পলিটেকনিক থেকে চীনা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাইফুল

অনেকের ধারণা, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা করে বিদেশে উচ্চশিক্ষা নেওয়া যায় না। কিন্তু আজকাল দেশের অনেক শিক্ষার্থীই এ সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন। কয়েকজনের খোঁজ নিয়েছিলাম আমরা। এখানে পড়ুন সাইফুল ইসলামের অভিজ্ঞতা।

সাইফুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

ছোটবেলা থেকেই বড় বড় ভবন কিংবা রাস্তা তৈরির কাজ মন্ত্রমুগ্ধের মতো দেখতেন সাইফুল ইসলাম। তখন থেকেই প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন। ২০১৪ সালে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার পর রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে পড়েন। পড়াশোনার গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো তখন রাজপথেই কাটত। এসএসসির ফলাফলে এর প্রভাব পড়ে। জিপিএ যা পেয়েছিলেন, তাতে ভালো কলেজে ভর্তি হওয়া সম্ভব ছিল না। তখন থেকেই প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন ফিকে হতে থাকে।

বড় ভাইদের পরামর্শে তখন নিজ জেলা লক্ষ্মীপুরের একটি বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন। এখান থেকেই জীবনের নতুন পথ খোঁজা শুরু। রাজনীতি থেকে দূরে সরে পুরোদমে একাডেমিক পড়াশোনায় মন দেন। ইন্টারনেটের সাহায্য নিয়ে বিভাগ–সম্পর্কিত গবেষণাপত্র খুঁজে খুঁজে পড়া শুরু করেন। ফলে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ইংরেজির দক্ষতাও।

চীনের সিচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন এখন সাইফুল। বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ বৃত্তির আওতায় তিনি ছাড়াও এই ক্যাম্পাসে আছেন আরও কয়েকজন বাংলাদেশি। সাইফুল বলেন, ‘আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাটা এমন যে পলিটেকনিক বা ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের ছোট চোখে দেখা হয়। তারা সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগও পায় না। একটি মাত্র নির্ধারিত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে (ডুয়েট), যেখানে আসনসংখ্যা খুবই কম। অথচ সব প্রতিষ্ঠানেই পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের সমান সুযোগ থাকা উচিত ছিল।’

আক্ষেপ কিছুটা থাকলেও নিজের স্বপ্নের পরিধিকে কখনো ছোট রাখতে চান না সাইফুল ইসলাম। ভবিষ্যতে পিএইচডি করার স্বপ্ন দেখছেন। তিনি বলেন, ‘আপাতত স্নাতক শেষ করার দিকেই আমার পূর্ণ মনোযোগ। ভবিষ্যতে স্ট্রাকচারাল মেকানিকস নিয়ে উচ্চতর গবেষণা ও পিএইচডি করতে চাই।’