যেসব জায়গায় ফোনে কথা বলবেন না

প্রযুক্তির কল্যাণে মুঠোফোন এখন আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী
ছবি: পেক্সেলস

ভেবে বলুন তো, আপনার কাছে এই মুহূর্তে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবহার্য জিনিসটি কী? বেশির ভাগ ক্ষেত্রে উত্তরটা এক। ফোন। প্রযুক্তির কল্যাণে মুঠোফোন এখন আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। ছোট্ট এই স্ক্রিনের ভেতর এখন দৈনন্দিন অনেক কাজের সমাধান। তবে এত কিছুর পরও ফোনের আদি ও অকৃত্রিম ব্যবহার এখনো সেই একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ। হাতের কাছে ফোন আছে বলেই যেকোনো সময় যেকোনো অবস্থানে ফোনে কথা বলতে বসে পড়বেন, তা কিন্তু নয়। ফোনে কথা বলার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে কয়েকটি বিষয় এবং মেনে চলতে হবে সামাজিকতা। আশপাশের মানুষদের যাতে অসুবিধা না হয়, সেই চিন্তা মাথায় রেখে কথা বলতে হবে। নিতান্ত প্রয়োজন না হলে এসব জায়গায় ফোনে কথা বলবেন না।

রাস্তায় চলাচলের সময়

রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে ফোন চালানো ও কথা বলা অনেকের পুরোনো অভ্যাস। কিন্তু কথা বলতে বলতে রাস্তা থেকে মনোযোগ সরিয়ে ফেললে ঘটতে পারে বিপদ। যে কারণে রাস্তায় চলাচলের সময় ফোন চালানো থেকে বিরত থাকুন। ফোনকল এলে পাশে এক জায়গায় থেমে কথা শেষ করে আবার চলাচল শুরু করুন। চালক ও পথচারী উভয় পক্ষের জন্য কথাটি সত্য। বিশেষ করে গাড়ি চালানো ও রাস্তা পার হওয়ার সময় রাস্তার দিকেই থাকুক পূর্ণ মনোযোগ। আর ড্রাইভিং করার সময় ফোনে কথা বলা তো রীতিমতো ফৌজদারি অপরাধ।

রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে ফোন চালানো ও কথা বলা অনেকের পুরোনো অভ্যাস

রেস্টুরেন্ট

বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রেস্তোরাঁয় যাওয়ার মূল উদ্দেশ্য থাকে নিরিবিলিতে পেটপূজা। অনেকে আবার রেস্তোরাঁয় যান প্রিয় মানুষের সঙ্গে সময় কাটাতে। কারণ যা–ই হোক না কেন, খাবার টেবিলে বসে ফোনে অন্য কারও সঙ্গে আলাপ করা কোনোভাবেই শোভন নয়। এতে করে আশপাশের মানুষ যেমন বিরক্ত হয়, তেমনি খাওয়ার সময় মনোযোগ সরে গেলে খাবার আটকে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে। আর আপনি পছন্দের খাবার অর্ডার করলেন বটে, কিন্তু খাওয়ার সময় ফোনে কথা বলার কারণে খাবারের স্বাদটা সেভাবে আস্বাদন করলেন না। কেননা আপনার মনোযোগ তো কথোপকথনে ছিল। ঠিক এ কারণে শিশুদের টেলিভিশন দেখাতে দেখাতে খাওয়াতে নেই।

গণপরিবহন

অনেকে আছেন বাস কিংবা ট্রেনে উঠেই মুঠোফোন নিয়ে শুরু করেন গল্প। ব্যক্তিগত সেসব আলাপ আর ব্যক্তিগত থাকে না, পুরো বাসভর্তি লোকজনের গোচরে চলে যায়। না চাইতেও শুনতে হয় সেই আলোচনা। গণপরিবহনে চলাচলের সময় এমন কথাবার্তা বিরক্তির উদ্রেক করে। বিশেষ করে মেট্রোরেলে, যেখানে আবদ্ধ অবস্থায় চলাচল করতে হয় সবার। প্রচণ্ড ভিড় ও যানজট ঠেলে অফিসে যাওয়ার পথে কেউ আপনার ব্যক্তিগত আলাপচারিতা শুনতে চাইবে না।

হাসপাতাল

রোগী ও তাঁদের স্বজনদের কোলাহলে সরব থাকলেও হাসপাতাল বরাবরই একটি নীরব জায়গা। হাসপাতাল তৈরি করা হয় রোগীদের প্রয়োজন, স্বস্তি আর আরামের কথা মাথায় রেখে। তাই সেখানে ফোনে কথা বলার সময় সতর্কতা মেনে চলতে হবে। বিশেষ করে হলওয়ে এবং আউটডোর, যেখানে রোগীদের সুস্থতার জন্য নীরবতাই কাম্য, সেখানে ফোনে কথা বলবেন না। জরুরি প্রয়োজন থাকলে হাসপাতালের বাইরে গিয়ে কিংবা হলওয়ে থেকে বেরিয়ে ব্যক্তিগত কথা সারুন।

সেলুন

পাড়ার মোড়ের চুল কাটানোর দোকান হোক কিংবা নামীদামি কোনো সেলুন, যতটা সম্ভব নীরবতা বজায় রাখার চেষ্টা করুন। বেশির ভাগ সেলুন তৈরি হয় আবদ্ধ জায়গায়, ছোটখাটো কথাবার্তাও পৌঁছে যায় সবার কানে। সেখানে ফোনে ব্যক্তিগত কথাবার্তা বলা শোভনীয় নয়। আর চুল কাটার সময় তো নয়-ই। ফোনে কথা বললে নাপিতের মনঃসংযোগে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। আর তাতে ক্ষতিটা কিন্তু আপনারই!

তথ্যসূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট

Photo by Stephanie Lima from pexels

photo by Gülşah Aydoğan from pexels