সিজিপিএ–৪ এ ৪, পেয়েছেন স্বর্ণপদক

ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ২২তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হলো ২ মার্চ। ভালো ফলের জন্য সমাবর্তনে স্বর্ণপদক পেয়েছেন সামিয়া বিনতে হাসান। স্নাতকে ৪–এ ৩.৯৯ এবং স্নাতকোত্তরে সিজিপিএ–৪ পেয়েছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে কেমন করে এত ভালো ফল ধরে রেখেছেন? জানতে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন ছিদরাতুল মুনতাহা

সামিয়া বিনতে হাসান

স্বর্ণপদক পেলেন, কেমন লাগছে?

অবশ্যই খুব ভালো লাগছে। এ অনুভূতি প্রকাশ করার মতো না। সবচেয়ে ভালো লাগছে এই ভেবে যে আমার মা-বাবাকে কিছুটা হলেও গর্বিত করতে পেরেছি।

কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশলে (সিএসই) কেন পড়ার ইচ্ছে হলো?

সিএসইতে আসাটা আমার জন্য বেশ মজার। ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে আমি স্নাতক করেছি ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। স্নাতকেও আমার সর্বোচ্চ সিজিপিএ ছিল ৩.৯৯৩। ২১তম সমাবর্তনেও তাই স্বর্ণপদক পেয়েছিলাম। কিন্তু পরে উপলব্ধি করলাম, ডেটা সায়েন্স বিষয়ে আমি উচ্চশিক্ষা নিতে চাই। তাই ২০২১ সালে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সিএসই বিভাগে স্নাতকোত্তর শুরু করি। এই খাতে বেশ আগ্রহ আছে বলেই বিষয়টা বেছে নেওয়া।

৪-এর মধ্যে সিজিপিএ–৪ ধরে রাখা তো সহজ কথা না। প্রতিটি সেমিস্টারেই সর্বোচ্চ ভালো ফল করতে হয়। কীভাবে এই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছিলেন?

সিজিপিএ–৪ পাওয়া অবশ্যই অনেক কঠিন, কিন্তু আমি বিশ্বাস করি ধৈর্য ধরে এগোলে সবকিছুই সম্ভব। প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিন পড়েছি। এ কারণেই সম্ভবত কঠিন কাজটা সহজ হয়ে গেছে।

পড়াশোনার ক্ষেত্রে আর কোনো বিশেষ কৌশল ছিল?

ওই যে বললাম, প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিন শেষ করা, এটাই আমার কৌশল। কখনোই এক দিনের পড়া আরেক দিনের জন্য ফেলে রাখতাম না। ফলে পরীক্ষার আগের দিন রিভিশন দিলেই আমার প্রস্তুতি হয়ে যেত।

ক্যাম্পাসজীবনে স্মরণীয় দিন কোনটি?

দুই সমাবর্তনে দুটি স্বর্ণপদক পাওয়াই আমার ক্যাম্পাসজীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় দিন। ভবিষ্যতেও এই দুটি দিনের কথাই বারবার মনে পড়বে।

কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের কোন অভিজ্ঞতাটার কথা আলাদা করে বলবেন?

একটা অভিজ্ঞতা আমার কাছে অমূল্য। সেটা হলো পড়াশোনা চলাকালে গ্র্যাজুয়েট টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করেছি। কাজের সুবাদে আমি শিক্ষার্থীদের পড়া বোঝানোর জন্য অতিরিক্ত ক্লাস নিতাম। কাউকে পড়া বোঝাতে গেলে যে আনন্দ হয়, সেটা আমার কাছে ভীষণ আলাদা।

আপনার বিশ্ববিদ্যালয় কোন দিক দিয়ে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চেয়ে আলাদা?

এখানে শিক্ষকেরা অনেক বেশি সহযোগিতা করেন। শিক্ষার্থীদের দিকে খেয়াল রাখেন। গবেষণার সঙ্গে আমাদের যুক্ত করতে চেষ্টা করেন, যেটা উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তির সুযোগও অনেক বেশি। আমি নিজেই বিএসসি এবং এমএস—দুটিই বৃত্তি নিয়ে শেষ করেছি।

আপনার বেড়ে ওঠা কোথায়, স্কুল–কলেজ কোথায় ছিল?

ঢাকাতেই বড় হয়েছি। এসএসসি ও এইচএসসি দিয়েছি ভিকারুননিসা নূন স্কুল থেকে।

এখন কী করছেন?

এখন প্রভাষক হিসেবে চাকরি নেওয়ার চেষ্টা করছি। পাশাপাশি পিএইচডির জন্যও চেষ্টা করছি। ইচ্ছা আছে দেশের বাইরে একটা ভালো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডেটা সায়েন্সের ওপর উচ্চতর শিক্ষা নেব। পিএইচডি শেষ হলে দেশে ফিরে শিক্ষক হয়ে শিক্ষা খাতে অবদান রাখতে চাই।