মার্কিন লেখক ও উপস্থাপক গ্যারি চ্যাপম্যানের মতে, স্বভাবগতভাবেই মানুষ সব সময় অপরের কাছ থেকে ভালোবাসা প্রত্যাশা করে। অন্য কেউ তাকে ভলোবাসবে, এটা একধরনের মানসিক চাহিদা। ভালোবাসার মাধ্যমে একজন মানুষ অন্যজনের কাছে প্রিয় ও নিকটবর্তী হয়ে ওঠে। একমাত্র ভালোবাসা দিয়ে যেকোনো সাধারণ কিংবা বিবর্ণ সময়কে সুন্দর ও রঙিন করে তোলা সম্ভব। ভালোবাসা যেন এক ম্যাজিক। নিমেষে পাল্টে দেয় মন ও মননের খতিয়ান। একাকী অলস প্রহরে হঠাৎ প্রিয় মানুষের একটা ফোনকল কিংবা একটা ছোট টেক্সট মুহূর্তে ঝলমলে করে দেয় কোনো নিস্তরঙ্গ দুপুর কিংবা বিষণ্ন সন্ধ্যা।
কীভাবে ভালোবাসা প্রকাশ করবেন
বেশির ভাগ মানুষেরই কোনো না কোনো ভালোবাসার মানুষ থাকে, হতে পারে তা গোপন বা প্রকাশ্য। চলুন, দেখে নেওয়া যাক ভালোবাসা প্রকাশের কিছু উপায়।
প্রিয় মানুষকে তার যেকোনো ভালো কাজের জন্য উৎসাহ দিন। তার নেওয়া ভালো উদ্যোগকে স্বাগত জানান। কোনো পোশাক পরলে বা সাজগোজ করলে তাকে সুন্দর লাগছে বলুন।
সঙ্গীর প্রিয় অপ্রিয় জিনিসগুলো জানার চেষ্টা করুন। প্রিয় জিনিসগুলো চর্চা করুন আর অপ্রিয়গুলো এড়িয়ে চলুন। বিশেষ দিন কিংবা সময় করে তাকে নিয়ে কোথাও বেড়িয়ে আসুন। চলে যান কফি ডেটে কিংবা লাঞ্চ–ডিনারে।
ভালোবাসার মানুষটি পছন্দ করবে, এমন কোনো উপহার নিয়ে তার সামনে হঠাৎ হাজির হয়ে যান। তার ভাবনায় নেই, এমন ভিন্নধর্মী কোনো কিছু সামনে দিয়ে তাকে চমকে দিন!
প্রিয় মানুষটির দুঃসময়ে, অসুস্থতায়, বিপদে বা যেকোনো প্রয়োজনে এগিয়ে যান। যতটুকু সম্ভব পাশে থেকে সঙ্গ দেওয়ার চেষ্টা করুন।
মন অনেক সময় শরীরের প্রতিনিধিত্ব করে। যেহেতু এক হৃদয় অন্য হৃদয়কে ছুঁতে পারে না, তাই শরীরী সান্নিধ্যের মাধ্যমে সে সংস্পর্শ খুঁজে বেড়ায়। তাই বিশেষ কোনো দিনে বা সুন্দর কোনো মুহূর্তে হাতে হাত, আলিঙ্গন কিংবা স্পর্শের নিবিড়তায় তাকে রাঙিয়ে দিন।
কেন প্রেমের মধ্যে থাকবেন
ভালোবাসার উপকারিতা অগণিত। ভালোবাসা শারীরিক ও মানসিকভাবে আপনাকে অনাবিল অনুভূতির রসদ জোগাতে সহায়তা করবে। ভালোবাসার ফলে সৃষ্ট রাসায়নিক ডোপামিন ও নরপাইনফ্রাইন আপনাকে উচ্ছল রাখে ও মনে সুখানুভূতির জন্ম দেয়।
দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্কে মস্তিষ্ক থেকে অক্সিটোসিন ও ভ্যাসোপ্রাসিন রিলিজ হয়, যার ফলে যুগলদের মধ্যকার বন্ধন মজবুত হয়। রোজকার বোঝাপড়া ও জীবনযাপনকে যা সহজ করে।
মানুষ যখন প্রেমের মধ্যে থাকে প্রকৃতিগতভাবে তখন অনেক শারীরিক উপকারিতা পায়। এটা শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এ অনুভূতি অনেক ক্ষেত্রে ব্যথা নিয়ামকের কাজ করে। প্রেম মানুষকে দীর্ঘজীবী করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
আপনি যখন প্রেমে পড়বেন, তখন আপনি সুখের চূড়ায় অবস্থান করবেন। নিজেকে মনে হবে প্রজাপতি।
প্রেম আপনাকে অনেক কিছু অর্জনে অপ্রতিরোধ্য করে তুলবে। কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে অনুপ্রেরণা জোগাবে। ভয়কে জয় করে সামনে এগিয়ে যেতে সাহস দেবে। কাজে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আপনার হার্ট ভালো রাখতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে ভালোবাসা।
এই অদৃশ্য বন্ধন একজন মানুষকে যদি এত উপকারিতা দেয়, ভালো রাখতে সহায়তা করে, তাহলে কেন আপনি প্রেমের মধ্যে থাকবেন না?
সূত্র: ইনসাইডার ও হাফিংটন পোস্ট