আকাশে মেঘ। চারপাশ কালো হয়ে আসছে আষাঢ়ে বাদল। বাইরে বেরোতেই ভিজে একশা জামাকাপড়। কিংবা ধরুন, কড়া রোদে বাইরে বেরোনো দায়। এমন সঘন বর্ষা কিংবা তাতানো রোদ্দুরে প্রথম কোন জিনিসটির কথা মনে পড়ে? হ্যাঁ, ছাতার কথাই বলছি।
প্রকৃতির বেয়াড়াপনা থেকে বাঁচতে ছাতা দারুণ এক রক্ষাকর্তা। তবে বস্তুটি নিজেও কম বেয়াড়া নয়। কেবল হারাই হারাই ভাব। অধিকাংশ মানুষই ছাতা হারান। কম বা বেশি। যেন ব্যাপারটা এমন—ছাতা কেনাই হয় হারিয়ে ফেলার জন্য। গোটা জীবনে একবারের জন্যও ছাতা হারাননি, এমন মানুষ বোধ হয় পাওয়াই যাবে না।
সে যা–ই হোক, এমন একটি নিখোঁজস্বভাব অতি দরকারি বস্তুর প্রথম আবিষ্কার করেছিল কারা? প্রাচীন মিসর, চীন, গ্রিস নাকি ভারত? এ নিয়ে বিস্তর বিতর্ক আছে। তবে মিসর, চীন ও গ্রিসের প্রাচীন চিত্রকর্মে ছাতার নিদর্শন দেখা যায়। আধুনিক ছাতার হদিস পাওয়া যায় ইউরোপে, সপ্তদশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে। ১৭৮৬ খ্রিষ্টাব্দে ইংল্যান্ডে প্রথম ছাতার পেটেন্ট নেওয়া হয়।
আজকের আলাপ অবশ্য পুরোপুরি ছাতার ইতিহাস বা ছাতা হারানো নিয়ে নয়। নতুন ছাতা কেনার সময় এবং ব্যবহারের আগে বা পরে সেটা যে মোড়কে ভাঁজ করা থাকে, আজকের প্রসঙ্গ সেই মোড়ক বা কভার। সন্দেহ নেই, ছাতার সব উপকরণের মধ্যে এটিই সবচেয়ে অবহেলিত। অধিকাংশ সময় কেনার পরপরই অনাদরে-অবজ্ঞায় এটি ফেলে দেওয়া হয়। অথচ এর গুরুত্বও কিন্তু কম নয়। এই যে এত এত ছাতা হারায়, মোড়ক না থাকাও কিন্তু তার একটা কারণ। ভেজা ছাতা রাখব কোথায়—এই ভেবে যেখানে-সেখানে রাখার ফলেই কিন্তু ছাতা হারায়। মোড়কটা সঙ্গে থাকলে ভেজা ছাতা ভাঁজ করে ব্যাগে ভরে রাখতে অসুবিধা হয় না। হারানোর আশঙ্কাও থাকে না, তা ছাড়া কভার ব্যবহার করলে ময়লা থেকেও ছাতা সুরক্ষিত থাকে। বহুদিন ব্যবহারেও থাকে ঝকঝকে নতুন।
আজ ৬ জুলাই, ছাতার মোড়ক দিবস। কবে কীভাবে এই দিবসের চল হয়েছে, তা অবশ্য নিশ্চিত করে জানা যায় না। তবে এই দিবসের কথা উঠলেই ‘ন্যান্সি ৩. হফম্যান’ নামে আমেরিকান সংগীতশিল্পী ও অভিনেত্রীর ছাতার কভারের জাদুঘরের কথা উঠে আসে। ১৯৯৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পোর্টল্যান্ডে শুধু ছাতার কভার নিয়ে একটি জাদুঘর গড়ে তোলেন তিনি। সবচেয়ে বেশি ছাতার কভার সংগ্রহ করে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম তুলেছে এই জাদুঘর।
ডেজ অব দ্য ইয়ার অবলম্বনে