ছেলে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন আর গর্বে ভাসছেন মা বিশ্বকাপ দাবার ফাইনালে নরওয়ের ম্যাগনাস কার্লসেনের কাছে হেরে গেছেন ভারতের মহেশবাবু প্রজ্ঞানন্দ। আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত হাড্ডাহাড্ডি ফাইনালের পর টাইব্রেকারে গড়ায় ম্যাচ। আজ টাইব্রেকারের খেলায় প্রজ্ঞানন্দ হয়েছেন রানারআপ। তবে তার আগেই তারকা বনে গেছেন ভারতের ১৮ বছরের এই তরুণ। দাবার এই আসরে প্রজ্ঞানন্দের পাশাপাশি আরেক ভারতীয় নারী জিতে নিয়েছেন নেটিজেনদের হৃদয়, তিনি প্রজ্ঞানন্দের মা আর নাগালক্ষ্মী। কয়েক দিন ধরেই অন্তর্জালে ঘুরে বেড়াচ্ছে নাগালক্ষ্মীর বেশ কিছু ছবি। ছেলে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন আর অদূরে গর্ব ভরা মুখে দাঁড়িয়ে আছেন মা। এই ছবি ছাড়া দাবার বিভিন্ন পর্বেও ছেলের মঞ্চ আলো করা মুহূর্তগুলো নীরবে দূরে দাঁড়িয়ে দেখছেন মা। সরল চাহনির সেসব ছবি কয়েক দিন ধরে ফেসবুক, টুইটার ও ইনস্টাগ্রামে ঘুরছে। চলুন ছবিতে ছবিতে জেনে নেওয়া যাক মা–ছেলের বেশ কিছু তথ্য।
ভারতের চেন্নাইয়ের ছেলে প্রজ্ঞানন্দের দাবা খেলায় আসা অনেকটা হুট করে। প্রজ্ঞানন্দের বাবা কে রমেশবাবু হঠাৎ খেয়াল করেন, তাঁর মেয়ের খুব বেশি টিভি দেখার নেশা। টিভির নেশা কাটাতে মেয়েকে স্থানীয় এক দাবা একাডেমিতে ভর্তি করিয়ে দেন বাবা। বোনের পিছু পিছু ছোট ভাইও আসা–যাওয়া শুরু করে। এভাবেই দাবা খেলার প্রতি ঝোঁক তৈরি হয় প্রজ্ঞানন্দেরমাত্র ১০ বছর ১০ মাস ১৯ দিন বয়সেই দাবায় ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার (আইএম) হয়ে রেকর্ড গড়েছিলেন প্রজ্ঞানন্দ। দাবার ইতিহাসে প্রজ্ঞাই সবচেয়ে কম বয়সী আইএমবিদেশ–বিভুঁইয়ে ভক্তদের অটোগ্রাফ দিচ্ছেন ছেলে। মা হিসেবে এসব মুহূর্ত কতটা গর্বিত করে, সেটা নাগালক্ষ্মীই হয়তো ভালো বলতে পারবেন। ফিদে বিশ্বকাপের মঞ্চে ১৫তম রাউন্ড শেষে তোলা ছবিআজারবাইজানে ছেলের প্রায় সর্বক্ষণের সঙ্গী ছিলেন মা নাগালক্ষ্মী। ছেলেকে পানির বোতল এগিয়ে দেওয়া, গল্প করে হাসিখুশি রাখার কাজগুলো মা করেন দারুণ ভালোবেসেছেলে দাবার বোর্ডে গভীর মনোযোগ দিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করে উঠে গেছেন সেমিফাইনালে। বিশ্বনাথন আনন্দের পর এই প্রথম কোনো ভারতীয় দাবাড়ুর এমন সাফল্য। দর্শকসারিতে বসা মায়ের চোখে কি তখন আনন্দাশ্রু?আসরে মায়ের উপস্থিতি বিষয়ে প্রজ্ঞানন্দ বলেন, ‘এটা খুবই আনন্দের যে বিদেশের মাটিতেও মা আমার সঙ্গে। মা পাশে থাকলে আমিও ভারমুক্ত থাকি। নিজে খারাপ করলেও সমর্থন দিয়ে পিঠ চাপড়ে দেন মা।’