স্মার্ট হতে চান? আজই বাদ দিন এই ৮ বদভ্যাস

স্মার্টনেস শব্দটা শুনলেই আমরা নড়েচড়ে বসি। কখনো শ্রদ্ধায়, কখনো কৌতূহলে। আবার কখনোসখনো একটু ঈর্ষাও যে হয় না, তা-ইবা অস্বীকার করি কী করে! স্মার্ট হওয়াকে অনেকেই মনে করে খুব কঠিন কিছু। আবার কেউ মনে করে, খুব বুদ্ধিমান বা মেধাবী না হলে বোধ হয় স্মার্ট হওয়াই যাবে না। অথচ আমাদের অনেক ছোট ছোট কাজ, অভ্যাস আর চিন্তার মধ্যেই যে স্মার্টনেস লুকিয়ে থাকে, সেটাই-বা আমরা কয়জন জানি? স্মার্ট হতে হলে কোনো কোনো কাজ আমাদের করা উচিত হবে না। এই কাজগুলোর কোনোটা যদি আমার-আপনার অভ্যাসে থেকে যায়, তবে স্মার্টনেসের পথের এই বাধাগুলো দূর করে ফেলার মোক্ষম সময় কিন্তু এখনই। ‘রেড ফ্ল্যাগ’ আট অভ্যাসগুলো দেখে নিন।

আত্মতুষ্টিতে ভোগা

বিভিন্ন গবেষণা ও প্রতিবেদন জানাচ্ছে, অনলাইনের দুনিয়ায় বড় হওয়া ‘জেন-জি’র একটা বড় অসুবিধা হলো ‘অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস’। ‘আপনাকে বড় বলে বড় সেই নয়’ লাইনটা আমরা পড়ে ফেলি সেই ছোটবেলাতেই। আর এটাই ‘স্মার্টনেস’ অর্জনের প্রথম ধাপ। নিজেকে কখনোই খুব বেশি মেধাবী মনে করা যাবে না। বা নিজের দক্ষতা নিয়ে আত্মতুষ্টিতে ভোগা যাবে না। স্মার্ট লোকজন আত্মবিশ্বাস আর আত্মতুষ্টিকে কখনোই গুলিয়ে ফেলেন না। বরং তাঁরা সব সময়ই তাঁদের কমতি নিয়ে সচেষ্ট থাকেন। নতুন নতুন জিনিস শেখার মধ্যে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন। আরও ভালো কিছুর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন।

তাড়াহুড়ো

আমাদের ছোটবেলার আরেকটা শিক্ষা ‘স্লো অ্যান্ড স্টেডি উইনস দ্য রেস’। স্মার্ট মানুষের মধ্যে আপনি তাড়াহুড়ো জিনিসটা পাবেন না। বরং তারা অনেক সময় এবং ধৈর্য নিয়ে যেকোনো কাজ শেষ করতে পছন্দ করেন। ফলাফল? সময় বেশি লাগলেও কাজ হয় মানের দিক থেকে সেরা। লম্বা সময় টিকে থাকতে হলে টেকসই, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিন, ধীরে ধীরে এগোন।

স্মার্ট হওয়া কঠিন কিছু নয়

জেতার জন্য তর্ক করা

গড়পড়তা লোকজন যখন জেতার জন্য এবং নিজেকে বড় দেখানোর জন্য তর্ক করেন, স্মার্ট লোকজন তখন তর্ক করেন নিজের ভুলত্রুটি খুঁজে বের করার উদ্দেশ্যে। তর্কে জিততে পারা আনন্দের, সন্দেহ নেই। কিন্তু স্মার্ট লোকজন নিজেদের আরও উন্নত করার স্বার্থেই এই আনন্দ বিসর্জন দিতে দুবার ভাবেন না। কিছু বিষয় সময়ের হাতে ছেড়ে দেন। সময়ই জবাব দিয়ে দেয়।

নতুন সমস্যা, পুরোনো সমাধান

ক্যারিয়ার, সম্পর্ক বা যেকোনো ক্ষেত্রেই সমস্যা এলে লেগে থাকা, হাল না ছাড়া খুব ভালো গুণ, সন্দেহ নেই। কিন্তু কখনো কখনো শুধু চেষ্টা করে যাওয়াই কোনো সমস্যার সমাধান দিতে পারে না। বরং আপনি কোন পথে চেষ্টা করছেন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায়। স্মার্ট লোকজন কখনোই পুরোনো সমাধান ধরে বসে থাকেন না, বরং যে সমস্যা যত পুরোনোই হোক, সমাধানের নতুন নতুন পথ বের করতে তাঁরা ক্লান্ত হন না।

অনলাইনের দুনিয়ায় বড় হওয়া ‘জেন-জি’র একটা বড় অসুবিধা হলো ‘অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস’

চিন্তাভাবনা ছাড়াই কাজ করা


না, স্মার্ট লোকজন কোনো কিছু করার আগেই সবকিছু ঠিক করে নিয়ে তারপর সেই কাজ করতে বসেন না। তবে তাঁরা ফলাফল, লাভক্ষতি বা ঝুঁকি বিচার না করে সাধারণত কোনো কাজ করেন না। তার মানে এই না যে তাঁরা কখনোই হঠকারিতা বা সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন না। তবে তাঁরা কাজের ক্ষেত্রে হঠকারিতাকে কোনো ধরনের প্রশ্রয় দেন না।

তাৎক্ষণিক প্রশংসা এবং সস্তা মোটিভেশন

আমাদের বেশির ভাগ অর্থপূর্ণ কাজকে নিষ্ফল করে ফেলার জন্য এই দুটি জিনিসই যথেষ্ট। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আর শো-অফের এই দুনিয়ায় স্মার্ট লোকজন এসব সস্তা প্রশংসা থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখেন। তাঁরা কাজের সঙ্গে চমৎকার একটা বোঝাপড়া এবং সন্তুষ্টির সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ফলে দিন শেষে তাঁর কাজই তাঁর হয়ে কথা বলে।

অন্যের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হওয়া

কারও কাছ থেকে সহযোগিতা চাওয়া আর কারও ওপর নির্ভরশীল হওয়ার মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য আছে। স্মার্ট লোকজন এই পার্থক্যটা মাথায় রাখেন। হ্যাঁ, তাঁদেরও দুর্বলতা থাকে, কমতি থাকে। কিন্তু এই দুর্বলতার ভার তাঁরা অন্যের ওপর চাপিয়ে দেন না। বরং তাঁরা নিজেদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করার পরেই কেবল মানুষের সহযোগিতা চান, তার আগে নয়।

ভুলকে প্রশ্রয় দেওয়া


ভুলকে প্রশ্রয় দেওয়ার একমাত্র অর্থ হলো, সেই ভুলটাকে আরও বড় হয়ে আপনার জীবনে ফিরে আসার সম্ভাবনা তৈরি করে দেওয়া। গড়পড়তা লোকজন নিজের ভুলের বিষয়টা বেমালুম চেপে যান। আরেকজনের ঘাড়ে দোষ দিয়ে দায়িত্ব শেষ করেন। আর একজন স্মার্ট মানুষ তখন গভীরভাবে নিজের ভুল নিয়ে চিন্তাভাবনা করেন। শিক্ষা নেন এবং সাবধানতার সঙ্গে পরবর্তী পদক্ষেপ নেন।


সোর্স: দ্য বিজনেস ইনসাইডার, ফোর্বস