ঘটনাটি ভারতের মুম্বাইয়ের। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ১৩ বছর বয়সী একটা মেয়েকে। আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব তাঁকে ঘিরে আছে। বেলুনসহ নানা কিছু দিয়ে ঘর সাজানো, উৎসবমুখর পরিবেশ। মেয়েটি কেক কাটল। কেকের ওপরে লেখা, ‘হ্যাপি পিরিয়ড, রাগিণী’। আপনার যদি একটা ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থাকে, আর আপনি যদি ‘অফিশিয়াল হিউম্যানস অব মুম্বাই’ অ্যাকাউন্টটির অনুসারী হয়ে থাকেন, তবে ভিডিওটি এতক্ষণে আপনার চোখে পড়েছে। এখানে একজন মা ট্যাবু ভেঙে তাঁর কন্যার প্রথম পিরিয়ড উদ্যাপন করছেন। পোস্টটি লেখা হয়েছে মায়ের বয়ানে। পোস্টটি ১ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ পছন্দ করেছেন। আর মন্তব্য করে সমাদর করেছেন ৮ হাজারেরও বেশি মানুষ। পোস্টে মায়ের বক্তব্য মায়ের বয়ানেই তুলে ধরা হলো:
‘এই বোকা ছেলে, তুমি তোমার মাকে ছুঁয়ো না কটা দিন।'
‘আমি এ রকম সব কথা শুনে ও দেখে বড় হয়েছি। প্রতি মাসের কয়েকটা দিন আমার মা, খালা, বড় বোনেরা ঘরে ঢুকতে পারতেন না। তাঁরা নাকি অপবিত্র। বাড়ির পেছনে বাঁশের একটা ঘর ছিল, সেখানে থাকতেন। তারও আগে থাকতেন গোয়ালঘরের এক কোণে। সবচেয়ে জঘন্য ব্যাপার হলো, আমরা সে সময় তাঁদের স্পর্শ করতে পারতাম না। স্পর্শ করলেই স্নান করে আসতে হতো। আমি কিছুই বুঝতাম না। অবশেষে যখন আমি দশম শ্রেণির ছাত্রী, তখন নিজেরই পিরিয়ড হলো। আর আমি প্রতিজ্ঞা করলাম একদিন আমি এই প্রথা ভাঙব।
একদিন আমার বিয়ে হলো, কন্যাসন্তান হলো। রাগিণীর বয়স হলো ১৩। ওর প্রথম পিরিয়ড হলো। আর সেই উপলক্ষে আমি আমার সাধ্যমতো আয়োজন করে একটা পার্টি দিলাম। রাগিণীর পিরিয়ড উদ্যাপন করতে। যাতে এই নিয়ে ওর ভেতর কোনো শঙ্কা, ভয়, দ্বিধা না থাকে।
‘রাগিণী বেশ কিছু উপহারও পেয়েছে। এটি আসলেই একটা উদ্যাপনের বিষয়। জন্মদিনের মতোই।
আমি শুরু করলাম। আমি আশা করি, অন্য মায়েরাও এভাবেই মেয়ের প্রথম পিরিয়ড উদ্যাপন করে পার্টি দেবে। আসুন, আমরা যেসব ট্যাবু আর কষ্টের ভেতর দিয়ে গিয়েছি, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে যেন সেসবের ভেতর দিয়ে যেতে না হয়, সেই লক্ষ্যে আমরা এক হই।’