বই পড়লে কমে মনের চাপ
বই পড়লে কমে মনের চাপ

জীবনে চাপ এলে ভালো থাকবেন যেভাবে

জীবনে চাপ আসবেই, তখন মন হয়ে উঠবে অশান্ত। কিছু অভ্যাস ও যত্ন এ সময় মানসিক ও শারীরিকভাবে নিজেকে রাখবে শান্ত। নিজের ভালো থাকার কিছু উপায় নিজেকেই বের করে নিতে হবে। কারণ, নিজের যত্ন নিজের কাছে।

ভালো থাকবেন; বিদায়বেলায় কিংবা আলাপ শেষে পরিচিত–অপরিচিত মানুষদের প্রায়ই কথাটি বলে থাকি আমরা। কিন্তু মুখের কথায়ই কি সব সময় ভালো থাকা যায়? অনেক সময় জীবনের নানা চাপ আমাদের ভালো থাকার অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। ঠিক বুঝে উঠতে পারি না, তখন কী করা উচিত বা কীভাবে এ সময় নিজের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। এর প্রভাব পড়ে আমাদের শরীর ও মনে। তবে নিজের একটু খেয়াল, একটু যত্নেই কিন্তু এসব সময়ে ভালো থাকা যায়।

জীবনযাপনে অনেকেই আমরা স্টাইলিশ বা ফ্যাশনেবল উপায়গুলো বেছে নিচ্ছি। সাজপোশাকেও হয়তো অনেকেই আধুনিক, কিন্তু নিজের যত্ন নেওয়ার বেলায় যেন পিছিয়ে। নিজের যত্ন নেওয়াটা কিন্তু জীবনযাপনের আধুনিক বহিঃপ্রকাশ।

যোগাসনে শান্ত হয় মন

‘যত্ন’ শব্দটি একেকজনের কাছে একেক রকম। কেউ হয়তো মানসিকভাবে সুস্থ থাকাটাকেই যত্ন হিসেবে মানেন। মনের যত্নই তাঁর কাছে আসল। প্রতিদিন ব্যায়াম করা কারও কারও কাছে প্রাধান্য পায়। কেউ হয়তো যত্ন বলতে প্রাধান্য দেন সৌন্দর্যচর্চাকে। পারিপার্শ্বিক অবস্থা বদলে গেলে বা জীবনযাপনে কোনো ধরনের চাপ বোধ করলে যত্নের নিয়মিত ধরনেও চলে আসতে পারে পরিবর্তন। মন ভালো রাখতে তখন হয়তো অনেকেই বেছে নেন নতুন কিছু।

নিজের প্রতি এই যত্ন নেওয়া শুরু হোক সকাল থেকেই। এক কাপ চায়ের উষ্ণতা দিয়ে শুরু হোক দিন। অনেকেই ইদানীং বেছে নিচ্ছেন গ্রিন টি। এটা ঠিক যে মন যত অস্থিরই থাকুক না কেন, কিছুক্ষণের জন্য হলেও মনে স্বস্তি এনে দিতে পারে এক কাপ চা। এমনটাই মনে করেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নীলিমা জাহান। সারা দিনের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে এই ৫-১০ মিনিট নিজের মতো করে কাটাতে পছন্দ করেন তিনি।

চায়ের উষ্ণতায় মন ভালো হয়ে যায় অনেকের।

অস্থির সময়ে মনকে শান্ত রাখতে অনেকেই বেছে নেন বই। সমাধান যখন আওতার বাইরে চলে যায়, তখন মেনে নিতে হয় অনেক কিছু। মনকে শান্ত রাখাটাই যেন তখন যত্ন। উপস্থাপক মৌসুমী মৌ বলেন, ‘এমন সময়ে আমি বইয়ে ডুবে যাই। পুরোনো পড়া বইগুলো নতুন করে পড়ি। নিজেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে দূরে রাখি।’ একই পন্থা বেছে নেন ডিজাইনার আফসানা ফেরদৌসীও। এমনও হয়েছে যে ৫৬০ পাতার একটা বই তিনি এক দিনেই পড়ে শেষ করে ফেলেছেন। সময় কেটে গেছে কোন দিক দিয়ে, বুঝতেই পারেননি। সবচেয়ে বড় কথা, বই পড়ার কারণে মন যেন অনেকটাই নির্ভার হয়ে যায়।

স্বাস্থ্য ভালো থাকবে, এমন খাবার থাকুক টেবিলে

মানসিকভাবে সুস্থ থাকার পাশাপাশি শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার ওপরও জোর দেন আফসানা ফেরদৌসী। নিজের জন্য সঠিক খাবার বেছে নেওয়াটাও যত্নেরই আরেকটি জরুরি ধাপ। তিনি এখন পুরোপুরি নিরামিষ খাবার খান। নিজের রান্না নিজেই করেন। নিজের মনকে নিজেই বলেন, ‘আমি ভালো খাচ্ছি।’

সময়ের অভাবে পছন্দের যেসব কাজ সাধারণত করা হয় না, মানসিকভাবে চাপ বোধ করলে সেগুলো বেশি করে করেন উমা রহমান। এখনো তাঁর শিক্ষাজীবন শেষ হয়নি। এ রকম সময়ে বাড়ি গোছানো, নোটবুকে আঁকাআঁকি, গান শোনা বেড়ে যায়। কাছের বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলেন প্রচুর। এসবের মাধ্যমেই যেন নিজের যত্ন নেন উমা।

অনেক সময় ঘর বাড়ি গোছালেও দূর হয় মনের চাপ

অভিনেত্রী ও মডেল জান্নাতুল পিয়া গুরুত্ব দেন ধারাবাহিকতার ওপর। ব্যায়াম ও সঠিক খাবারের মাধ্যমে তিনি সুস্থ বোধ করেন। এটুকু প্রতিদিন না করলে যেন নিজের যত্ন নেওয়াটাও পূর্ণতা পায় না। পিয়া পছন্দ করেন নিয়মানুবর্তিতা। ভেতর থেকে সুস্থ বোধ করলে চেহারায়ও সেটা ফুটে ওঠে বলে বিশ্বাস করেন তিনি।

মন খারাপ থাকলে নোটবুকে চলুক আঁকাআঁকি

জীবনযাপনে প্রতিদিনই আমরা কমবেশি চাপের ভেতর দিয়ে যাই। নিজের সঙ্গে সময় কাটানোর মাধ্যমে এই চাপ অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব। প্রতিদিনই এমন কিছুর সঙ্গে যুক্ত হওয়া উচিত, যেটা মানসিকভাবে আমাদের মন ভালো রাখবে।