আন্তর্জাতিক ফেডারেশন অব মেডিকেল স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের (আইএফএমএসএ) আঞ্চলিক পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন শরীফ মোহাম্মাদ সাদাত। তিনি বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী। বাংলাদেশে সাদাতই প্রথম, যিনি আন্তর্জাতিক এ সংগঠনটির আঞ্চলিক পদের দায়িত্ব পেলেন।
আইএফএমএসএ মূলত মেডিকেল শিক্ষার্থীদের একটি বৈশ্বিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এটি বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন (১৯৫১ সালে প্রতিষ্ঠিত) ও বৃহত্তম শিক্ষার্থী-পরিচালিত সংগঠন। ১২৩টি দেশের ১৩৩টি অঙ্গসংগঠনের প্রায় ১৫ লাখ মেডিকেলপড়ুয়া শিক্ষার্থী বর্তমানে আইএফএমএসএর সঙ্গে যুক্ত আছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ (ডব্লিউএইচও) বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতায় সংগঠনটি কাজ করে।
হবু চিকিৎসকদের এ সংস্থাটির বাংলাদেশ অধ্যায়ের নাম ‘বাংলাদেশ মেডিকেল স্টুডেন্টস সোসাইটি’। ২০১৯ সালে এর স্থানীয় কমিটিতে যোগ দেন সাদাত। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পাঁচ বছর কাজ করার পর গত মাসে তিনি আইএফএমএসএর এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের দায়িত্ব পান। তার আগে অবশ্য এই পদপ্রার্থীদের সঙ্গে তাকে নির্বাচনী বিতর্কে অংশ নিতে হয়েছিল। পরে সদস্য দেশগুলোর ভোটারদের প্রত্যক্ষ ভোটে তিনি নির্বাচিত হন। অস্ট্রেলিয়া, চীন, জাপান, ভারতসহ ১৮টি দেশের শিক্ষার্থীরা আগামী ১ বছর তাঁর নেতৃত্বে কাজ করবেন।
সংগঠনটির সঙ্গে যুক্ত হওয়া প্রসঙ্গে সাদাত বলেন, ‘গত কয়েক বছর তো অনেক প্রোগ্রাম করলাম। জানতে ও জানাতে এই সংস্থা অনেক সাহায্য করে। বিশেষ করে বিশ্বের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য, আধুনিক চিকিৎসা বিষয়ে জানা আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন দেশের মানুষের সংস্পর্শে থেকে অনেক জ্ঞান অর্জনের সুযোগ হয়েছে।’
আইএফএমএসএ ছয়টি কমিটির মাধ্যমে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ করে। প্রত্যেক সদস্য দেশের স্থানীয় কমিটিগুলো আন্তর্জাতিক কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী পরিচালিত হয়। মূলত স্বাস্থ্য সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং মেডিকেল শিক্ষার্থীদের আগ্রহের বিষয়গুলোই বেশি প্রাধান্য পায়। স্থায়ী কমিটির কাজের বিষয়—গবেষণা বিনিময়, পেশাগত বিনিময়, চিকিৎসা শিক্ষা, মানবাধিকার ও শান্তি, জনস্বাস্থ্য, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার।
আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে এ শিক্ষার্থী বলেন, ‘অনলাইনে বিভিন্ন দেশের কমিটিগুলোর সঙ্গে কাজ করব। দিকনির্দেশনা দেব। হয়তো স্বাস্থ্য নিয়ে অফলাইনে কাজ করাও হতে পারে। কিছুদিন আগে আমরা ফিলিপাইনে একটা সভায় যোগ দিয়েছিলাম। সেখানে স্বাস্থ্য খাত নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে মতামত দেওয়ার সুযোগ হয়েছে। আমরা মূলত তরুণদের কণ্ঠস্বর সব জায়গায় পৌঁছানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি। আর দেশে আমরা নিয়মিত বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করি। এর মধ্যে হেলথ ক্যাম্প, স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ক সেমিনার, কর্মশালা, বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা, নানা কিছু আছে।’
আন্তর্জাতিক এ সংস্থাটির সদস্যরা গবেষণায় সহযোগিতা, উচ্চশিক্ষায় বৃত্তিসহ নানা সুবিধা পান। সুযোগ হয় দেশের বাইরে গিয়ে কাজ করা ও সেমিনারে অংশ নেওয়ারও।
বর্তমানে বাংলাদেশের ৮০টি মেডিকেল কলেজের প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী সক্রিয়ভাবে আইএফএমএসএর বাংলাদেশ অধ্যায়ে কাজ করছেন বলে জানান সাদাত।