সেই তরুণের সঙ্গে দেখা করলেন তথ্যমন্ত্রী, দিলেন উপহার

প্রথম আলোয় খবর প্রকাশিত হওয়ার পর ওসমান গনিকে নিজ বাসায় আমন্ত্রণ জানান তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ
প্রথম আলোয় খবর প্রকাশিত হওয়ার পর ওসমান গনিকে নিজ বাসায় আমন্ত্রণ জানান তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ

‘ভাই, মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে কি ফরমাল পোশাক পরে আসতে হবে?’ মুঠোফোনের ওপাশ থেকে জানতে চাইলেন ওসমান গনি।

আপনি যে পোশাকে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, সেটাই পরতে পারেন—বলার পর ওসমান হাসলেন। বললেন, ‘এত বড় মানুষের সঙ্গে তো আগে কখনো দেখা করিনি, তাই একটু নার্ভাস লাগছে।’

ওসমান গনিকে নিয়ে ‘প্রথম আলো’র রোববারের ক্রোড়পত্র ‘স্বপ্ন নিয়ে’তে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয় ২৫ ডিসেম্বর। দরিদ্র পরিবারে বড় হয়েছেন তিনি। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সমাবর্তনে অংশ নেবেন বলে টাকা জমিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই টাকায় তিনি বাবার ঢাকা দেখার স্বপ্ন পূরণ করেন। কারণ, ওসমানের বাবা বুলু আকন্দ জীবনে কখনো ঢাকায় আসেননি।

ওসমান গনির হাতে আর্থিক অনুদান তুলে দেন হাছান মাহমুদ। এ ছাড়া ওসমান ও তাঁর বাবার জন্য কিছু শুভেচ্ছা উপহারও দিয়েছেন তিনি

বাবা–ছেলের ঢাকা ভ্রমণের গল্প–ছবি প্রথম আলোর অনেক পাঠকের মতো তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদকেও আপ্লুত করেছে। প্রথম আলোর বগুড়া প্রতিনিধির মাধ্যমে তথ্যমন্ত্রীর সহকারি একান্ত সচিব ইমরান হোসাইন শরীফ যোগাযোগ করেন ওসমান গনির সঙ্গে। আজ ২৮ ডিসেম্বর বিকেলে ওসমানকে নিজের বাসভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মন্ত্রী।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘পত্রিকায় এ ধরনের খবর চোখে পড়লে অনেক সময়ই সাহায্য করতে চেষ্টা করি। টাকা পাঠিয়ে দিই। কে পাঠাল, কেন পাঠাল, জানতেও দিই না। কিন্তু এই ছেলেটার খবর পড়ে মনে হলো, তার সঙ্গে দেখা করা দরকার। জীবনে অনুপ্রেরণারও প্রয়োজন আছে।’

সময় নিয়ে ওসমানের সঙ্গে কথা বলেছেন তথ্যমন্ত্রী

ওসমান গনির সঙ্গে নিজ বাসভবনে বসে প্রায় আধঘণ্টা কথা বলেন হাছান মাহমুদ। এ সময় তিনি ওসমানের পরিবারের খোঁজখবর নেন। তিনি বলেন, ‘ছাত্রজীবনে আমিও অনেক কষ্ট করেছি। বিদেশে যখন মাস্টার্স করতে গিয়েছিলাম, তখন রেস্তোরাঁয় বেয়ারার কাজ করেছি, থালাবাসন ধুয়েছি। জীবনে বড় হতে হলে কষ্ট করতে হয়।’

ওসমান গনির হাতে আর্থিক অনুদান তুলে দেন হাছান মাহমুদ। এ ছাড়া ওসমান ও তাঁর বাবার জন্য কিছু শুভেচ্ছা উপহারও দিয়েছেন তিনি। হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যে সাংবাদিকেরা বাংলাদেশের নানা প্রান্ত থেকে এ ধরনের খবর তুলে আনেন, তাঁদেরও ধন্যবাদ প্রাপ্য।’

ওসমান গনি বলেন, ‘প্রথম আলোতে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর দারুণ সাড়া পেয়েছি। আমি সব সময় সবার সঙ্গে হেসে কথা বলতে চেষ্টা করি। কষ্টটা বুঝতে দিই না। তাই আমার পারিবারিক অবস্থা কেমন, সেটা আমার রুমমেটও কখনো জানতে পারেনি। প্রথম আলোর খবর পড়ে সবাই জেনেছে। অনেক কষ্ট করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখা শেষ করেছি। এখন বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষা দিচ্ছি।’

ওসমান গনির চাকরির ব্যাপারেও সহায়তা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী।