‘দুর্ঘটনা থেকে বাঁচতে ভালো মানের ইলেকট্রিক্যাল পণ্য ব্যবহার জরুরি’

বাংলাদেশের ‘ইলেকট্রিক্যাল অ্যাকসেসরিজ ও লাইটিং প্রোডাক্ট’ নিয়ে সম্প্রতি একটি গবেষণা চালায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক ‘মার্কেটিং ওয়াচ বাংলাদেশ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান, যেখানে দেখা গেছে, এসব পণ্যে বর্তমানে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে আছে। এরমধ্যে শীর্ষে আছে সুপার ষ্টার গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটির নানা পণ্য নিয়ে কথা বলেছেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুন অর রশিদ

সুপার ষ্টার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুন অর রশিদ
প্রশ্ন

বাংলাদেশে বৈদ্যুতিক বাতির কী কী
ধরন আছে?

ব্যবহারের ওপর ভিত্তি করে লাইটের বিভিন্ন রকমফের থাকে; যেমন বাসাবাড়ি লাইটিং, ইন্ডাস্ট্রিয়াল লাইটিং, সাজসজ্জার জন্য প্রফেশনাল লাইট ইত্যাদি। বাসায় ব্যবহৃত বাল্বের মধ্যে এসি/ডিসি বাল্ব, টিউবলাইট, ডিমলাইট ইত্যাদি। এর বাইরে অন্যান্য ক্যাটাগরির মধ্যে আছে প্যানেল, স্পট,
ডাউন প্যানেল, ফ্লাডলাইট, স্ট্রিটলাইট,
হাই বে ইত্যাদি।

প্রশ্ন

এলইডি বাল্ব কি আসলেই বিদ্যুৎ-সাশ্রয়ী?

এলইডি বাল্বে পুরোনো টাংস্টেন প্রযুক্তির চেয়ে ৯০ শতাংশ এবং সিএফএল প্রযুক্তির চেয়ে প্রায় ৩০ শতাংশ বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়ে থাকে। এ জন্য সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এলইডি প্রযুক্তির লাইট ক্রেতার পছন্দের তালিকায় শীর্ষে চলে এসেছে। সিএফএল প্রযুক্তির লাইট আমরা আর বাজারজাত করছি না।

প্রশ্ন

সুপার ষ্টারের কত ধরনের বাল্ব আছে?

বাংলাদেশে লাইট ক্যাটাগরিতে সবচেয়ে বেশি বৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করছে সুপার ষ্টার গ্রুপ। বর্তমানে আমাদের গ্রুপে ৪টি ব্র্যান্ডের অধীনে প্রায় ৩০টি ক্যাটাগরির ৬৫০-এর বেশি এসকিইউ (স্টক কিপিং ইউনিট) আছে। প্রিমিয়াম কোয়ালিটি থেকে শুরু করে ইকোনমি—সব ধরনের বাল্ব আমাদের আছে। সব শ্রেণির ক্রেতার কথা মাথায় রেখে আমরা বাল্ব সেক্টর সাজিয়েছি।

প্রশ্ন

সুপার ষ্টার গ্রুপ আর কী কী পণ্য তৈরি করে?

আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল জিএলএস বাল্ব (পুরোনো দিনের হলুদ বাল্ব) দিয়ে। যুগের চাহিদা অনুযায়ী সব সময়ই আমরা নিত্যনতুন পণ্য আনছি; যেমন জিএলএস বাল্বের পর কমপ্যাক্ট ফ্লুরোসেন্ট ল্যাম্প আনি, যেটাকে মানুষ এনার্জি বাল্ব হিসেবে চেনে। তারপর ফ্লুরোসেন্ট টিউবলাইট, সুইচ সকেট, ইলেকট্রিক্যাল ওয়্যারিং এক্সেসরিজ, এলইডি বাল্ব, সার্কিটব্রেকার, ফ্যান, কেব্‌ল মিটারসহ বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন পণ্য যুক্ত করছি। আর হ্যাঁ, সৌরবিদ্যুৎ–সংক্রান্ত পণ্য নিয়েও আমরা কাজ করছি।

প্রশ্ন

নিম্নমানের বাল্ব ব্যবহারে ঝুঁকি কী?

নিম্নমানের বাল্ব বিভিন্ন কারণেই মানুষের ক্ষতির কারণ হতে পারে। এই ক্ষতি যে শুধু শারীরিক, তা নয়; আর্থিক দিক থেকেও এটা লাভজনক নয়। এসব বাল্ব চোখের
জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর, দৃষ্টিশক্তির সমস্যা থেকে শুরু করে মাথাব্যথা হতে পারে। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর, কারণ সেখানে নিম্নমানের উপাদান ব্যবহার করা হয়। এসব বাল্ব টেকসই নয়, তাই আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায় না। এসব কারণে আমরা ক্রেতাদের কাছে আহ্বান জানাই, আপনারা ফ্রি প্রলোভন থেকে দূরে থাকুন। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুরক্ষার জন্য ভালো মানের লাইটিং পণ্য ব্যবহার করুন।

প্রশ্ন

সুইচ বা সকেট কেন মানসম্মত কেনা ভালো?

নিম্নমানের পণ্যের সব ক্ষতি বাদ দিয়ে শুধু একটি বিষয় নিয়েই বলি, সেটা হলো বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা এবং এর ফলে সৃষ্ট ক্ষতি। আপনারা নিশ্চয় জানেন, বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা থেকে কত জীবন চলে যাচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে সম্পদ। এসব দুর্ঘটনার প্রধান কারণ নিম্নমানের বৈদ্যুতিক পণ্য। সে কারণেই শুধু সুইচ বা সকেট নয়, সব ধরনের বৈদ্যুতিক পণ্যের ক্ষেত্রে কোয়ালিটি হওয়া উচিত প্রথম বিবেচ্য।