বাগানবিলাস বা কাগজ ফুল বর্তমানে অনেক জনপ্রিয় একটি ফুল। রাস্তাঘাটে তো বটেই, বাসার ছাদ, এমনকি অনেকের বারান্দায়ও এখন শোভা পায় এই গাছ।
অনেকেরই অভিযোগ থাকে যে নার্সারি থেকে সুন্দর ফুলশোভিত গাছ কিনে আনার পর ফুল ঝরে গেলে আর ফুলের দেখা মিলছে না। অনেকেই আবার পরিচিত কোনো বাগানির সুশোভিত গাছ থেকে এনে কাটিং বসিয়ে চারা করেন কিন্তু গাছে আর ফুল আসে না। তাই আজ কী কৌশলে গাছের যত্ন করলে মোটামুটি সারা বছর গাছটি ফুলে রঙিন হয়ে থাকবে, তা–ই জানাব। যেমনটা আমি নিজে করে থাকি।
প্রথমেই বাগানবিলাসগাছ লাগানোর জন্য বড় একটি টব বেছে নিতে হবে। এই গাছের যত্নে পানি দেওয়ার দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। কারণ, এই গাছ বেশি পানি সহ্য করতে পারে না। একবার পানি দেওয়ার পর পুরোপুরি মাটি শুকালে আবার পানি দিতে হবে। প্রয়োজনে দুই থেকে তিন দিন পরপর পানি দিন। ফাল্গুন মাসের শেষে গাছের গোড়ার মূল মাটি রেখে বাকি মাটি তুলে ফেলুন। নতুন করে সার–মাটি বানিয়ে সেটি গাছের মাটিতে দিন। এরপর গাছটি ছায়ায় রেখে দিতে হবে এক সপ্তাহ। এই সময় শেষে যেখানে দিনে অন্তত ছয় ঘণ্টা রোদ পায়, সেখানে গাছটি রাখতে হবে।
সেপ্টেম্বর–অক্টোবর মাসে আবার একই নিয়মে মাটি পরিবর্তন করে নিন। মাটি তৈরির পদ্ধতি—মাটি ৩০ শতাংশ, শুকনা গোবর ৩০ শতাংশ, কেঁচো সার বা জৈব সার ১০ শতাংশ, হাড়ের গুঁড়া ১০ শতাংশ, ছাই বা পটাস সার ৫ শতাংশ, মোটা বালু ১৫ শতাংশ, ২ চা–চামচ নিম–খইল নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নেবেন। ঝোপালো করতে এবং কাঙ্ক্ষিত শেপ পেতে নিয়মিত প্রুনিং (ডাল ছাঁটাই) করা জরুরি। যদি নতুন গাছের চারা করতে চান, তাহলে ৪৫ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে প্রুনিং করতে হবে। প্রতিবার ফুল ফোটা শেষ হলে ডালগুলো ছাঁটাই করে নাইট্রোজেন (খুবই সামান্য পরিমাণে ১০ ইঞ্চি টবের জন্য আধা চা–চামচ), ফসফেট (নাইট্রোজেনের দ্বিগুণ ) এবং জৈব সার দিতে পারেন।
বর্ষাকাল গাছের প্রুনিং করার ভালো সময়। মাসে অন্তত একবার গাছের মাটিতে তরল সার দিতে চেষ্টা করবেন। শর্ষের খইল বা সবজির খোসা পানিতে এক সপ্তাহ ভিজিয়ে রেখে পানিটা আলাদা করে আরেকটু পানি মিলিয়ে দিতে পারেন। এভাবে গাছটির পরিচর্যা করে দেখুন, সারা বছরই আপনার শখের বাগানবিলাসটি রঙিন হয়ে থাকবে ফুলে ফুলে।