রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে বছরজুড়েই একটা উৎসবের আমেজ লেগে থাকে। কখনো বসন্ত, কখনো নবান্ন, কখনো পয়লা বৈশাখ। তাই উত্তরের বাতাস যখন গায়ে হিম হিম অনুভূতি ছড়াতে শুরু করল, তখন কাউকে বলে দিতে হলো না, ‘শীত উৎসব’–এর সময় এসে গেছে।
২১ নভেম্বর আয়োজিত অনুষ্ঠানটির নামও ছিল ‘শীত উৎসব ১৪৩১ ’। পুরো চারুকলা অনুষদ সাজানোর জন্য থিম ঠিক হয়েছিল কাকতাড়ুয়া, রসের হাঁড়ি ও নকশিকাঁথা। এ ছাড়া ছিল বাংলার নানা ঐতিহ্য। চারুকলার শিক্ষার্থীদের নাচ, গান ও কবিতা আবৃত্তিতে জমজমাট ছিল পুরো আয়োজন।
উৎসবের অন্যতম আয়োজক, চারুকলার শিক্ষার্থী মো. জুনায়েদ ইসলাম বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলার সংস্কৃতিকে তুলে ধরাই ছিল উদ্দেশ্য। আর এর মাধ্যমে সিনিয়র, জুনিয়র, অ্যালামনাই, সবার সঙ্গে যোগাযোগের একটা সুযোগ হয়। একসঙ্গে হাসি, আড্ডা...সময়টা খুব উপভোগ করেছি।’
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি দর্শনার্থীদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল শীত উৎসবের স্টল। নানা স্টলে খাবার থেকে শুরু করে পোশাক, গয়না, মাটির জিনিসপত্র নিয়ে বসে ছিলেন শিক্ষার্থীরা। আলাদা করে নজর কাড়ে চারুকলা অনুষদের পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের স্টল ‘পাত্তুরুতুরু’, যেখানে তাঁরা বিভিন্ন পাহাড়ি ঐতিহ্যবাহী খাবার যেমন পাজন, ব্যাম্বো চিকেন, বিনি পিদে, ইত্যাদির সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন। শীতের পিঠার একটি স্টলেও ভিড় লেগে ছিল সারা বেলা।
শীত উৎসব দেখতে এসেছিলেন নুসরাত জাহান নামের এক দর্শনার্থী। বললেন, ‘তাদের চিত্র প্রদর্শনীটা আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে। প্রতিটি চিত্রকর্মই একদম নিখুঁত লেগেছে আমার কাছে, তা ছাড়া পুরো আয়োজনটাই খুব গোছানো, প্রাণবন্ত মনে হয়েছে।’
রাতের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন আশপাশের শত শত মানুষ।
শিক্ষার্থীদের আয়োজিত এই শীত উৎসব প্রসঙ্গে চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. বনি আদম বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা নিজেরাই আবৃত্তি করেছে, গান গেয়েছে, নেচেছে। তাঁদের সৃজনশীলতার চর্চার একটা সুযোগ হয়েছে। আবার এখান থেকেই কিন্তু তাঁদের নেতৃত্বের একটা ভিত্তি গড়ে উঠছে।’