সদ্য চাকরিতে ঢুকেছেন? বেতন পাওয়ার পর কী করছেন?

প্রথম চাকরি, প্রথম বেতন, প্রথমবারের মতো নিজের রোজগারে চলা। অনুভূতিটা একেবারেই আলাদা। বেতনের টাকা দিয়ে কী কী করা হবে, বেতন হাতে পাওয়ার আগে থেকেই তা নিয়ে শুরু হয়ে যায় জল্পনা-কল্পনা। নিজের জন্য, পরিবারের জন্য কত কিছুই তো করার ইচ্ছা থাকে। কিন্তু আনন্দের আতিশয্যে কিংবা আবেগের বশবর্তী হয়ে বেতনের সব টাকা চোখের নিমেষে খরচ করে ফেলা কিন্তু বুদ্ধিমানের কাজ নয়। খরচ করবেন অবশ্যই, তবে ভেবেচিন্তে।

পরিকল্পনামাফিক প্রয়োজন মিটিয়ে নিন

নিজের বাজেট নিজেই করে ফেলুন। বেতনের ৫০ শতাংশের মধ্যেই জীবনের প্রয়োজনগুলো যাতে মিটিয়ে ফেলতে পারেন, সেই চেষ্টা করুন। বাড়িভাড়া, ইউটিলিটি বিল, বাজার খরচ, যাতায়াত খরচ—এক মাসের সব খরচই সেরে নিতে হবে এর মধ্যে।

নিজের বাজেট নিজেই করে ফেলুন

ইচ্ছাপূরণের জন্যও রাখুন একটি অংশ

বেতনের ৩০ শতাংশ এমনভাবে কাজে লাগাতে পারেন, যাতে আপনার ‘ইচ্ছা’গুলো আংশিক হলেও পূরণ করা সম্ভব হয়। নিজের জন্য শৌখিন কিছু কেনা, পরিবার বা বন্ধুদের জন্য উপহার কেনা কিংবা তাঁদের নিয়ে বিশেষ খাওয়াদাওয়া—সবই সেরে ফেলতে হবে এই ৩০ শতাংশের মধ্যে। তবে এক মাসেই তো আর সব ‘ইচ্ছা’ পূরণ হবে না। ধাপে ধাপে পূরণ করুন এসব ইচ্ছা। ইচ্ছার অসীম এক তালিকা নিয়ে বসলে কিন্তু মুশকিল! বরং এক এক মাসে এক একজন প্রিয় মানুষকে উপহার দিয়ে চমকে দিতে পারেন।

ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি

বেতনের বাকি ২০ শতাংশ জমিয়ে রাখুন ভবিষ্যতের জন্য। কখন কোন বিপদে ওই টাকা কাজে লাগবে, আজ আপনি হয়তো তা কল্পনাও করতে পারছেন না। হয়তো এখন মাথার ওপর অভিভাবকেরা রয়েছেন, পারিবারিক আয় রয়েছে পর্যাপ্ত। টাকা জমানোকে আবশ্যক কিছু বলে মনেই হচ্ছে না। কিংবা হয়তো আপনি খরচের বোঝা মিটিয়ে টাকা জমানোর সুযোগ পাবেন না বলে মনে করছেন। পরিস্থিতি যেমনই হোক, এই ২০ শতাংশ টাকা রেখে দিতে চেষ্টা করুন। জীবন কখন কীভাবে রং বদলাবে, আগে থেকে আমরা অনুভব করতে পারি না।

বেতনের টাকা দিয়ে কী কী করা হবে, বেতন হাতে পাওয়ার আগে থেকেই তা নিয়ে শুরু হয়ে যায় জল্পনা-কল্পনা

স্বপ্নপূরণ ও বিনিয়োগ

যে টাকাটা আপনি জমাচ্ছেন, পরিবারের জন্য বড়সড় কিছু করতে চাইলেও কিন্তু তা কাজে লাগবে। জমানো টাকা থেকে মাঝেমধ্যে এমন কিছু করলে ভবিষ্যতেও টাকা জমানোর আগ্রহ বজায় রাখা সহজ। তা ছাড়া জমানো টাকার কিছু অংশ নিরাপদে বিনিয়োগ করার চেষ্টাও করতে পারেন।

ঋণ থাকলে মিটিয়ে নিন

চাকরিতে ঢোকার আগে যদি দায়ে পড়ে কোনো ঋণ করে থাকেন, অবশ্যই তা মিটিয়ে দিন এই বেলা। ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে উৎসব-উদ্‌যাপন করে আপনি স্বস্তিও পাবেন না। যদি ঋণটা ধাপে ধাপে মেটাতে হয়, তাহলে জীবনের প্রয়োজনের জন্য বরাদ্দ রাখা ৫০ শতাংশের ভেতর থেকেই প্রতি মাসে ঋণের অংশ মেটানোর কাজটা সেরে ফেলতে চেষ্টা করুন।

কর্মক্ষেত্রে কাজ করে প্রথম বেতন পাওয়ার অনুভূতিটাই আলাদা

নতুন ঋণে জড়াবেন না

চেষ্টা করবেন, যাতে নতুনভাবে কোনো ঋণ করতে না হয়। আয় বুঝে ব্যয় করুন। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করলেও সেটাকে অভ্যাস বানিয়ে ফেলবেন না। ভবিষ্যৎ প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে ক্রেডিট কার্ডে একটু বড়সড় সীমা নির্ধারণ করে থাকলেও শখের কেনাকাটায় সেই সীমা ছুঁয়ে ফেলবেন না যেন।

সূত্র: ফেমিনা