দিনাজপুর উঠে এসেছে আনিকাদের আঁকা দেয়ালচিত্রে

দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের আঁকা দেয়ালচিত্র
ছবি: সংগৃহীত

স্কুলজীবনেই আঁকাআঁকির প্রতি ভালো লাগার শুরু আনিকা আনজুমের। সেই টানেই ভর্তি হয়েছিলেন দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগে। আন্দোলন যখন শুরু হলো, তখন থেকেই বিভাগের বন্ধুরা মিলে আঁকাআঁকি করেছেন ক্যাম্পাসজুড়ে।

‘রিবিল্ড দিনাজপুর’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে দিনাজপুর শহর রাঙানোর কাজ শুরু করেছিলেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। সেখানেই স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যুক্ত হন আনিকা ও তাঁর কয়েকজন সহপাঠী। স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের নির্দেশনা দেওয়া, ছবির ‘কনসেপ্ট’ ধরিয়ে দেওয়া, আঁকাআঁকিতে হাত লাগানোসহ নানা কাজ করেছেন তাঁরা। স্কুলের বাচ্চাদের সঙ্গে কাজ করতে করতে আনিকা নিজেও কিছু আঁকার কথা ভাবছিলেন। যেহেতু তাঁরা স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থী, তাই দিনাজপুরের স্থাপনাগুলোই তুলে ধরার কথা মাথায় আসে।

‘এক ফ্রেমে পুরো দিনাজপুর’ শিরোনামে এই দেয়ালচিত্রে তাঁরা দিনাজপুরের বিখ্যাত ঈদগাহ মিনারকে কেন্দ্রে রেখে স্থানীয় দর্শনীয় স্থানগুলো ফুটিয়ে তুলেছেন। দেয়ালচিত্রে মিনারের একদম পেছনেই রাখা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক৷ তার এক পাশে নয়াবাদ মসজিদ, অন্য পাশে কান্তজিউ মন্দির৷ রাজবাড়ী, কাঞ্চনব্রিজ, দীপশিখা স্কুল, আশুর বিল, শালবন, সবই আছে ছবিতে। আর এই সবকিছুর পেছনে রাখা হয়েছে তেভাগা আন্দোলনের সময়ের দুই বীরের একটি ভাস্কর্য, যেটি আন্দোলনের সময়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে। এভাবেই এক ছবিতে পুরো দিনাজপুরকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন তাঁরা।

কাজগুলো করতে গিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর কাছ থেকে খালি দেয়ালগুলো রাঙানোর অনুরোধও পান আনিকা ও তাঁর সহপাঠীরা। আনিকা বলেন, ‘আমরা যেখানেই কাজ করতে গেছি, এলাকার মানুষ উৎসাহ দিয়েছেন। তাঁরা তাঁদের দেয়ালগুলো রাঙানোর জন্য আবদার করেছেন। এলাকার অনেকেই এসে খাবার দিয়ে যাচ্ছিলেন। অটোচালক থেকে শুরু করে রাস্তার সাধারণ পথচারী, ছোট বাচ্চারা, অভিভাবকেরা—সবাই উৎসাহ দিয়েছেন। দিনাজপুর ফুলবাড়ী রোডের যাত্রীবাহী বাসগুলোও গাড়ি স্লো করে আমাদের কাজ দেখছিল। এসব থেকেই আমরা আরও উৎসাহ পেয়েছি।’