এমন উচ্ছ্বাস নিয়েই বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করেন ক্লাবের সদস্যরা
এমন উচ্ছ্বাস নিয়েই বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করেন ক্লাবের সদস্যরা

যে ক্লাব সিনেমাপ্রেমীদের

ক্যামেরা যিনি চালাচ্ছেন, তিনি হয়তো অর্থনীতি নিয়ে পড়েছেন। পরিচালক ব্যবসায় প্রশাসনের ছাত্র। অন্যদিকে ক্যামেরার সামনে যিনি অভিনয় করছেন, তাঁর পড়ার বিষয় হয়তো প্রকৌশল। এমন বিচিত্র সব বিষয়ের সম্মিলন আপনি যেকোনো শুটিং সেটে গেলেই পাবেন।

চলচ্চিত্র নিয়ে পড়ার এন্তার সুযোগ এখন তৈরি হয়েছে। কিন্তু এটি এমন এক শিল্প, যে শিল্পের সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখার তেমন কোনো সংযোগ নেই। তাই তো বিইউপি ফিল্ম ক্লাবও নানা বিভাগের সৃজনশীল শিক্ষার্থীদের একটি প্ল্যাটফর্ম।

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের একদল শিক্ষার্থী ক্লাবটি গড়েছিলেন ২০১৯ সালের ৫ এপ্রিল। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে এগিয়ে চলা এই ক্লাব গত পাঁচ বছরে আয়োজন করেছে বহু সেমিনার, কর্মশালা ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর। বর্তমানে সক্রিয় সদস্যের সংখ্যা প্রায় ১২০ জন।

বিইউপি ফিল্ম ক্লাবের সহ-মডারেটর প্রভাষক নুসরাত জাহান বলেন, ‘সিনেমা কেবল বিনোদন নয়, এটি আমাদের শিক্ষা, সামাজিক বার্তা ও জীবনে এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা। তাই সিনেমার জ্ঞানকে সহজভাবে বোঝা ও পরিপুষ্ট করার লক্ষ্যেই কাজ করে বিইউপি ফিল্ম ক্লাব। বছরজুড়ে সদস্যরা ছোটখাটো বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে ক্লাবকে মুখর করে রাখেন। এ ছাড়া এসব আয়োজনকে কেন্দ্র করে চলচ্চিত্র অঙ্গনের বিখ্যাত ব্যক্তিদের পদচারণ ক্লাবের সদস্যদের বিনোদন অঙ্গনে কাজ করার পথ সহজ করে দেয়।’

বিইউপি ফিল্ম ক্লাবের সবচেয়ে বড় আয়োজন ‘বিইউপি ফিল্ম ফেস্ট’। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেমাপ্রেমী শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা হয়ে ওঠে দুই দিন ধরে চলা এই আয়োজন। উৎসবের প্রতিযোগিতা অংশে থাকে স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি, চিত্রনাট্য লেখা, সিনেমাবিষয়ক কুইজ, পোস্টার ডিজাইন ও কসপ্লে। সিনেমা অনুরাগীরা স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি তৈরি করে উৎসবে হাজির হন; সঙ্গে থাকে ক্লাবের নিজস্ব পরিচালনার চলচ্চিত্র। এখন পর্যন্ত বিইউপি ফিল্ম ক্লাবের পরিচালনায় দুটি স্বল্পদৈর্ঘ্য নির্মিত হয়েছে—মুদ্রাকথন ও ভূ।

প্রতিবছর ফিল্ম ফেস্টকে কেন্দ্র করে চলচ্চিত্র অঙ্গনের জনপ্রিয় নানা মানুষের পা পড়ে বিইউপি প্রাঙ্গণে। ইতিমধ্যেই যেমন এসেছেন পরিচালক গিয়াস উদ্দিন সেলিম, মেসবাউর রহমান সুমন, দীপঙ্কর দীপন, অভিনয়শিল্পী নাসির উদ্দিন খান, সিয়াম আহমেদ, নাজিফা তুষিসহ অনেকেই।

ক্লাবের প্রেসিডেন্ট এস কে আদীব বলেন, ‘বিইউপি ফিল্ম ক্লাব সব সময় দেশীয় সংস্কৃতি ও সিনেমা প্রচারের চেষ্টা করে, যাতে বর্তমান প্রজন্ম বাংলা সিনেমাবিমুখ না হয়ে বরং দেশি সিনেমার প্রতি আগ্রহী হয়। কেবল বিনোদন অঙ্গনেই নয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায়ও আমরা কাজ করি। এ বছরও বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা ক্লাব থেকে বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম।’

ক্লাবের নানা অনুষ্ঠানে আলাদা আলাদা দলের থাকে আলাদা দায়িত্ব। অতিথিদের আমন্ত্রণ জানায় যেমন কনটেন্ট বিভাগ, তেমনই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকে অপারেশনস বিভাগ। এ ছাড়া ডেকোরেশন, লজিস্টিকসসহ নানা দলে শিক্ষার্থীরা কাজ করেন।