তরুণ ও উদ্যোক্তাদের ফেলোশিপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, জেনে নিন কীভাবে আবেদন করবেন

বাংলাদেশ থেকে নিয়মিতই তরুণেরা এই ফেলোশিপের জন্য নির্বাচিত হচ্ছেন
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার তরুণদের জন্য বিশেষ একটি ফেলোশিপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারণাকে গুরুত্ব দিয়ে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট এই ফেলোশিপ দেবে। ৩০ মার্চের মধ্যে আবেদন করতে হবে। ফেলোশিপপ্রাপ্তরা যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন। বাংলাদেশের ফেলো নির্বাচনে সহযোগিতা করছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ।

কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশের তরুণ উদ্যোক্তা, গবেষক ও পেশাজীবীরা নিয়মিত এই ফেলোশিপ প্রোগ্রামে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। প্রকৌশলী নিলয় দাশ ২০১৬ সালের ফেলোশিপ প্রোগ্রামে অংশ নেন। তিনি বলেন, ‘আমরা কয়েক সপ্তাহের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাজের সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলাম। যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমার বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাজের ধরন, উদ্যোগ ও স্টার্টআপ–সংস্কৃতির নানা বিষয় সম্পর্কে হাতে–কলমে শেখার সুযোগ হয়েছে। একদিকে যেমন বাংলাদেশের সংস্কৃতি যুক্তরাষ্ট্রের সামনে তুলে ধরার সুযোগ পেয়েছি, তেমনি পশ্চিমা দুনিয়ার কাজের ধরন সম্পর্কেও জেনেছি।’

ফেলোশিপে অংশ নেওয়া নারী উদ্যোক্তা নওরিন আয়েশা বলেন, ‘আমি যুক্তরাষ্ট্রের একটি পোশাক নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ও উদ্যোক্তার সঙ্গে ফেলোশিপের মাধ্যমে যুক্ত হয়েছিলাম। যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা কীভাবে কাজ করেন, তা জেনেছি। এটা বেশ কাজে লেগেছে।’

আবেদনের যোগ্যতা

  • বয়স ২৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে হতে হবে।

  • অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও উদ্যোগসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কাজে যুক্ত থাকতে হবে।

  • যাঁদের বিভিন্ন ক্ষুদ্র ব্যবসা বা উদ্যোগের অভিজ্ঞতা আছে, তাঁরাও আবেদন করতে পারেন।

  • যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা বিষয়ে কিংবা অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান নিয়ে জানার আগ্রহ থাকা জরুরি।

  • ইংরেজি ভাষাদক্ষতা ও কম্পিউটার জ্ঞান আবশ্যক।

  • প্রার্থী নির্বাচনে যেসব বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হয়

যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের এই ফেলোশিপে সেই তরুণদের নির্বাচন করা হয়, যাঁরা নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা রাখেন, স্বাধীনভাবে নানা সমস্যা সমাধানে কাজ করেন। নিজ সম্প্রদায়ের নানা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন যাঁরা, তাঁরাও অগ্রাধিকার পান। প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে তরুণদের সাংস্কৃতিক যোগাযোগের দক্ষতা ও ভিন্নমাত্রিক পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। যাঁরা নিজের এলাকার উন্নয়নে ব্যক্তি উদ্যোগে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত আছেন, তাঁরাও এগিয়ে থাকবেন।

আবেদনে যা যা যুক্ত করতে হবে

  • এক পাতার মধ্যে নিজের আগ্রহের কথা লিখতে হবে।

  • দুই পাতার জীবনবৃত্তান্ত আবেদনে যুক্ত করতে হবে।

  • বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ থাকতে হবে।

ইংরেজিতে লেখা দুটি সুপারিশপত্র (লেটার অব রিকমেন্ডেশন) যুক্ত করতে হবে। এই পত্রে প্রার্থীর দক্ষতা সম্পর্কে সুপারিশকারীরা লিখবেন। যেমন প্রার্থী কোন ক্ষেত্রে সৃজনশীলতা দেখিয়েছেন, কীভাবে সমস্যা সমাধান করেন, সামাজিক বিভিন্ন বিষয়কে কীভাবে মূল্যায়ন করেন ইত্যাদি।

আবেদনের সময় যা খেয়াল রাখতে হবে

যাঁরা আবেদন করবেন, তাঁরা প্রথমেই আবেদনের যোগ্যতা ও নিয়মাবলি ভালো করে জেনে নেবেন। নিজের সম্পর্কে সব তথ্য স্পষ্ট করে লিখতে হবে। আগ্রহপত্রে আপনি কেন অন্যদের চেয়ে আলাদা, কীভাবে সমস্যার সমাধান করেন, কীভাবে এই ফেলোশিপে অংশগ্রহণের মাধ্যমে আপনি সামাজিক পরিবর্তন আনবেন, সাবলীল ভাষায় লিখুন। অন্য কোনো লেখা অনুকরণ করে হুবহু সংযুক্ত করবেন না। নিজের মতো করে নিজের ভাষায় প্রকাশ করার চেষ্টা করুন।

আবেদনের বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন এখানে