স্কুলজীবনে জাতীয় সংগীত আমরা সবাই গাই। কিন্তু বড় হওয়ার পর কখনো কখনো, কোনো কোনো পরিস্থিতিতে এই চেনা গানই গায়ে কাঁটা দেয়। সে রকম আবেগময় কিছু মুহূর্তের গল্পই আমরা শুনেছিলাম কয়েকজন তরুণের কাছে। এখানে থাকছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক মেলিশা চৌধুরীর কথা।
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক শেষ করে এখন আমি উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছি। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নেওয়ার সুযোগ হয়েছে আমার। ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে মডেল ইউনাইটেড নেশনসের একটা সম্মেলনে নেপালে গিয়েছিলাম। সেখানে ১১টা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী আয়োজনে বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে সবার সামনে দাঁড়িয়েছিলাম আমি। তখন বাজানো হয় বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত।
ভিন্ন ভাষাভাষী শতাধিক তরুণের সামনে আমার জাতীয় সংগীত বাজানো হচ্ছে, এটা আমার জন্য ভীষণ গর্বের একটা ব্যাপার ছিল। ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’—গাইছিলাম আমিও। একটি বিষয় খেয়াল করেছি, সম্মেলনে যেসব ভারতীয় বাঙালি অংশ নিয়েছিলেন, তাঁরাও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতে কণ্ঠ মেলাচ্ছিলেন। দুই দেশের মানুষ, কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের এককাতারে দাঁড়ানোর সুযোগ করে দিয়েছেন।
আমাদের জাতীয় সংগীতের প্রতিটি শব্দ যে ভীষণ শক্তিশালী, সেদিনই প্রথম টের পেয়েছি। কত গান, কত কবিতাই তো আমরা শুনি, পড়ি, গাই, বলি। কিন্তু জাতীয় সংগীতের মতো এমন আবেদন আর কোথাও পাইনি। গানটির সুরেই একধরনের রোমাঞ্চ আছে। দেশে অসংখ্যবার জাতীয় সংগীত গেয়েছি। কিন্তু এই রোমাঞ্চ আসলে দেশের বাইরে গিয়েই আমি টের পেয়েছি। নানা দেশের মানুষের সামনে জাতীয় সংগীত গাওয়ার এই অভিজ্ঞতা আমি বহুদিন মনে রাখব।