ঘর থেকেই অফিসের অনেক কাজ সারতে হচ্ছে এখন। পরিস্থিতির দাবি এমনটাই। কেউ হয়তো সপ্তাহের কয়েকটা দিন অফিসে যাচ্ছেন, বাকি দিনগুলো ঘর বসে সামলাতে হচ্ছে অফিসের কাজ। একটানা হোক, কিংবা কয়েক দিনের জন্য, ঘরে কর্মক্ষেত্রের স্বাদ পেয়েছেন অনেকে।
অফিসের কাজ বাড়িতে করার জন্য খুব বড় জায়গা কিংবা আহামরি কোনো ব্যবস্থা না করলেও ক্ষতি নেই। অতিথিদের জন্য আলাদা করে রাখা ঘরটা হয়তো এখন ব্যবহৃত হচ্ছে না, সেই ঘরে যেমন অফিস হতে পারে, তেমনি আবার শোবার ঘরের এক কোণে একটু জায়গা আলাদা করে নিয়েও অস্থায়ী অফিস করতে পারেন। হয়তো ল্যাপটপ কম্পিউটার রাখার জন্য একটা টেবিল থাকল, কাগজপত্রগুলো গুছিয়ে রাখলেন ফাইলে, ফাইল গুছিয়ে রাখলেন টেবিলের কাছেই দেয়ালের তাকে। থাকল স্বস্তিদায়ক একটা চেয়ার, আর আলোর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা—এতেই সম্পন্ন হয়ে যাবে হোম অফিসের আয়োজন।
‘ঘরের অফিসের আয়োজনটা যেমনই হোক, তা যেন বাড়ির বাকি অংশের অন্দরসজ্জার সঙ্গে মানানসই হয়। অল্প কিছু বিষয় খেয়াল রাখলে খুব সহজেই কাজের উপযোগী একটা জায়গা আলাদা করে নেওয়া যায়।’ এম অ্যান্ড এস ইন্টেরিয়র সলিউশনের অন্দরসজ্জাবিষয়ক পরামর্শক মুমানা ইসলাম বলছিলেন এমনটাই। তবে বাড়ির অফিসে কয়েকটা বিষয়ে বিশেষভাবে খেয়াল রাখা ভালো।
চেয়ার–টেবিল যেমন
আরামদায়ক উচ্চতার টেবিল-চেয়ার চাই। টেবিলে রাখা থাক কম্পিউটার। প্রয়োজনে এই টেবিলের পাশে একটা ছোট টেবিলে রাখা যায় প্রিন্টিং সামগ্রী। টেবিল আর সাইড টেবিলে অল্প কিছু ফাইলও রাখা যায়। ঘাড় বাঁকিয়ে যাতে কাজ করতে না হয়, কি–বোর্ডে আঙুল চালানোর সময় কিংবা মাউস প্যাডে কবজি ঘোরানোর সময় হাত যাতে ঝুলে না থাকে। পা বাঁকিয়ে যাতে কাজ করতে না হয়। এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখুন, অফিসেও যেমন রাখা হয়। ইন্টারনেট সংযোগটাও রাখা থাকল সুবিধাজনকভাবে। টেবিলে কিংবা পাশে অন্দরের উপযোগী গাছ কিংবা শোপিস সাজিয়ে রাখতে পারেন।
দেয়ালটায় স্বস্তি
দেয়ালের রংটা হোক কোমল, স্নিগ্ধ। অফ হোয়াইট, ধূসর, হালকা নীল, নিউট্রাল রং বেছে নেওয়া যায়। চোখে লাগে, এমন রং দেয়ালে না থাকলেই ভালো। ঘরে কাজের জায়গার অংশের দেয়ালটাকে আলাদা করে নেওয়ার জন্য সেখানটায় আলাদা কাগজ লাগিয়ে নিতে পারেন। কিন্তু খেয়াল রাখুন, যাতে দেয়ালটা খুব বেশি ঝকমকে না হয় কিংবা কাজের সময় দৃষ্টি আর মনোযোগ এলোমেলো করে দেওয়ার মতো না হয়। দেয়ালের তাকে কাগজপত্র সব গুছিয়ে রাখলে প্রয়োজনের সময় সহজেই খুঁজে পাবেন। এই তাক হতে পারে একটু ভিন্ন ধাঁচের। সেখানেও রাখতে পারেন কিছু শোপিস।
আলোর উজ্জ্বলতায়
নির্বিঘ্নে কাজ করতে চাই পর্যাপ্ত আলো। কিন্তু সে আলো যাতে চোখে চাপ না ফেলে, সেটাও খেয়াল রাখুন। দিনের উজ্জ্বল আলোয় কাজ করতে পারলে তা নিঃসন্দেহে দারুণ। বাড়তি আলোর প্রয়োজন হলে টেবিল ল্যাম্প রাখতে পারেন। কিংবা দেয়ালের তাকের নিচের দিকে সংযোগ করে নিতে পারেন আলোর উৎসটি। আলোর উৎস যেদিকেই হোক, আপনার চোখে যেন সেই আলো সরাসরি না পড়ে। আলোর উৎসটা চোখের চেয়ে খানিকটা নিচের উচ্চতায় রাখা হলে চোখে স্নিগ্ধ আলো পাবেন। স্নিগ্ধ আলোয় দারুণ এক কর্মপরিবেশে কাজ করতে পারবেন নিজের সবটুকু দিয়ে।
পরিবেশ হোক নিরিবিলি
বাড়িতে অফিস করার ক্ষেত্রে পরিবেশ হওয়া চাই নিরিবিলি। আপনি হয়তো কোনো জুম মিটিং করছেন, হঠাৎ পেছন দিয়ে কেউ কথা বলতে বলতে এঘর–ওঘর করল। সেটা আপনার জন্য বিব্রতকর হতে পরে। তাই মনোযোগ দিয়ে কাজ করার জন্য আপনার জায়গাটুকু আবদ্ধ করে নিতে পারলে সুবিধা হবে।