কেমন আছো তোমরা? নিশ্চয়ই ভালো নেই। কত দিন তোমাদের সঙ্গে দেখা নেই। একসময় প্রতি রাতেই হারিকেন জ্বালিয়ে প্রিয় ডায়েরির পাতায় মনের মাধুরী মিশিয়ে না-বলা কথাগুলো লিখে রাখতাম। আর এখন প্রতি রাতেই বৈদ্যুতিক বাতির আলোয় কম্পিউটারে, ল্যাপটপে অথবা মোবাইলের নোটবুকে হাতের আঙুলের স্পর্শে লিখে চলছি অবিরাম। প্রিয় হারিকেন, ডায়েরি, খাতা ও কলম—তোমাদের কথা মাঝেমধ্যে খুব বেশি মনে পড়ে।
বিল্লাল মাহমুদ, ময়মনসিংহ
হাইস্কুল জীবনে একসঙ্গে প্রাইভেটে আসা-যাওয়ার পথে বন্ধুত্ব হয় তোমার সঙ্গে। অল্পদিনেই সেই বন্ধুত্ব থেকে ভালোবাসা হয়। ২০০৯ থেকে ২০২১ সাল—এক যুগ। সময়ের আবর্তনে অনেক কিছু পরিবর্তন হলেও আমাদের ভালোবাসা আজও আছে সেই আগেরই মতো।
জানি, সামনের দিনগুলোতে অনেক বাধা-বিপত্তি আসবে। সব বাধা অতিক্রম করে একদিন আমি তোমাকে আপন করে পাব, সেই বিশ্বাসেই চলছে জীবন।
এনামুল হক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
বছর তিনেক পর শহরে ফেরা। ভেবেছিলাম, সবই বদলে গেছে। বদলায়নি কিছুই। শুধু বদলেছে গলির সামনে থাকা বিলবোর্ডের বিজ্ঞাপন। রাস্তার পাশে ছোট এক চায়ের দোকানে বসে যে চাচা একাধারে বকে যেতেন, তিনি নেই, তবে চায়ের দোকানটা ঠিক সেখানে আছে। আগে পাশের বাসার যে মেয়েটার সঙ্গে গল্প করে অবসর কাটাতাম, তারা নাকি প্রবাসে চলে গেছে। তবে মা বলছে, এখন যারা এসেছে, তাদের মধ্যে মিসেস রুমি আসর জমাতে বেশ অভিজ্ঞ। আগে যে মাটির রাস্তা দিয়ে হেঁটে হেঁটে স্কুলে যাওয়া হতো, সেই রাস্তা এখন পিচ করা। যাক, বৃষ্টি এলেও এখন আর পানি জমে না। আমাদের বিল্ডিংয়ের ঠিক পাশেই খোলা জায়গায় একটি বড় আমগাছ আছে। বিকেল হলেই ছেলেমেয়েরা সেই আমগাছের নিচে খেলতে আসত। এখন জায়গাটা আবর্জনা ফেলার জন্য বরাদ্দ। তাই বিকেল হলে ছেলেমেয়েদের সেখানে দেখা যায় না।
সব প্রায় একই আছে। বিশেষ বদলায়নি। বদলেছি শুধু আমি।
রোজলীন প্রেমী, ঢাকা
তুমি তো জানতে সুস্মিতা, আমি তোমাকে কতটা পছন্দ করতাম। তারপরও তোমায় কখনো ফোন করে বা এসএমএস করে বিরক্ত করিনি। সরাসরি কথা বলতে গিয়েও না বলে থেমে গেছি অনেকবার। কারণ, আমি আমার অনুভূতি বা ইচ্ছা দিয়ে অন্য কাউকে বিচার করি না। আর ফুল, সে তো দূর থেকেই সুন্দর। কাছে গিয়ে কেন ছুঁয়ে দেখতে হবে?
কেনই-বা সেটা ছিঁড়ে এনে নিজের কাছে রাখতে হবে? কিন্তু তুমি যখন নিজ থেকে কথা বলা শুরু করেছিলে, তখন আর দূরে সরে থাকতে পারিনি। আচ্ছা একটা বিষয় খেয়াল করেছ? আমরা তো একসঙ্গে অনেক সময় কাটিয়েছি, কই ভুল করে তো কখনো তোমার হাতটা ছুঁয়ে দেখিনি। ইচ্ছা করে তোমার গায়ের সঙ্গে ঘেঁষাঘেঁষি করিনি। হয়তো ভালোবাসার সংজ্ঞা আমার কাছে ভিন্ন।
তোমার হাসিমাখা মুখ দেখলেই আমার ভালোবাসা পূর্ণতা পেত। তুমি যখন মনের আনন্দে হাসতে, তখন তোমায় দেখতে কী যে মায়াবী লাগত! তোমার আনন্দে নিজের অজান্তে আমিও আনন্দিত হতাম। তবে তুমি আমাকে অবহেলা, অবজ্ঞা করে দূরে সরিয়ে দেবে, এটা কখনো আশা করিনি।
তুমি হয়তো ভাবনি, তোমার অবহেলা আমার কাছে কতটুকু যন্ত্রণাদায়ক হবে। আজ আমার অসুখ হয়েছে গো, বড্ড অসুখ। তোমাকে মিস করার এই অসুখ আমাকে পেয়ে বসেছে। তুমি কি ভেবেছিলে, তোমার সুখের সময় আমাকে পাশে রাখলে তোমার সুখে ভাগ বসাব? আরে না, আমি এমনিতেই কারও সুখের সময় তার সঙ্গে না থাকার চেষ্টা করি। তবে এখন মনের মধ্যে একটা প্রশ্ন ঘুরে ফেরে, আসলে কারও সুখের সময় আমি তাদের সঙ্গে থাকি না, নাকি তারাই আমার সঙ্গে থাকে না?
আমার আজ অসুখ হয়েছে গো, বড্ড অসুখ। তোমার সঙ্গে কথা বলতে না পারার অসুখ।
হিমু, রংপুর