নন্দিতা শারমিন। তিনি পেশায় হারবালিস্ট। প্রাকৃতিক উপাদান থেকে তৈরি পণ্য নিয়ে তাঁর কাজ। শুষ্ক ত্বক, চুল পড়াসহ বিভিন্ন সমস্যায় ফেসবুকে ভিডিওতে তিনি নানান পরামর্শ দেন।
স্কিন কেয়ারের বিভিন্ন পণ্য নিয়ে কাজ করছেন নন্দিতা। আফ্রিকাসহ বিভিন্ন দেশ থেকে এসব পণ্যের কাঁচামাল আনেন। ‘আমলকি’ ব্র্যান্ডের পণ্য বানানোর কারখানাটি রাজধানীতে অবস্থিত। তিনি লন্ডন ও বাংলাদেশে আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকেন। তাঁর উৎপাদিত আমলকি অনলাইনে জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
নন্দিতার দাদা নরসিংদীর লাল মোহন বাউল আয়ুর্বেদ চিকিৎসক হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছিলেন। নন্দিতা মূলত দাদার পথ ধরেই এগোচ্ছেন। নন্দিতা লন্ডনে দ্য স্কুল অব ন্যাচারাল হেলথ অ্যান্ড সায়েন্স বিষয়ে অ্যাডভান্স ডিপ্লোমা (দুই বছর) করেন। বর্তমানে হারবালিস্ট হিসেবে লন্ডনে কনসালটেন্সি করছেন।
নন্দিতার কারখানায় কাজ করেন ১৫ জন। ৪ বছর আগে মাত্র ৪ জন কর্মী নিয়ে কারখানার কাজ শুরু করেছিলেন। কারখানায় উৎপাদিত পণ্য বিএসটিআইয়ের অনুমোদনপ্রাপ্ত। যেহেতু পণ্য শরীর বা ত্বকে ব্যবহার করতে হয়, তাই কোনো সমস্যা হয় কি না, তা পরীক্ষার জন্য কেউ চাইলে অল্প পরিমাণে কিনে ব্যবহার করে দেখতে পারেন, সে সুযোগও রাখা হয়েছে। পণ্যের দাম ৮০ থেকে শুরু করে ১ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে। নন্দিতার মাসে গড়ে পাঁচ লাখ টাকার মতো আয় হয় বলে জানালেন।
নন্দিতা বললেন, হারবালিস্ট হিসেবে বা নিজস্ব উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণ করছেন, এ ধরনের কাজ বা পেশায় নারীর সংখ্যা এখনো অনেক কম। নন্দিতা ২০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলেন। বললেন, অনলাইনে ব্যবসা করতে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা সময় দিতে হয়।
২০০০ সালে নন্দিতা প্রথম লন্ডনে যান। তারপর থেকে ব্যবসা এবং কনসালটেন্সির কাজে বাংলাদেশ-লন্ডন যাতায়াত করেন। এবার করোনাভাইরাসের বিস্তারে প্রায় পাঁচ মাস পর বাংলাদেশে এসেছিলেন। প্রথম আলো কার্যালয়ে বসে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। জানালেন, তিনি বাংলাদেশে এসেছেন আর তাঁর স্বামী সাড়ে ৯ ও ৬ বছর বয়সী দুই ছেলেকে লন্ডনে সামলেছেন। বললেন, হারবালিস্ট বা ব্যবসা নারী যে কাজই করুন, পরিবারের সহায়তা না পেলে কাজটা কঠিন হয়ে যায়।
নন্দিতা বললেন,‘আমি যে পণ্য নিয়ে কাজ করছি তা মানুষের শরীর, ত্বক বা চুলে ব্যবহার করা হচ্ছে। পণ্যের গুণগতমান ঠিক না থাকলে যেকোনো সময়ই ঘটতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা। তাই পণ্যের মান নিয়ে আপস করার কোনো সুযোগ নেই।’