স্নানে সতেজ

ত্বকের সুরক্ষায় হলুদ উপকারী। ছবি: অধুনা
ত্বকের সুরক্ষায় হলুদ উপকারী। ছবি: অধুনা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্নানের জন্য কী সুন্দর করে বলেছেন, ‘এসো নীপবনে ছায়াবীথি তলে, এসো করো স্নান নবধারা জলে’। আর আমাদের মায়েরা তারস্বরে বলেন, ‘এখনই গোসল সেরে আয়, না হয় আজ খাওয়া বন্ধ।’ মিষ্টি কিংবা তেতো, সে যেমন করেই বলুক, গোসল করাটা খুব জরুরি। শুধু পরিচ্ছন্ন থাকাই গোসলের উদ্দেশ্য নয়, আছে নানা উপকার। 

ঢাকার ল্যাবএইড স্কিন ক্লিনিকের পরামর্শক ডা. কামরুল হাসান চৌধুরী জানান, গরমে ধুলাবালু ও ঘামে লোপকূপগুলো বন্ধ হয়ে যায়, ফলে বাইরে থেকে এসে সময় নিয়ে গোসল করা উচিত। শুধু রোগব্যাধি এড়াতে নয়, সুস্থ থাকতে এর বিকল্প নেই। আরও যেসব কারণে প্রতিদিন গোসল করা জরুরি, আজ জেনে নেওয়া যাক। 

পেশিশক্তি
দিন শেষে শরীরের পেশিগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে। বিষণ্নতা ভর করে শরীরে। হালকা গরম পানিতে গোসল করলে মাংসপেশি উজ্জীবত হয় এবং স্থিতিস্থাপকতা বাড়ে। দুর্বল পেশি টানটান হয়ে ওঠে স্নানে। 

সৌন্দর্য
সতেজ, সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন থাকতে গোসলের বিকল্প নেই। নিয়মিত স্নানে শরীরের টক্সিনের মাত্রা কমে। গোসলের সময় পানিতে নিমপাতা কিংবা গায়ে হলুদ মেখে নিলে সৌন্দর্যের পাশাপাশি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে। আর সময় বাঁচাতে ও ঝামেলা এড়াতে নিম ও হলুদ উপাদানযুক্ত সাবানও ব্যবহার করতে পারেন। 

প্রতিদিন গোসল করলে শরীর–মন সতেজ ও সুস্থ থাকবে। মডেল: সৌমি, ছবি: অধুনা


রক্ত সঞ্চালন
গোসলের সময় রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায়। অক্সিজেনযুক্ত রক্ত শরীরের কোষে কোষে পৌঁছে শরীরের ক্ষয়পূরণে ভূমিকা রাখে। এ জন্য গোসল সারার পর দ্রুত চাঙা হয়ে ওঠে শরীর। 
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
ঠান্ডা কিংবা গরম, যেকোনো পানি দিয়ে গোসল করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এতে ভাসকুলার ও লিম্ফসিস্টেম উদ্দীপিত হয়ে ইমিউন কোষ তৈরি করে। এই কোষ সব সময় শরীরের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়ে। 

মনোবৈকল্য
ঠান্ডা পানিতে গোসল মনকে চাঙা রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে, ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসলের সময় স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। 

পুরুষত্ব
নিয়মিত ঠান্ডা পানিতে গোসল করলে পুরুষের হরমোন টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধি পায়। শরীরের সক্ষমতা বাড়ে এবং শুক্রাণু বাড়ে। 

ঘুমের সমস্যা
যাঁদের ঘুম গভীর হয় না, নির্ঘুম রাত কাটে, তাঁরা ঘুমাতে যাওয়ার আগে গোসল করে নিতে পারেন। গোসল ঘুমের মান বৃদ্ধি করে এবং অনিদ্রা দূর করে।