অর্জন

স্থাপত্যে চুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক সাফল্য

বাঁ থেকে ফয়সাল হোসেন, সুমাইয়া সুলতানা ও সাদমান আলী
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) স্থাপত্য বিভাগের একটি দল ভারতে অনুষ্ঠিত ‘দ্য ড্রয়িং বোর্ড’ নামের আন্তর্জাতিক স্থাপত্য প্রতিযোগিতায় প্রথম রানারআপ হয়েছে। বিজয়ী দলের সদস্যরা হলেন ফয়সাল হোসেন, সুমাইয়া সুলতানা ও সাদমান আলী। প্রত্যেকেই চুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী।

রোহান বিল্ডারস ও মাইন্ড স্পেস আর্কিটেক্টসের যৌথ পরিচালনায় ‘দ্য ড্রয়িং বোর্ড’ ২০১৬ সাল থেকে ভারতের পুনে শহরে প্রতিবছর একটি করে স্থাপত্য নকশাভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা করে। এ বছরের প্রতিযোগিতার মূল বিষয়বস্তু ছিল ‘ভারতের ক্ষণস্থায়ী নির্মাণশ্রমিকদের জন্য অস্থায়ী ঘর নির্মাণ’। সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে অনলাইনে এই প্রতিযোগিতার একটি বিবরণ চোখে পড়ে ফয়সাল হোসেনের। তিনি তখন দলের বাকি দুই সদস্য সুমাইয়া সুলতানা ও সাদমান আলীর সঙ্গে আলোচনা করে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু বাধা হয়ে আসে মহামারি করোনা। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ এবং চলাফেরায় স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকায় তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, পুরো নকশাটি তাঁরা অনলাইনে আলোচনা করে সম্পন্ন করবেন।

তিন তরুণ এমন একটি আবাসের কথা ভাবছিলেন, যা একই সঙ্গে স্বল্পব্যয়ী, ক্ষণস্থায়ী ও পরিবহনযোগ্য। সেই লক্ষ্যে এ বছরের ৫ নভেম্বর একটি ত্রিভুজাকার ঘরের নকশা প্রতিযোগিতায় উপস্থাপন করেন। ১৯ নভেম্বর একমাত্র বাংলাদেশি দল হিসেবে প্রতিযোগিতার শীর্ষ সাতে স্থান করে নেন। বিস্তারিত নকশা জমা দেওয়ার পর ২৫ নভেম্বর আসা ফলাফলে দেখা যায়—চুয়েটের দলটিই হয়েছে রানারআপ।

ফয়সাল হোসেন বুঝিয়ে বলছিলেন তাঁদের ত্রিভুজাকৃতির ঘরের বৈশিষ্ট্য, সাধারণ একটি ঘরে অবশ্যই চারটি স্তম্ভের প্রয়োজন, কিন্তু ত্রিভুজাকার প্রতিটি ঘরে একটি করে স্তম্ভের খরচ কমে যায়। তা ছাড়া এই ঘরের মূল আকর্ষণ হলো: ডিস ম্যান্টল এবং রি–অ্যাসেম্বল। অর্থাৎ কোনো এক জায়গায় স্বল্প সময়ের জন্য এই ঘরটি তৈরি করে সেটি খুব সহজে গুটিয়ে পুনরায় আরেক জায়গায় স্থাপন করা যাবে। এতে খরচ কমে যাবে কয়েক গুণ।

নকশাটির এই দুটি বৈশিষ্ট্যই মূলত বিচারকদের মন জয় করে নিয়েছে, সেই সঙ্গে তাঁরাও জয় করে নিয়েছেন প্রথম রানারআপের খেতাব। কিন্তু এখানেই থামতে চান না তিন তরুণ। দলের আরেক সদস্য সাদমান আলী বলেন, ‘আমাদের জন্য এটি কেবল একটা প্রতিযোগিতা ছিল না, বরং স্থাপত্য সম্পর্কে বিচারকদের কাছ থেকে শেখার দারুণ সুযোগ ছিল। আমাদের সবারই পরবর্তী সময়ে উচ্চশিক্ষা নিয়ে দেশের স্থাপত্যচর্চায় নিজেদের নিযুক্ত করার পরিকল্পনা আছে।’