সৌরদীপ সুযোগটা হাতছাড়া করেন না

হোক অলিম্পিক, আন্তর্জাতিক বিতর্ক প্রতিযোগিতা কিংবা ডায়ানা অ্যাওয়ার্ডের মতো বড় আয়োজন—ভিনদেশে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে যান যে তরুণেরা, বিদেশযাত্রায় তাঁদের অনেকেরই সঙ্গে সব সময় থাকে লাল-সবুজ পতাকা। কীভাবে এই পতাকাই তাঁদের পরিচয় হয়ে ওঠে? কেমন করে পতাকা থেকে প্রেরণা পান তাঁরা?

আরেক বিতার্কিক সাজিদ আসবাত খন্দকারের সঙ্গে সৌরদীপ পাল (বাঁয়ে)
ছবি: সংগৃহীত

বিতর্ক-অন্তঃপ্রাণ সৌরদীপ পালের বিতার্কিকজীবন শুরু হয়েছিল কলেজ থেকে। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি হয়ে জাতীয় পর্যায়ে বহু বিতর্কে অংশ নিয়েছেন। দেশের বাইরেও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা থেকে ছিনিয়ে এনেছেন পুরস্কার। যতবার বিতর্ক করতে ভিনদেশে গেছেন, সব সময় সঙ্গে ছিল বাংলাদেশের পতাকা।

কেন? সৌরদীপ বলছিলেন, ‘একটা কারণ হলো, প্রতিযোগিতার মঞ্চে পতাকা রাখার রীতি। সাধারণত সেমি ফাইনাল বা ফাইনালে পৌঁছাতে পারলে বিতর্ক মঞ্চের টেবিলে পতাকা রাখা যায়। এই সুযোগটা কখনো হাতছাড়া করতে চাইনি। তবে এটাই একমাত্র কারণ নয়। আমি একটু অন্যভাবে চিন্তা করি। বাংলাদেশের এই লাল-সবুজ পতাকা আমার কাছে অনেক সম্মানের। পতাকা সঙ্গে থাকলে দেশের প্রতি একটা দায়িত্ববোধ তৈরি হয়। আমি বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছি, সেটা উপলব্ধি করতে সুবিধা হয়। দেশের বাইরে যখন সবকিছুই অচেনা, তখন পতাকাটাই একখণ্ড বাংলাদেশ। আর বিজয়ী হলে দেশের পতাকা সঙ্গে নিয়ে উদ্‌যাপনের যে আনন্দ...সেটা বলে বোঝানো যাবে না।’

বিতর্কের বিশ্বকাপখ্যাত ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটিজ ডিবেটিং চ্যাম্পিয়নশিপে সৌরদীপরাই প্রথম বাংলাদেশি দল, যারা কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছাতে পেরেছিল। কিছুদিন আগেই কেমব্রিজ আয়োজিত বিতর্ক চ্যাম্পিয়নশিপে অর্জন করে নিয়েছে প্রথম স্থান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ) থেকে স্নাতক শেষ করা সৌরদীপ পাল তাঁর প্রথম স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন দ্য অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে। এখন স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়ছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে। অস্ট্রেলিয়ায় পড়ার সময়ের স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে সৌরদীপ বলছিলেন, ‘প্রথম স্নাতকোত্তরের সময় আমি অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলাম। তাই বাংলাদেশের পতাকা নেওয়ার সুযোগ ছিল না। তবে সুযোগ নিয়েছিলাম অন্যভাবে। প্রতিযোগিতার ফাইনালে পোশাক হিসেবে আমি বেছে নিয়েছিলাম বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের জার্সি।’

আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার মঞ্চে নিজের দেশের নাম শোনার রোমাঞ্চ বারবার উপভোগ করতে চান এই তরুণ বিতার্কিক। ‘পতাকা তো শুধু একটুকরো কাপড় নয়, এটাই আমাদের অনুপ্রেরণা,’ বললেন তিনি।