শীতের সবজি ভালোভাবে সংরক্ষণ করলে খাওয়া যাবে বছরজুড়ে
পুরো বছরের অপেক্ষা থাকে শীতের সবজির জন্য। এ সময়ের সবজির রং ও স্বাদই থাকে আলাদা। এখন সারা বছর শীতের সবজি পাওয়া গেলেও প্রকৃত স্বাদ শীতের মৌসুমেই পাওয়া যায়। গাজর, ফুলকপি, ব্রকলি, শিম, মুলা, টমেটো, বেগুন, আলু প্রভৃতি সবজি, সেই সঙ্গে খাবারে সুঘ্রাণ বাড়িয়ে দেয় ধনেপাতা। প্রতিটি সবজিতেই রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল, অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট।সাধারণত আমরা শীতের সবজি মাছ, শুঁটকি, মাংসের সঙ্গে কিংবা ভাজি করেই খেয়ে থাকি। শীতকালীন সবজির স্বাদ অন্য সময় অক্ষুণ্ন থাকে না, সেই সঙ্গে দামটাও থাকে বেশি। তাই শীতের সবজি বেশি করে কিনে সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন বাড়িতেই।
গাজর সবজি অথবা সালাদ দুভাবেই খাওয়া যায়। এতে আছে বিটা ক্যারোটিন, যা দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে। গাজর কুচি করে ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে পারেন। পরে নুডলস, মমো, ফ্রাইড রাইস বিভিন্ন খাবারে ব্যবহার করা যাবে সহজেই। ভিন্ন স্বাদের জন্য গাজরের লাড্ডু, পায়েস তো আছেই। দৃষ্টিনন্দনের জন্য বিভিন্ন খাবারের ওপর গাজরকুচি ছড়িয়ে দিতে পারেন, যেমন পোলাও খিচুড়ি।
ব্রকলি, ফুলকপি দেখতে একই রকম। তবে স্বাদ ও রঙে রয়েছে ভিন্নতা। ফুলকপি ও ব্রকলি গরম পানিতে কয়েক মিনিট ফুটিয়ে নিতে হবে প্রথমে। পানি ঝরিয়ে বায়ুরোধী বাক্সে ঢুকিয়ে ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন। ব্রকলি সামান্য রসুনকুচি দিয়ে ভেজে খেতেই বেশি মজা। তবে স্যুপ বা পরোটা তৈরির সময়ও দিতে পারেন। ফুলকপি দিয়ে তৈরি করতে পারেন দোলমা, কাটলেট, পাকোড়া। বাঁধাকপি কুচি করে ভাপে (পানি বাষ্পে) সেদ্ধ করে হাত দিয়ে চেপে পানি ঝরিয়ে ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করা ভালো। স্বাদে ভিন্নতা আনবে বাঁধাকপির পায়েস।
অন্যান্য সবজির মতো টমেটো এখন সারা বছরই পাওয়া যায়। তবে প্রকৃতভাবে টমেটোর স্বাদ বছরের এ সময়টাতেই পাওয়া যায়। টমেটো সস থেকে শুরু করে বিভিন্ন খাবার তৈরিতে টমেটোর স্বাদের কোনো তুলনা নেই। ভিটামিন সি–সমৃদ্ধ সবজি সরাসরি ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন। এ ছাড়া টমেটো পেস্ট করে ছোট ছোট কিউব আকারে বরফ করে জমিয়ে সংরক্ষণ করা যায়। এ ছাড়া পাতলা করে কেটে রোদে শুকিয়ে গুঁড়া করে বায়ুরোধী বাক্সে দীর্ঘ সময় রেখে দিতে পারেন।
মুলা সালাদ ভাজি ও তরকারি হিসেবে খাওয়া যায়। মুলার পাতা, শাক হিসেবেও জনপ্রিয়। ফুটন্ত পানিতে মুলা দুই–তিন মিনিট ফুটিয়ে পানি ঝরিয়ে নিন আগে। এতে করে মুলার গন্ধ বা গ্যাস দূর হয়ে যাবে। এরপর নিজেদের পছন্দমতো মুলা রান্না করে নিতে পারেন। পেঁয়াজের বিকল্প হিসেবে মুলার পেস্ট ব্যবহার করতে পারেন। তবে তেলে আগে পেস্ট ভালোভাবে ভেজে নিয়ে তারপর রান্না করতে হবে। মুলা গোল গোল করে কেটে রোদে ভালোভাবে শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে পারেন।
শিম তরকারি ও ভাজি হিসেবে খাওয়া হয়। শিমের বিচি জিপার ব্যাগ বা বায়ুরোধক ব্যাগে ভরে ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করা যায়।
ধনেপাতা সংরক্ষণে এটি কুচি করে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। এরপর বাক্সে ভরে রাখুন।
লেখক: রান্নাবিদ