কর্মব্যস্ত জীবনে নিজের দিকে তাকানোর সময় কোথায়? এই ভাবতে ভাবতে হয়তো পেরিয়ে যাচ্ছে অনেকটা বেলা। একসময় দেখলেন একরাশ হতাশা আর কাজের ক্লান্তির ছাপ ঘিরে ধরেছে আপনাকে। তখন হয়তো আর পেছন ফিরে দেখার সময় নেই। তাই সময় থাকতে নিজের প্রতি যত্নবান হওয়া, ফিরে তাকানোটা দোষের কিছু নয়। কারণ, আপনি যখন ভালো থাকবেন, তখনই আপনার চারপাশটাকে সুন্দর করে সাজিয়ে তুলতে পারবেন।
নিজের ভালো লাগার কাজগুলো করুন
প্রত্যেক মানুষ যেমন আলাদা, তেমনি তার শখের কাজগুলোও আলাদা। এই যেমন কারও ভালো লাগে বাগান করতে, কারও আবার ভালো লাগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা দিতে, কারও আবার পছন্দ সাঁতার কাটা। কিন্তু ঘরে-বাইরের কাজ করতে গিয়ে একটা সময় পছন্দের কাজগুলোকে বিসর্জন দিই আমরা। খুব বেশি নয়, প্রতিদিন আধা ঘণ্টা সময় বের করে যদি শখের কাজগুলোর একটু চর্চা করে যাওয়া যায়, তবে নিজেকে মানসিকভাবে অনেকটাই প্রফুল্ল রাখা যায়, এমনটাই বলছিলেন জাতীয় মানসিক ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মেখলা সরকার।
ইচ্ছাগুলোকে প্রাধান্য দিন
নিজেকে ভালো রাখতে চাইলে নিজের ইচ্ছাগুলোকে প্রাধান্য দেওয়াটা খুব জরুরি। নিজের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দেওয়া মানে স্বার্থপরতা নয়। অনেক সময় দেখা যায়, অন্যের পছন্দকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে নিজের ইচ্ছাগুলোকে ভুলে যাই আমরা। এ ক্ষেত্রে নিজের কাছে কোনটার প্রাধান্য বেশি, তা বুঝে নেওয়াটা খুব জরুরি।
প্রকৃতির কাছে যাওয়া
নিজের দুশ্চিন্তাগুলোকে ঝেড়ে ফেলে নতুনভাবে উজ্জীবিত হওয়ার সবচেয়ে সুন্দর সমাধান হচ্ছে প্রকৃতির কাছে নিজেকে ছেড়ে দেওয়া। একা বা দল বেঁধে কয়েক দিন প্রকৃতির কাছে ঘুরে এসেই দেখুন না কেমন চনমনে হয়ে উঠেছে মন।
প্রিয় মানুষদের সংযোগে
পছন্দের মানুষদের সঙ্গে যোগাযোগ সব সময় বজায় রাখার চেষ্টা করুন। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চ্যাট করে নয়, তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখুন। ব্যস্ততার কারণে তা যদি সম্ভব না হয়, তবে কিছুটা সময় বের করে ফোনে কথা বলুন।
খাবারে একঘেয়েমি কাটান
খাবারের টেবিলের নতুন কোনো পদ রেঁধে শুধু অন্যকেই নয়, মাঝেমধ্যে নিজেও নিজেকে একদিন চমকে দিলেন। নিয়মিত খাবারের মধ্যে একটু অন্য রকম খাওয়ার রুচি বাড়াতে তো সাহায্য করবেই পাশাপাশি মনে আনবে আনন্দ, পরামর্শ পুষ্টিবিদের।
স্নানেই প্রশান্তি
খুব ক্লান্ত লাগছে? সকাল-বিকেল যে সময়ই হোক না কেন, বাইরে থেকে এসে গোসল করে নিন। গোসল দ্রুত ক্লান্তি কমাতে সাহায্য করে।
সময়ের কাজ সময়ে করা
অন্য সময় করব, এই ভাবনায় না থেকে সময়ের কাজ সময়মতো করে ফেলা উচিত। এতে একসঙ্গে বেশি কাজের চাপ সামলাতে হবে না।
নিয়মিত যোগাসন
নিয়মিত যোগাসনচর্চায় শুধু মানসিক অবসাদই নয়, দূর হয় শারীরিক ক্লান্তিও। ইয়োগা প্রশিক্ষক শ্যামলী মণ্ডল বলছিলেন, খুব বেশি সময় নয়। দিনে আধা ঘণ্টা সময় ব্যয় করুন যোগব্যায়ামের জন্য। এই অনুশীলন খুব দ্রুতই ক্লান্তি দূর করে সতেজ করে তুলবে আপনাকে। এ ছাড়া প্রাণায়াম শরীরের ভেতরকার টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন খাওয়ার আধঘণ্টা আগে বা তিন ঘণ্টা পরে প্রাণায়ামের চর্চা করতে পারেন।