শিশু দেখভাল

শুরু হোক সঠিক নিয়মে দাঁত মাজা

িশশুর সঙ্গে দাঁত মাজলে সঠিক নিয়মে েস দ্রুত শিখবে। মডেল: সাইফান ও কাকলি, ছবি: অধুনা
িশশুর সঙ্গে দাঁত মাজলে সঠিক নিয়মে েস দ্রুত শিখবে। মডেল: সাইফান ও কাকলি, ছবি: অধুনা

কুমিরের দাঁত যতবার পড়ে ততবারই ওঠে। এ জন্য কুমির দাঁত নিয়ে খুব একটা চিন্তিত থাকে না। আর মানুষের মাত্র দুই সেট দাঁত ওঠে। ছয় মাস থেকে শুরু করে তিন বছর পর্যন্ত যে ২০টি দাঁত ওঠে, তাকে বলা হয় দুধের দাঁত। এই দুধের দাঁত ছয় বছর থেকে শুরু করে ১২ বছরের মধ্যে পড়ে গিয়ে নতুন আরেক সেট দাঁত ওঠে। এই দাঁতগুলো স্থায়ী। এই স্থায়ী দাঁতগুলো একবার পড়ে গেলে দাঁত কিন্তু আর ওঠে না। সে ক্ষেত্রে সারা জীবন কৃত্রিম দাঁত ব্যবহার করতে হয়। এ জন্য শিশুর যখন ছয় বছর হবে, তখন থেকে দাঁতের সুরক্ষায় খুব যত্নবান হতে হবে। দাঁত ভালো রাখার প্রথম ধাপই হলো সঠিক নিয়মে দাঁত ব্রাশ বা মাজা।

ছোটবেলা থেকেই শিশুকে দাঁত ব্রাশে অভ্যস্ত করতে হয়। শিশুরা অনেক কিছুই দেখে শেখে। মা–বাবা শিশুর সামনে ব্রাশ করলে শিশুও দ্রুত শিখে নেবে। দাঁত ব্রাশে নরম ব্রিসেলের ব্রাশ বাছাই করুন। শিশুদের উপযোগী ব্রাশ ও টুথপেস্ট এখন বাজারে পাওয়া যায়। দাঁতের ক্ষয় প্রতিরোধে ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করা উচিত। শিশুর বয়স ছয় বছর পেরিয়ে গেলে তাকে হাতে ধরিয়ে সঠিক পদ্ধতিতে ব্রাশ করা শেখাতে হবে।

● আনুমানিক ৪৫ ডিগ্রি কোণ করে দাঁত মাড়ির সংযোগ স্থলে ব্রাশ রেখে দাঁত মাজতে হবে।

● সামনে–পেছনে ব্রাশ না করে ওপর থেকে নিচে এবং নিচ থেকে ওপরে ব্রাশ করতে হয়।

● সকালে খাবারের পরে এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ব্রাশ করার অভ্যাস করতে হবে।

● তাড়াহুড়া না করে সময় নিয়ে দুই থেকে তিন মিনিট ধরে ব্রাশ করা উচিত।

● দীর্ঘদিন একই ব্রাশ ব্যবহার না করে, কয়েক মাস অন্তর ব্রাশ বদল করে দিন।

● চকলেট কিংবা মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়ার পরে দাঁত ব্রাশ করা ভালো।

যা করা উচিত নয়

● হালকা করে ব্রাশ করতে হবে, অতিরিক্ত জোরে ব্রাশ করলে দাঁতের এনামেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

● সঠিক নিয়মে দাঁত ব্রাশের সঙ্গে বাড়তি কিছু নিয়ম মেনে চললে স্থায়ী দাঁতগুলো দীর্ঘস্থায়ী হয়। দাঁতের বাড়তি যত্ন–আত্তির ফর্দটা এবার জেনে নেওয়া যাক।

● দাঁত ভালো রাখতে নিয়মিত ফল খেতে হবে। আপেলকে বলা হয় প্রাকৃতিক টুথব্রাশ। আপেল খেলে দাঁত পরিষ্কার থাকে।

● দাঁতের গঠন মজবুত করতে দুধ খুব সাহায্য করে। পনির, মাখন ও দই দাঁতের জন্য ভালো।

● কোমল পানীয় দাঁতের জন্য খুব ক্ষতিকর। কোমল পানীয় দাঁত হলদেটে করে এবং দীর্ঘ মেয়াদে এনামেলের ক্ষতি করে।

● দাঁতে জমে থাকা খাবার খুব ভালো করে পরিষ্কার করতে ফ্লস ব্যবহার করা যেতে পারে।

● বয়স সাত হলেই একজন অর্থোডনটিক্সের কাছ থেকে আঁকা-বাঁকা দাঁত হলে সে বিষয়ে পরামর্শ নিয়ে নিন।

● দাঁতের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে চিকিৎসকের পরামর্শে মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করা যেতে পারে।

লেখক: দন্ত্য চিকিৎসক