নিরাপদ এলিভেটর বা লিফট জনপ্রিয়করণের সঙ্গে মিশে আছে এলিশা গ্রেভস ওটিসের (১৮১১-১৮৬১) নাম। বহুতল ভবনের আজ যে লিফটের জয়জয়কার, তার প্রথম বাণিজ্যিক রূপ দিয়েছিলেন এই আমেরিকান প্রকৌশলী।
এলিভেটরের ধারণাটা তখন বেশ পুরোনো। কিন্তু বাণিজ্যিক ব্যবহার শুরু হয়নি। এলিশা গ্রেভস ওটিস ১৮৫৩ সালে প্রতিষ্ঠা করলেন ‘ওটিস এলিভেটর কোম্পানি’। ওটিস নিজেই ভবনমালিকদের দ্বারে দ্বারে গেলেন, লিফটের সুযোগ-সুবিধা ও নিরাপত্তার বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করলেন। বুঝলেন অনেকেই, তবে প্রথম বছর তিনি শুধু তিনটি লিফট বিক্রি করতে পারলেন। ওটিস নিজের নামে নিরাপদ লিফটের প্যাটেন্ট পান ১৮৬১ সালে। তবে তার আগেই ১৮৫৭ সালের ২৩ মার্চ, গ্রাভিস ওটিস নিউইয়র্কের একটি পাঁচতলা দোকানে মানুষ বহনে সক্ষম প্রথম বাণিজ্যিক লিফট স্থাপন করেন।
তবে লিফটকে আধুনিক বিজ্ঞানের অবদান হিসেবে গণ্য করা হলেও এর পেছনের গল্পটা বেশ পুরোনো। রোমান লেখক ভিত্রুভিয়াসের মতে প্রায় ২ হাজার ২০০ বছর আগে প্রাচীন গ্রিসে বিজ্ঞানী আর্কিমিডিসের তৈরি একধরনের এলিভেটরের প্রচলন ছিল। খ্রিষ্টের জন্মের ২৩৬ বছর আগে গ্রিসে পাকানো দড়ি দিয়ে একটি ড্রামের চারপাশে পেঁচিয়ে সেটিকে টেনে টেনে ওপরে তোলার কৌশল রপ্ত করেছিল সেখানকার অধিবাসীরা।
প্রাচীন রোমে গ্লাডিয়েটর ও বন্য পশুদের কলোসিয়ামের নিচের কক্ষগুলো থেকে ওপরে তুলে আনতে আধুনিক এলিভেটরের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ প্রযুক্তির ব্যবহার করা হতো।
১৭৪৩ সালে ফরাসি সম্রাট পঞ্চদশ লুই ভার্সাইয়ের প্রাসাদে এখনকার এলিভেটরের মতোই একধরনের ‘উড়ন্ত চেয়ার’ ব্যবহার করা হতো বলে জানা যায়, যা প্রাসাদের তৃতীয় তলা পর্যন্ত মানুষ বহনে সক্ষম ছিল। উনিশ শতক থেকে পশ্চিমা দেশগুলোতে বাষ্পচালিত এলিভেটরের ব্যবহার লক্ষ করা যায়।
তবে এলিভেটর বা লিফটের সফল ও নিরাপদ ব্যবহারের সঙ্গে বেশি উচ্চারিত হয় গ্রেভস ওটিসের নামই।
হিস্ট্রি ডট কম অবলম্বনে আকিব মো. সাতিল