ঘুমন্ত শিশুর মায়াময় মুখটা দেখে হয়তো মা হঠাৎ ভাবেন, চোখের নিমিষে বড় হয়ে যাচ্ছে বাচ্চাটা। শিশুর চোখে ঘুম, তাও কি চাইলেই পাওয়া যায়? তার জন্য চাই ঠিকঠাক পরিবেশ।
ঠিক সময়ে ঘুমের অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত ছোটবেলা থেকেই। শিশুর ঘুম যাতে পর্যাপ্ত হয়, নিবিড় হয়, সেদিকেও নজর দিতে হবে অভিভাবকের। শিশুর ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে এমন কাজ করা যাবে না। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ইফফাত আরা শামসাদ জানালেন শিশুর ঘুম নিয়ে এমন নানান তথ্য
রাত দশটার মধ্যেই শিশুর ঘুমের অভ্যাস গড়ে তুলুন। বড়রাও সেই একই সময়ে ঘুমিয়ে পড়তে চেষ্টা করুন, তা নাহলে শিশুর মধ্যে এই অভ্যাস গড়ে তোলা মুশকিল। শিশুরা রাত জাগতে শেখে বড়দের দেখেই। ছোট্ট শিশুর ঘুম অবশ্য বড়দের চাইতে বেশি। তবে দুপুরে ঘুমানো বাধ্যতামূলক নয়। বরং দুপুরের ঘুমের কারণে রাতে ঘুম আসতে দেরি হতে পারে। দুপুরে তাই শিশুদের জোর করে ঘুম পাড়ানোর প্রয়োজন নেই। আবার জোর করে জাগিয়ে রাখারও প্রয়োজন নেই। তারা খেলাধূলা, দৌড়ঝাঁপ করে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়লে ক্ষতি নেই।
ঘুমের ঘরটা
শিশুর ঘুমের ঘর যেন খুব ঠাণ্ডা না হয়, আবার খুব গরমও না হয়। হালকা আলোর ব্যবস্থা করতে পারেন। শিশু ঘুমালে আশপাশে শব্দ করা থেকে বিরত রাখুন সবাইকে।
ঘুমানোর আগে ঢিলেঢালা, আরামদায়ক পোশাক পরাতে হবে শিশুকে। খুব বেশি আটোসাটো পোশাক পরা অবস্থায় শিশু ঘুমিয়ে পড়লে, হঠাৎ জেগে যেতে পারে। গরমের সময় অবশ্যই সুতি কাপড় পরাতে হবে। ভরপেট খাওয়ার পরেই শুইয়ে দেবেন না, আবার খালি পেটে ঘুমালেও মাঝরাতে ক্ষুধার কারণে শিশুর ঘুম ভেঙে যেতে পারে। যে শিশুরা পরিবারের সবার মতো স্বাভাবিক খাবার খেতে পারে, তাদের ঘুমের আগে শেষ খাবারটা যেন সেই স্বাভাবিক খাবারই হয় (তরল বা নরম কিছুর চাইতে এটিই ভালো)।
রাতের খাবারের পর আর ডিজিটাল মাধ্যমে শিশুকে কোনো কিছু দেখাবেন না, নিজেরাও দেখবেন না, নিজে দেখার প্রয়োজন হলে আলাদা স্থানে গিয়ে দেখুন। শিশুর সামনে অবশ্যই নয়। ঘুমের আগে শিশুর শরীর মালিশ কিংবা গরম পানিতে গোসল করানো কিংবা এমন বাড়তি কোনো অভ্যাস করানোর প্রয়োজন নেই। আর অবশ্যই মনে রাখবেন, শিশুর ঘুমের অভ্যাস করানোর ক্ষেত্রে বেশ কিছুদিন সময় লাগতে পারে। তাই অধৈর্য হওয়া যাবে না। ঘুমানোর জন্য শিশুকে বকাঝকাও করা যাবে না।