শিশুদের কাঁধে স্কুলের ভারী ব্যাগ নানা রকমের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। কীভাবে এ ঝুঁকি কমানো যায়, সে বিষয়ে এখনই ভাবতে হবে।
অতিরিক্ত ভারী ব্যাগ বহনের ফলে শিশুর যেসব ক্ষতি হচ্ছে
১. দীর্ঘদিন কাঁধে ব্যাগ বহনের কারণে শিশুর মাংসপেশি শক্ত হয়ে যায়। ফলে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়ে ঘাড়ে, কাঁধে, কোমরে, হাঁটুতে ব্যথা, এমনকি মাথাব্যথাও হতে পারে।
২. এক কাঁধে ভারী ব্যাগ বহনের ফলে দুই কাঁধের ভারসাম্য নষ্ট হয়, মেরুদণ্ডের বিন্যাসের ক্ষতি হয় এবং শিশু কিছুটা বাঁকা হয়ে সামনের দিকে ঝুঁকে হাঁটতে শুরু করে।
৩. ঘাড় ও কাঁধের মাংসপেশিতে আঘাত লাগতে পারে
৪. মানসিক অবসাদ, বিষণ্নতা, এমনকি অনেক সময় শরীরের ভেতর কোনো অঙ্গের ক্ষতিও হতে পারে।
কতটুকু ওজন, কীভাবে বহন করা উচিত
১. যুক্তরাষ্ট্রের শিশু একাডেমির মতে, ব্যাগপ্যাকের ওজন শিশুদের শরীরের ওজনের ১০ থেকে ১৫ শতাংশ হওয়ার কথা।
২. প্রাথমিক স্কুলের শিশুদের শরীরের ওজনের ১০ শতাংশের বেশি ভারী স্কুলব্যাগ বহন নিষেধ করে ২০১৬ সালে একটি রায় দিয়েছেন বাংলাদেশের উচ্চ আদালত।
৩. শিশুর ব্যাগের ওজন দুই কাঁধে সমানভাবে ভাগ করে নিতে হবে।
ব্যথা হলে কী করবেন
১. কাঁধে ও ঘাড়ের মাংসপেশিতে বরফের সেঁক দিতে পারেন। থেরাপিউটিক ব্যায়ামের মাধ্যমে ব্যথা কমানো যায়। এ ক্ষেত্রে একজন বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।
২. শিশুদের ফিটনেসের জন্য ফুটবল, ভলিবল, টেনিস ইত্যাদি খেলার সুযোগ করে দিতে হবে।
আপনার দায়িত্ব
অনেক সময় অভিভাবকেরা একই সঙ্গে স্কুলের বই, কোচিংয়ের বই-খাতা ইত্যাদি ভরে ব্যাগের ওজন বাড়িয়ে দেন। এ ক্ষেত্রে আলাদা ব্যবস্থা রাখা ভালো। প্রয়োজনে টিফিন ও পানি আলাদা ব্যাগে দিন। শিশুর ব্যাগটি যেন হালকা কাপড়ে তৈরি হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
ফিজিওথেরাপি ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, আদ্-দ্বীন ব্যারিস্টার রফিকুল হক হাসপাতাল, ঢাকা
আগামীকাল পড়ুন: ডায়াবেটিস নিয়েও ভালো থাকুন
প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন: আমার বয়স ১৫ বছর। আমার ঘাড় খুব কালো, মুখের চারপাশও কালো হয়ে যাচ্ছে। দুই-তিন মাস পরপর মাসিক হয়। এ ক্ষেত্রে কী করা উচিত?
উত্তর: ঘাড় কালো হয়ে যাওয়ার সমস্যার নাম অ্যাকানথোসিস নাইগ্রিকেনস। সাধারণত এই বয়সে পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম নামের একটি হরমোনজনিত জটিলতায় এটি হয়। সমস্যাটি ওজন বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত। এতে মাসিক অনিয়মিত হয়ে পড়ে। আপনি একজন হরমোন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন এবং ওজন কমানোর চেষ্টা করুন।
ডা. শাহজাদা সেলিম, হরমোন বিশেষজ্ঞ